শকুন রক্ষায় কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রীসভা

ফেব্রুয়ারি ০৮ ২০২১, ২৩:৫৯

Spread the love

আগমনী ডেস্ক: বাংলাদেশে মহাবিপন্ন হতে যাওয়া শকুন রক্ষায় এবার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে এই পাখিটি রক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গবাদি পশুর ব্যথানাশক কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে সরকার।

যথেচ্ছ ওষুধ প্রয়োগের কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দিন দিন বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে শকুনের সংখ্যা। এরা যেহেতু মৃত প্রাণীর রক্ত চোষে। তাই কিটোপ্রোফেন প্রয়োগ করা হয়েছে এমন কোনো প্রাণীর মৃত মাংস খেলে ভয়াবহ কিডনি জটিলতার সৃষ্টি হয়ে মারা যায় শকুন।

এই পাখিটিকে রক্ষায় সরকারের অবস্থান সাংবাদিকদের তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিয়মিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘মহাবিপন্ন শকুন রক্ষার্থে ক্ষতিকর ভেটেরিনারি ওষুধ কিটোপ্রোফেন উৎপাদন বন্ধ করার প্রস্তাবে’ সায় দিয়েছে সরকার।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে খুবই উদ্বেগজনক হারে শকুনের সংখ্যা কমছে। সত্তরের দিকে দেশে ৫০ হাজারের মতো শকুন ছিল, এখন আছে মাত্র ২৬০টি আছে। তাও অনেকগুলো গুরুতর অসুস্থ।’

তিনি বলেন, ‘শকুন যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে পুরো দেশের মধ্যে যে পরিমাণ মৃত পশু-পাখি থাকে, সেগুলোতো পরিবেশ নষ্ট করে…, শকুন না থাকলে রোগজীবাণু ছড়ানোর ঝুঁকিও বেড়ে যাবে।’

দেশে এই শকুন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে ভেটেরিনারি ওষুধ কিটোপ্রোফেনকে দায়ী করছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ‘কিটোপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ব্যবহারের কারণে, এই ওষুধটা শকুনের মধ্যে গেলে মারা যায়।’

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের ফার্মাসিটিক্যালস, ড্রাগ কোম্পানি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় কিটোপ্রোফেন উৎপাদন বন্ধ করতে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব উত্থাপন করে। এতে কিটোপ্রোফেনের ব্যবহার বন্ধ করার প্রস্তাব দেয়া হয়। বলা হয়, তা না হলে শকুন এদেশে বাঁচতে পারবে না।’

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম উপজীব্য এই শকুন বাঁচাতে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা, সভা-সিম্পোজিয়াম করার পর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দেশে কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ বন্ধ করে বিকল্প হিসেবে মেলোক্সিক্যাম (Meloxicam) নামে একটি ওষুধ ব্যবহারে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তিনি বলেন, ‘বিকল্প ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব কম। এটি ব্যবহার করলে শকুন বা অন্যান্য পাখির ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হবে না, লাইফ রিস্ক হবে না, মন্ত্রিসভা এটিতেও অনুমোদন দিয়েছে।’ দেশের ল্যাবরেটরিগুলোতে মেলোক্সিক্যাম পরীক্ষার পর দেখা গেছে, ‘এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, ওষুধটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও