কুলিয়ারচরে ভূয়া পুলিশ আটকের পর এ এস আই গফফারের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

ফেব্রুয়ারি ১৬ ২০২১, ২২:৫০

Spread the love

এম জয় ই জসীম, কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে জনতার হাতে রবিন (২২) নামে এক ভূয়া পুলিশ সদস্য আটক হওয়ার পর কুলিয়ারচর থানার এ এস আই আব্দুল গফফারের বিরুদ্ধে নানান তথ্য ফাঁস হতে শুরু হয়েছে।

রবিবার (১৪ফেব্রæয়ারি) বিকালে উপজেলার উত্তর সালোয়া মুরগী বাড়ি এলাকায় পুলিশ পরিচয়ে সুমন (২০) নামে এক যুবককে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টাকালে রবিনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, রবিবার বিকালে মুরগী বাড়ির পিছনে রাস্তায় সিএন জি ও মোটর সাইকেল যোগে ৫ জন লোক সিভিলে এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে কিছু না বুঝার আগেই বিনা অভিযোগে সুমন (২০) নামে এক যুবকের হাতে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করলে সুমনের মা ফজিলত ডাক চিৎকার করতে থাকেন। এ সময় এলাকাবাসী এগিয়ে আসতে দেখে চারজন লোক পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ভূয়া পুলিশ পরিচয়ধারী রবিন জনতার হাতে আটক হয়। পরে এলাকাবাসী স্থানীয় সালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ মো. মাহবুবুর রহমানের মাধ্যমে পুলিশে খবর দেয়। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কুলিয়ারচর থানার এস আই মুহাম্মদ আজিজুল হক অফিসার ও ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে আসলে এলাকাবাসী রবিনকে তাদের হাতে সোপর্দ করে।

ঘটনাস্থলে রবিন কুলিয়ারচর পৌরসভার আশ্রবপুর গ্রামের মারাজ মিয়ার ছেলে দাবী করে বলেন, রোববার বিকালে উপজেলার ছয়সূতী এলাকার রফিক নামে তার এক বন্ধু তাকে কিছু না জানিয়ে মোটর সাইকেল যোগে কুলিয়ারচর পুলিশের সাথে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে। এ সময় পিস্তলধারী গফফার দারোগা সুমনের হাতে হাতকড়া লাগানোর চেষ্টা করলে সুমনের মায়ের ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসতে দেখে গফফার দারোগা অন্যান্যদের নিয়ে পালিয়ে যান। পরে এলাকাবাসী রবিনকে আটক করে।
সুমনকে গ্রেফতার করবে এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেননা বলে জানান। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাকে আটক করে কেউ কোন মারধোর করেনি। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবী করে তার বন্ধু রফিকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করেন।
থানার কর্তব্যরত এস আই মুহাম্মদ আজিজুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রবিন নামে এক যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। পুলিশ জানায়, আটককৃত রবিন ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী।
তবে ভূক্তভোগী ফজিলত ও এলাকাবাসী জানান, কুলিয়ারচর থানার এএস আই (নিঃ) মো. আব্দুল গফফার তালুকদার (বিপি ৮০০০০৮১৪২৭) প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ফজিলত বেগম ও তার ছেলে সুমনকে আটক করে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করতে চেয়ে ছিলো। কারণ এর আগে গত ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর গভীর রাতে এএসআই মো. আব্দুল গফফার তালুকদার ফজিলতের বড় ভাই মো. মজলু মিয়া (৫৫) ও ভাই বৌ রাহেলা বেগম (৫০) ওরুফে লাইলী বেগমের সহযোগিতায় পুলিশ নিয়ে ফজিলত বেগমের ঘরে ডুকে ডাকাতি করে প্রায় ৯৮ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। এসময় প্রত্যক্ষদর্শীরা ফজিলতের টাকা নিয়ে যেতে বাধা নিষেধ দিলে ওই এ এস আই কোন কর্ণপাতই করেননি। পরদিন ২২ডিসেম্বর লোক মারফত টাকা ফেরত চাইলে ঘটনার ৩দিন পর গত ২৪ডিসেম্বর এ এস আই গফফার পুলিশ নিয়ে গভীর রাতে ফজিলত বেগমের ঘরে ঢুকে ফজিলত বেগমকে আটক করে আধা কিলোমিটার দূরে একটি রাস্তায় গাড়িতে রেখে আবার তল্লাশির নামে তার বাড়িতে এসে জনগণকে বলেন ঘরের বাহির থেকে ৪৪ পুঁড়িয়া গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। পরবর্তীতে থানায় নিয়ে আধা কেজি গাজা ও ৬ হাজার টাকা উদ্ধার দেখিয়ে এসআই (নিঃ) কাজী রকিবকে বাদী করে একটি মাদক মামলা (মামলা নং-২৪, তারিখ -২৪/১২/২০২০ইং) দিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয় ফজিলতকে । মামলা রুজু হওয়ার আগে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সাইফুল নামে এক পুলিশ সদস্য থানার ভিতরে ফজিলতের ছেলে সুমনকে ভয়ভীতি দেখায় ২০ হাজার টাকা না দিলে তার মাকে ৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার দেখিয়ে মামলা করে চালান দেওয়া হবে। ফজিলতের ছেলে ভয় পেয়ে পুলিশ সদস্য সাইফুলকে বহু কষ্টে ৩ হাজার টাকা দিয়ে দেয়। বিনা অপরাধে ১মাসেরও বেশী সময় হাজত বাসের পর বাড়ি এসে ফজিলত লোক মারফত তার ঘর থেকে ডাকাতি ও লুট করে নেওয়া ৯৮ হাজার টাকা ফেরত চাইলে এ এস আই মো. আব্দুল গফফার তালুকদার গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং তারিখ রোববার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা দিয়েছিলো। টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত তারিখে যাতে টাকা ফেরত দিতে না হয় তাই রোববার (১৪ ফেব্রæয়ারি) সুমন ও ফজিলত বেগমকে পূনরায় আটক করে মাদক দিয়ে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, এএস আই আব্দুল গফফার তালুকদার মাদক উদ্ধারের নামে উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘরে ডুকে লোকজনকে মারধোর করে প্রথমে ঘরে থাকা আলমিরা ও ট্রাংকের চাবি হাতিয়ে নেয়। পরে তালা খুলে টাকা লুট করে বাড়ির যে কোন একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে রাতের আধারে রাস্তায় মাদক ক্রয় বিক্রয়ের মিথ্যা অভিযোগ দেখিয়ে মাদক মামলা দিয়ে আদালতে চালান দিয়ে লুন্ঠনকৃত টাকা হালাল করার চেষ্টা করেন।
এরই ধারা বাহিকতার গত ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে ৫জন পুলিশ নিয়ে উপজেলার বাজরা তারাকান্দি বাসস্ট্যান্ডে শাহজাহান (৪০) নামে এক চা বিক্রেতার ঘরে ঢুকে ৩২ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ টাকা হালাল করার জন্য ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার দেখিয়ে থানার এসআই মো. আতাউর রহমানকে বাদী করে মিথ্যা মাদক উদ্ধার দেখিয়ে একটি মাদক মামলা দিয়ে শাহজাহানকে জেল হাজতে প্রেরণ করে সে। পরবর্তীতে শাহজাহানের স্ত্রী মোছা. মিনা বেগম বাদী হয়ে ভৈরব সার্কেল অফিসে অভিযোগ করলে এএসআই আব্দুল গফফার তালুকদার তিন ভাগে ৩২ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দেয়।
এছাড়া গত ২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে এএসআই আব্দুল গফফার তালুকদার পুলিশ নিয়ে মাদক উদ্ধার অভিযানের নামে উপজেলার কান্দ্রিগ্রামে মো.আব্বাস মিয়ার (৪৫) বাড়ি গিয়ে পুলিশ পরিচয়ে ঘরের ভিতর ঢুকে প্রথমেই নিরীহ কৃষক আব্বাস মিয়কে মারধোর করে আলমিরার চাবি হাতিয়ে নেয়। পরে আলমিরা খুলে নগদ ১৪ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে আব্বাসকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আব্বাসের

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও