২১আগস্ট সমাবেশে গ্রেনেড হামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইকবাল গ্রেফতার

ফেব্রুয়ারি ২৪ ২০২১, ১৯:৫৪

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃ২১ আগস্টে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশের মঞ্চ লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুড়ে মেরেছিলো ইকবাল হোসেন জাহাঙ্গীর ওরফে সেলিম। এর পরই দেশ-বিদেশে আত্মগোপন করে গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই আসামি।

সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ইকবালকে রাজধানীর দিয়াবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। পরে  মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানেই এই দাবি করেন র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।

তিনি আরও বলেন, ছদ্মবেশ ধারণ করে ইকবাল দেশে-বিদেশে আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় সে একাধিকবার পেশা পরিবর্তন করে। এমনকি বিদেশে থাকা অবস্থায়ও সে নাম পরিবর্তন করেছিল।

ইকবালকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‍্যাব ডিজি বলেন, জঙ্গি ইকবালের বাবার নাম আব্দুল মজিদ মোল্লা। তার বাড়ি ঝিনাইদহে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। স্কুল-কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিল।

‘সে ১৯৯৪ সালে ঝিনাইদহের কেসি কলেজের ছাত্র সংসদের নির্বাচিত শ্রেণি প্রতিনিধি ছিল বলে জানিয়েছে। ইকবাল ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় প্রবাসী কর্মজীবী হিসেবে অবস্থান করে। দেশে ফিরে এসে জঙ্গি ইকবাল আইএসডি ফোন এবং অন্যান্য ব্যবসা পরিচালনা করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইকবাল দেশে অবস্থানকালে সর্বহারা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিরোধ-কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে এবং ২০০১ সালে তার চিন্তা-চেতনায় একটা মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন আসে। সে ঝিনাইদহের এক স্থানীয় জঙ্গি সদস্যের মাধ্যমে হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশে যোগদান করে। ২০০৩ সালে সে মুফতি হান্নান ও অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্যে আসে এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিতে থাকে।’

র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘২০০৪ সালের আগস্টে মুফতি হান্নানের নির্দেশে ঢাকায় আসে এবং গোপন আস্তানায় অবস্থান করতে থাকে। সেখানে হুজিবি নেতা মুফতি হান্নানসহ অন্যান্যদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করে। সে মুফতি হান্নানের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে গোপন বৈঠকে অংশগ্রহণ করত।’

‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার বিষয়ে সে জানায়- মুফতি হান্নানের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সে সরাসরি অংশগ্রহণ করে। হামলা পরিচালনার জন্য মুফতি হান্নান তাকে গ্রেনেড সরবরাহ করে ছিল বলে সে উল্লেখ করেছে। হামলার সময় সে মঞ্চকে উদ্দেশ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে। ঘটনার পর সে ঝিনাইদহে গিয়ে আত্মগোপন করে।’

ইকবালকে গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় জানিয়ে র‌্যাব ডিজি বলেন, ২০০৮ সালে জঙ্গি ইকবালকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঝিনাইদহে তার নিজ বাড়িতে, পরবর্তীতে গাজীপুর, সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আত্মগোপনে থাকাকালে সে (ইকবাল) নিরাপত্তাকর্মী, শ্রমিক, রিকশার মেকানিক ইত্যাদি ছদ্মবেশ ধারণ করে ছিল বলে সে জানায়।

তিনি আরও বলেন, র‌্যাবের অভিযানের কারণে সে ২০০৮ সালে দেশ ত্যাগ করে। প্রবাসে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় প্রথমে সেলিম এবং পরবর্তীতে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করে। এক পর্যায়ে সে প্রবাসে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে ২০২০ সালের শেষের দিকে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফেরত এসে ইকবাল আত্মগোপনে থেকে সমমনাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ করে।

র‌্যাব ডিজি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এবং র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা জঙ্গি ইকবাল সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও