মোল্লা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুন বই বিতরণ উৎসব

জানুয়ারি ০১ ২০২২, ১৬:১৫

Spread the love

এনামুল মবিন(সবুজ),জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। একটি জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হয়। নতুন বই শিক্ষার্থীদের জন্য এক অভিনব উপহার। বই হলো, জ্ঞান অর্জনের ১ম মাধ্যম। বই উৎসবটিই হচ্ছে ‘আলোর উৎসব’। নতুন বছরের শুরুতে বাংলাদেশের মানুষ বিজয়ের নতুন সূর্য দেখেছে। কোমলমতী শিশু, কিশোররা অন্তহীন আনন্দের মধ্য দিয়ে জ্ঞান অর্জনের এমন এ উৎসব আগামী দিনের স্বপ্ন দেখতে প্রস্তুত হচ্ছে।বছরের প্রথম দিনে শিশুদের মাঝে বই বিতরণের ফলে সবার মাঝে একটি উৎসব বিরাজ করছে। শিশুরা সারাবছর এই দিনটির অপেক্ষায় থাকে। বই উৎসবের প্রধানতম সফল একটি দিক হলো শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করা। নতুন শ্রেণি, নতুন বই। এটি শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রেরণা জোগায় এবং উৎসাহ সৃষ্টি করে।

আজ শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে হাশিমপুর মোল্লা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে হাশিমপুর মোল্লা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। মোঃ মামুনুর রশিদ(বাদল)এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ লায়লা বানু ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মেনহাজুল ইসলাম।

চিরিরবন্দর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ লায়লা বানু বলেন, সারা দেশের “কোমলমতি শিক্ষার্থীরা”- ২০২২ সালের বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই হাতে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। নতুন বইয়ের মৌ মৌ গন্ধে শিশুরা আনন্দিত। জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সরকার গ্রন্থ প্রকাশনা সহক করবার জন্য একটি জাতীয় গ্রন্থনীতি প্রণয়ন করেছে। জ্ঞান অন্বেষনে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। সারা বিশ্বের বরেণ্য মনীষীর জীবন ইতিহাস ঘাঁটলে অনেক কথার সত্যতা চোখে পড়বে। বইয়ের পাতায় পাতায় ডুবে আছে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ইবনে সিনা, আল রাযী, ইবনে রুশদ, যুবরাজ ফাতিক, মাদাম মেরি কুরিসহ বাংলাদেশের কবি আল মাহমুদ এবং ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মতো বহুসংখ্যক জ্ঞান পিপাসুরাই ‘বই পাঠে’ ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। সবার জ্ঞাতার্থের আলোকে মহৎ জীবনের আলোকে আজও তেমনি ভাবেই বই পড়ুয়া অসংখ্য ব্যক্তির সৃৃষ্টি হচ্ছে এবং আগামীতেও হবে।

চিরিরবন্দর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মেনহাজুল ইসলাম বলেন, নতুন প্রজন্মকেই আগামী দিনের “উন্নত বাংলাদেশ” গড়ায় বড় ভূমিকা পালন করবে এই ‘বই’। আধুনিক এবং উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত একটি জাতি গঠনে এই সরকার “বই বিতরণের উদ্যোগ” বাস্তবায়ন করেছে। এক সময় “পুস্তক অথবা শিক্ষা” সরঞ্জামের অভাবে কোমলমতী শিশুরা যেন স্কুলে যেত না প্রতি বছরেই অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ত। এখন সেই ঝরে পড়ার হার নেই বললেই চলে।

গ্রীনল্যান্ড কাস্টম হাউস এজেন্সির পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম (রফিক) বলেন, বই উৎসব যেভাবে দেশের আনাচে কানাচে, তৃণমূলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সেভাবে মানসম্মত শিক্ষার আন্দোলন পৌঁছাতে হবে দেশের প্রতিটি প্রান্তরে, ঘরে ঘরে। বিশ্বায়নের যুগে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে যে চ্যালেঞ্জ সরকার নিয়েছে, সেটিকে আরো বেগবান করা সময়ের দাবি। পারিবারিক ও নৈতিক শিক্ষাকে আরো বেশি গুরুত্ব দিয়ে কোমলমতি শিশুদের মনে দেশপ্রেম ও সামাজিক দায়বদ্ধতার বীজটি বপন করতে পারলে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সময়ের ব্যাপার মাত্র।

হাশিমপুর মোল্লা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাঃ ওয়াহিদা বেগম বলেন, বইয়ের মাধ্যমে নানা ভাবনার সংমিশ্রনে ব্যক্তিগত ধারনা ও বিশ্বাস দৃঢ় হয়। যে সকল নাগরিক নিজস্ব সু-চিন্তিত মতবাদের ওপর আস্থাবান তারাই গণতন্ত্রের সম্পদ। সারাবিশ্বের মনীষীদের বইয়ের নেশার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে মানব জীবনকে এক দৃষ্টান্ত মূলক উক্তি দিয়েছিলেন টলস্টয়। সেটি ঠিক এমন, ”জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন বই, বই, এবং বই।” জ্ঞান অর্জনের প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে বই। তাই মানব জীবনযাত্রাকে সফলতার আলোকে আলোকিত করবার প্রধান উপায় হচ্ছে বই। সুতরাং ভালো বই পড়েই জ্ঞান অর্জন করে যথাযথ প্রয়োগ ঘটিয়েই সমাজ বা রাষ্ট্রের অনেক পরিবর্তনের চিন্তা করা বাঞ্ছনীয়।

এসময় ব‌ই উৎসব অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, গ্রীনল্যান্ড কাস্টম হাউস এজেন্সির পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম (রফিক) সমাজসেবক মোঃ নূর আলম, সাংবাদিক এনামুল মবিন(সবুজ),প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাগন সহ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা।

২০২২ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক স্তরে ৯ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৩০টি, প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ৬৬ লাখ ৫ হাজার ৪৮০টি, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর জন্য ২ লাখ ১৯ হাজার ৩৬৪টিসহ মোট ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৪টি বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। হাশিমপুর মোল্লা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ উৎসব।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও