গরমে অতিষ্ঠ মানুষের তৃষ্ণা মেটাতে ডাবের বিকল্প নেই

জুন ১১ ২০২৩, ১০:৩৩

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ  মাঝে মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিললেও কমছে না গরমের তীব্রতা। প্রকৃতি যেন নিষ্ঠুর প্রতিশোধ নিচ্ছে। কোনভাবেই কমছে না দাবদাহ। একটু ঠান্ডা প্রশান্তির আশায় মানুষ ফুটপাতে অস্বাস্থ্যকর খাবার কেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পানি বাহিত রুগির সংখ্যা হাসপাতালগুলোতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারপরও থেমে নেই মানুষ।

একটু ঠান্ডা পেতে কি না করছেন মানুষ। দিনে ৪/৫ বার গোছল করছেন। ফুটপাত থেকে ঠান্ডা সরবত কিনে খাচ্ছেন। ফ্রিজের কোমল পানীয় খেয়ে সর্দি কাশিমহ গলা ফুলিয়ে ফেলছেন। তবুও শান্তি নাই। তীব্র গরমে ওষ্ঠাগত জনজীবন। বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে উপজেলায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থার তৈরি হয়েছে।

গরমে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ ছুটছেন একটু তৃষ্ণা মেটাতে। তাই কর্মব্যস্ত জীবনে কাঠফাটা রোদে তৃষ্ণা মেটাতে পানি, ফলের রস ও কোমল পানীয়র পাশাপাশি এখন ডাবের চাহিদা তুঙ্গে। ওষ্ঠাগত প্রাণে শান্তি যোগাতে প্রাকৃতিক পানীয় ডাবের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।
তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি থাকায় বেড়েছে ডাবের দাম। চলমান তাপপ্রবাহে ডাবের দাম এখন আকাশচুম্বী। তাই সাধারণ মানুষ এখন ডাব কিনতে সাহস পাচ্ছে না।

প্রাকৃতিক পানীয় হিসেবে তো বটেই, রোগীর পথ্য হিসেবেও ডাবের বেশ কদর রয়েছে। সেজন্য সারাবছরই ডাবের কদর লক্ষ করা গেলেও প্রকৃতিতে তাপপ্রবাহ চলাকালে এর চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে ডাবের চাহিদার অনুপাতে উৎপাদন ঘাতটির কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা দাম বেড়ে যায়।

বিক্রেতারা বলছেন, ডাবের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সে অনুপাতে সরবরাহ না থাকায় একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করছেন।

উপজেলার ভ্রাম্যমান ডাবের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে প্রতি পিস ডাব ৭০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট আকারের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের মতো পানি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেটা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। মাঝারি মানের ডাব যেটাতে এক গ্লাসের থেকে কিছুটা বেশি পানি রয়েছে তার দাম ৯০ থেকে ১০০ টাকা, আর একটু বড় আকারের ডাব যেটাতে দেড় থেকে দুই গালাস পানি পাওয়া যায় সে সাইজের ডাব কিনতে গেলে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। স্বাভাবিকের তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় অনেকে শুধু দাম শুনেই ফিরে যাচ্ছেন।

রোকন শেখ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের আটটি ডাব গাছ আছে। সারাবছরই পাইকারদের কাছে ডাব বিক্রি করে থাকি। তবে এখন আর আগের মতো গাছে ফলন হয় না। চতুরদিকে ইটভাটা আর শিল্প-কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়ায় গাছের পাতা ফ্যাঁকাসে হয়ে যাচ্ছে। আগের মতো ফলনও হয় না। ডাব কম হওয়ায় চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, বাজারে সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করছি।

ডাব বিক্রেতা মোতাহার হোসেন বলেন, আমি শীত গরম সব মৌসুমেই উপজেলার কৃষকদের গাছের ডাব কিনে ভ্যানে করে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকি। এই গরমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত ডাব না পাওয়ায় আড়ত থেকে একটু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় ডাব কিনতে আসা আজহার মিয়া জানালেন, পাশেই হাসপাতালে রোগী দেখতে এসেছেন তিনি। রোগীর জন্য অন্য ফলমূলের সঙ্গে চারটি ডাবও কিনেছেন।তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও মাঝারি সাইজের ডাব কিনেছি ৭০ টাকায়। এটা এখন দেখি ৯০ টাকা হয়ে গেছে। এ গরমে রোগীর জন্য ডাব খাওয়া ভালো হবে তাই নিলাম।

মুড়াপাড়া এলাকার ডাব বিক্রেতা রোমান মিয়া বলেন, দাবদাহে বাজারে ডাবের চাহিদা বেশ বেড়েছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি দর এখন কিছুটা বেশি। তাই কিছুটা বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হলে চাহিদার সঙ্গে দামও কমে যাবে।###

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও