দিনাজপুর বিরলের ইএনও ১৫ দিনব্যাপী এক সাঁতার প্রশিক্ষণের উদ্বোধন

মে ১৮ ২০২২, ১৬:০১

Spread the love

এনামুল মবিন(সবুজ)স্টাফ রিপোর্টারঃ ‘জীবন বাঁচাতে সাঁতার শিখুন-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনাজপুর বিরলে ১৫ দিনব্যাপী সাঁতার শেখার কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।

১৫ দিনব্যাপী সাঁতার শেখার কর্মসূচিতে সকালে বিরল পৌর শহরের হাঁড়িপুকুরে ’জীবন বাঁচাতে সাঁতার’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণের শুভ উদ্বোধন করেন বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ আফছানা কাওছার।

এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ‘জীবন বাঁচাতে সাঁতার প্রশিক্ষণ” কর্মসূচি পরিচালক সাকাওয়াৎ হোসেন তালুকদার।

অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পরিচালক মোঃ সাকাওয়াৎ হোসেন তালুকদার বলেন, পুকুর-দীঘি, খাল-নদী-হাওয়র বিলের পানিতে মনের আনন্দে নেমে এমনকি গোসল করতে গিয়ে ডুবে মারা যাচ্ছে অনেক শিশু-কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, তরুন-তরুনী ও বয়জ্যেষ্ঠ মানুষ। এর প্রধান কারনটি হলো সাঁতার না জানা।

আগের প্রজন্মের মানুষের সাঁতারের শখ আর অভ্যাস দুটোই ছিল। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছে তা বলতে গেলে অজানা ও ভয়ের বিষয়ই রয়ে গেছে। এতে করে বেঘোরে অনেকেরই মৃত্যু ঘটে পানিতে ডুবে গিয়ে।

ইউনিসেফ এর এক জরিপ অনুযায়ী বছরে বাংলাদেশে সাঁতার না জানার কারণে ১৭ হাজার মানুষ মারা যায়। আর পানিতে ডুবে যে মারা যায় এটা শুধু সাগর, নদীতেই না পুকুর, ডোবা, খাল-বিলেও মারা যায়। পানি বেশি হলেই যে মারা যায় তা না। আতঙ্কের কারনেও মারা যায়।

এই তথ্যের ভিত্তিতে সরকার পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার কমানোর লক্ষে স্কুল ও কলেজের সব শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় এ কর্মসূচি গ্রহন করেছে। জনবলের অভাবের কারনে সচেতন নাগরিক সোসাইটি নামের এ এনজিও’র মাধ্যমে এ কর্মসুচি বাস্তবায়ন করছে সরকার।

পাইলট প্রোগ্রাম হিসেবে দেশের ৭টি উপজেলায় এ কর্মসুচি চলছে। এ ৭টি উপজেলায় সুষ্ঠ্যভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি উপজেলায় এ কর্মসুচি বাস্তবায়ন করবে সরকার।

এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় কোয়ার্টারে বিরল উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রায় ৫৪০ শিক্ষার্থীকে হাতে নাতে সাঁতার শেখানো হবে। তাছাড়াও সাঁতার না কেটে কিভাবে দীর্ঘক্ষণ পানিতে ভেসে থাকা যায় তাও শেখানো হচ্ছে এ প্রশিক্ষণে। যাতে করে কোন শিশু পানিতে পড়ে দুর্ঘটনায় পতিত হলে উদ্ধারকারীদল না পৌঁছানো পর্যন্ত যেন শিশু তার জীবন রক্ষা করতে পারে।

এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করে জানায়, পুকুর ও জলাশয় গুলো নির্বিচারে ভরাট ও মাছ চাষের নামে পুকুরে মুরগীর বিষ্ঠা ফেলানো হয়। ফলে ওইসব পুকুরের পানি ব্যবহার অযোগ্য হওয়ায় শিশুরা সাঁতার শেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের এ অঞ্চলে সাঁতার না জানা শিশু-কিশোর-কিশোরী পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার দিন দিন বাড়ছে। তাই পানি থেকে শিশুর জীবন বাঁচাতে সবচেয়ে বেশি জরুরী সাঁতার শেখানো। সাঁতারই পারে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু ঠেকাতে। তাই বর্তমান সরকার সাঁতার শেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুরজিত কুমার বাবুল এর পরিচালনায় প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ ফখরুল ইসলাম, সচেতন নাগরিক সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক শামীম আজাদ চৌধুরী, সচেতন নাগরিক সোসাইটির পরিচালক মোহাইমিনুল ইসলাম, বিরল সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনজুরুল হাসান দুলু, বিরল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহি উদ্দীন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকলেসুর রহমান ভুট্টু বিরল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক একরামুল হক, বিরল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুল করিম উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও