রূপগঞ্জের ফুটপাতের ভ্রাম্যমান দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়

জানুয়ারি ১৬ ২০২১, ১৩:১৪

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিট। নগরপাড়া বাজার। রাস্তার পাশে বেশ কিছু সংখ্যক মানুষের জটলা দেখে যে কেউ মনে করতে পারেন কোনো গন্ডগোল হচ্ছে অথবা ক্যানভাসার ওষুধ বিক্রি করছেন। কিন্তু আসল ঘটনা অন্য। ভ্যানগাড়ীতে করে শীতে জামা কাপড় বিক্রি করছেন আতাউর। আর তাকেই চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছেন ক্রেতারা। কথা হয় আতাউরের সাথে। তিনি বলেন, শীত পড়াতে ব্যবসা ভালই হচ্ছে। তবে দিনের চেয়ে রাতেই ব্যবসা ভাল হয়।

ক্রেতা মান্না মিয়া জানান, কম দামে মোটামুটি ভাল কাপড়ই পাওয়া যায়। শীত বেড়ে যাওয়ায় কনকনে ঠান্ডায় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। আর এই শীত থেকে রক্ষা পেতে ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত মার্কেটগুলোতে পছন্দের পোশাক কিনতে ভিড় জমাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মৌসুমি ভিত্তিক দোকানগুলোতে শীতের কাপড় বেচাকেনা চলছে পুরোদমে। নগর পাড়া বাজারে, বড়ালু বাজার, চনপাড়া মোড়, ইছাখালী মোড়, জাঙ্গীর, কুদুর মার্কেট, ইছাপুরা, পর্শি বাজার, মুড়াপাড়া, গঙ্গানগরসহ গ্রামের বিভিন্ন হাটবাজারের ফুটপাতের ওপর ও ভ্যান গাড়িতে করে বাহারি রঙের শীতবস্ত্র বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। আর এসব কাপড় কিনতে ভিড় করছেন নি¤œবিত্তের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব ভ্রাম্যমাণ কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
নগরপাড়া বাজার এলাকায় মৌসুমি ভিত্তিক কাপড় ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া জানান, এবারে শীতের ব্যবসা অনেকটাই ভালো হচ্ছে। করোনার কারণে বাহিরে বের হতে পারছেন না। অনেকেই যারা শহরের বড় বড় মার্কেটে কিনতে পাড়ে না তারাই আসেন আমাদের এই ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে। কারণ তারা এখানে অনেক কম দামেই কাপড় কিনতে পারে। গত কয়েক দিন আগে শীত একটু কম থাকায় তখন তেমন একটা ব্যবসা হয়নি। তবে হঠাৎ করেই ঠান্ডা বাড়ার কারণে বর্তমানে আমাদের ব্যবসা ভালো হচ্ছে। আরেক ব্যবসায়ী জাবেদ জানান, এখানে ছোট-বড়দের জ্যাকেট, মাফলার, সোয়েটার, হাত মোজা, কোট, টুপি সবই মিলছে। দাম সস্তা হওয়ায় নি¤œবিত্ত ক্রেতাদের কাছে এই কাপড়ের চাহিদা বেশি।
দু’দিন আগেও মনে হচ্ছিল শীত বুঝি চলেই গেল। আসি আসি করেও শীত আর আসল না। মাঘের শুরুতেই বাঘে পেয়েছে। গাঁয়ে শীতের কাঁপন ধরেছে। কথায় বলে মাঘের শীতে জমি বেচে কাঁথা কিনেন কৃষক। মাঘে আবার শীত জেঁকে বসেছে। শীত নিবারনের জন্য মানুষ স্ধ্যমতো ছুটছেন মার্কেটে। সামর্থশালী ধনীরা ছুটছেন বড় বড় মার্কেটগুলোতে। নিন্ম আয়ের মানুষরা যাচ্ছেন গরীবের মার্কেটখ্যাত ফুটপাতের অস্থায়ী বাজারগুলোতে। শীতের আগমনে রূপগঞ্জের বিভিন্ন হাট বাজারসহ সড়ক মহাসড়কের পাশে জমে উঠেছে পুরনো শীতের কাপড়ের অস্থায়ী বাজার। প্রতিবছর শীতের শুরুতেই খেটে খাওয়া মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যায় পুরাতন শীতবস্ত্রের এই বাজার। মূলত কম দামে শীতবস্ত্র পাওয়ার আশায় ক্রেতারা ভিড় করেন এখানে। পুরনো শীতবস্ত্রের বাজার জমে উঠলেও গত বছরের তুলনায় এবার দাম কিছুটা বেশি।
সরেজমিনে গাউছিয়া মার্কেট ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় দেখা যায়, শীতের কাপড় কিনতে আসা বাঘবেড় এলাকার আলম হোসেন জানান, কম দামে পাওয়ার আশায় এখানে আসা। তবে এ বছর দাম একটু বেশি হলেও বাজারের তুলনায় কমই আছে বলে বাচ্চাদের জন্য ২২০ টাকায় চারটি শীতের কাপড় কিনেছি। অপর ক্রেতা দক্ষিণবাঘের ফারিদা খাতুন জানান, কম দামে ভালো মানের কাপড় পাওয়া যায় বলে এখান থেকে খরিদ করি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার শীতের কাপড় প্রতি ৩০-১শ টাকা বেশি বলে জানান তিনি। নগরপাড়া বাজারে মৌসুমী বিক্রেতা কামাল, নূরু, সজিব, মহি, ছালেক, আরমানসহ আরো কয়েকজন জানান, আমরা সাধারণত সোয়েটার, ট্র্যাকসুট, বিভিন্ন ধরনের গরম জামা, মোজা, টুপি, বাচ্চাদের কাপড়, সোয়েটার, জ্যাকেট, প্যান্ট-কোট, চাদর, কম্বল, ট্রাউজারসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের কাপড় বিক্রি করি। শীত আসলেই বাড়তি আয়ের আশায় এই ফুটপাতে বসা। এবার পুরাতন কাপড়ের দাম একটু বেশি বলে খুচরা ক্রেতাদেরও কিছুটা হলেও দাম বেশি গুণতে হচ্ছে। তবে সেটি অতি নগণ্য। বটতলা এলাকায় কাপড় কিনতে আসা মরিয়ম বেগম জানান, গত কয়েকদিন শীত কম থাকলেও হঠাৎ করেই শীত বাড়ছে। আমরা তো গরিব মানুষ তাই বড় বড় মার্কেট থেকে কাপড় কিনতে পারি না। এজন্য এখানে এসেছি বাচ্চাসহ পরিবারের লোকদের জন্য কাপড় কিনতে। দাম খুব একটা বেশি নয়। আরেক ক্রেতা জয়নাল জানান, এখানে অল্প দামে ভালো ভালো কাপড় কিনতে পাওয়া যায়। অসহায় গরিব মানুষ আমরা। বাচ্চার জন্য কাপড় নিতে আসছি। ###

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও