ছুটির দিনে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের ভীড় 

জানুয়ারি ০৬ ২০২৩, ১৭:২৮

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ রূপগঞ্জের পূর্বাচলে এবার দ্বিতীয়বারের মত বসেছে বাণিজ্য মেলার আসর। প্রথমদিকে কিছুটা অব্যবস্থাপনা থাকলেও বিবিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার খবর প্রকাশের পর ত্রুপি সারিয়ে এখন সম্পূর্ন প্রস্তুত আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা। মেলার ১ জানুয়ারী শুরু হলেও ক্রেতা দর্শনার্থী অনেকটা কম ছিল। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই ক্রেতা দর্শনার্থীদের প্রদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভীড়।

নাজনিন সুলতানা একজন দর্শনার্থী বলেন, প্রথম আসলাম মেলায়। ভালই লাগছে। লোকজনও ভালই আছে। অনেকেই কেনাকাটা করছে। আমিও কিছু কিনলাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দিন দিন লোকজনের সমাগম বাড়ছে। বেচাকিনিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রচন্ড শীত আর ঘন কুয়াশার মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আবহাওয়ায় এ দুরবস্থা কেটে গেলে অবশ্যই মেলায় ক্রেতা দর্শনার্থীর সংখ্যাও বেড়ে যাবে, বিিক্রও ভাল হবে বলে জানান মেলার আয়োজকরা।

তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগমন বাড়ছে। তবে দর্শনার্থীরা এখন কেনাকাটার চেয়ে বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে ঘুরে পছন্দের পণ্য দেখেই সময় পার করছেন।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, গত বছরের চেয়ে এবার মেলার শুরুতেই দর্শনার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। এখন ঘুরে ঘুরে পণ্য দেখলেও খুব শিগগিরই পুরোদমে বেচাকেনাও শুরু হবে। মেলায় প্রবেশের টিকিট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. ছালাউদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, গত ১ জানুয়ারি মেলা উদ্বোধনের দিন বিকালে টিকিট কেটে ৩ হাজার ২১৭ দর্শনার্থী মেলায় প্রবেশ করেছে। ২ জানুয়ারি ৭ হাজার ৪৮১ জন, ৩ জানুয়ারি ৯ হাজার ৭১২ জন এবং ৪ জানুয়ারি ১০ হাজার ২৬ জন টিকিট কেটে মেলায় প্রবেশ করেছে। এই হিসাবে প্রতিদিনই মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি জানান।

এদিকে হঠাত করেই মেলা প্রাঙ্গণের নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র অনেকটাই যেন পালটে গেছে। জানা গেছে, বিভিন্ন পত্রিকায় মেলার অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর মেলা প্রাঙ্গণে যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা ত্রিপল, স্টিলের অ্যাঙ্গেল, লোহার স্ক্রুসহ নির্মাণসামগ্রী সরানো হয়েছে। সেখানে এখন দর্শনার্থীদের বসার জন্য বেঞ্চ ও ফুল সংবলিত ফুলের টব দিয়ে সাজানো হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ। এমন সুন্দর পরিবেশে দর্শনার্থীরা কেউ ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও লাইভে এসে স্বজনদের দেখাচ্ছেন। মনোমুগ্ধকর এই পরিবেশের স্থায়িত্ব চান ক্রেতা, বিক্রেতা ও দর্শনার্থীরা।

মি. বাইট রেস্টুরেন্টের মালিক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ খোকন বলেন, মেলার পরিবেশ আকর্ষণীয় হলে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগমনে মেলা জমজমাট হয়ে উঠবে। গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলা প্রাঙ্গণ বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও মেলার সীমানা ঘেঁষে অবস্থিত ঢাকা বাইপাস সড়ক ধুলোবালিতে পরিপূর্ণ। গাড়ি চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। মেলার বাইরে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক অস্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে। তার মধ্যে খাবারের দোকানের সংখ্যা বেশি। এসব দোকানে চড়া দামে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। দর্শনার্থীরা বাধ্য হয়েই চড়া দামে এসব ক্রয় করছেন।

ভারত থেকে আসা শীতের কাপড় বিক্রির স্টলের কর্মচারী তপন চক্রবর্তী বলেন, স্টল ও প্যাভিলিয়নের কর্মচারীদের জন্য গতবারের মতো ১০০ টাকার মধ্যে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হতো। বাড়তি দাম এড়াতে কেউ কেউ বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খাচ্ছেন। ঐক্য অনলাইন শপিং স্টলের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, মেলা জমে উঠতে শুরু করেছে। বিক্রয়কেন্দ্রে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ছে।

মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মেলা এলাকার ধুলোবালিতে প্রতিদিন আয়োজক সংস্থার পানি দেওয়ার কথা। কিন্তু তারা এটা নিয়মিত করছে না। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, মেলা এলাকায় ধুলোবালির সমস্যা সমাধানে প্রতিনিয়ত পানি দেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিয়মিত কাজ করছেন।##

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও