ছাত্রকে মারার প্রতিবাদ করায় ছাত্রের মাকে লাঞ্চিত করল প্রধান শিক্ষক

অক্টোবর ৩০ ২০১৮, ১০:০৬

Spread the love

দুইদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় ও বার্ষিক পরীক্ষার জন্য একশত টাকা ফি জমা না দেয়ায় পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র সুমন মিয়াকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে পিটিয়েছে প্রধান শিক্ষক। এতে ছাত্রটি আহত হয়।
সোমবার বেলা ৩টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের সয়রাগন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম আফতাবুজ্জামান।

এ দিকে ঘটনার কথা জানতে পেরে ছাত্র সুমন মিয়ার মা শেফালী বেগম বিদ্যালয়ে এসে প্রতিবাদ করলে তাকেও লাঞ্চিত করেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে ও তার অপসারণ দাবি করে।
সুমন গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম গ্রামের কৃষক মখমোল হোসেনের ছেলে। সে ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র।
স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষার জন্য ছাত্রপ্রতি ছবিসহ একশত করে টাকা দাবি করে প্রধান শিক্ষক।

সোমবার বেলা ১২টার দিকে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র সুমন টাকা দিতে না পেরে প্রধান শিক্ষকের কাছে শুধু তার ছবি জমা দেয়। একশত টাকা জমা না দেয়া ও দুইদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারনে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে সুমনের হাত ও পায়ে মারধর করেন প্রধান শিক্ষক আফতাবুজ্জামান।
খবর পেয়ে সুমনের মা বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে ছেলেকে পিটানোর প্রতিবাদ করে ১০০ টাকা ফিস জমা দেয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ফি এর টাকা ও সুমনের ছবি ছুড়ে ফেলে দিয়ে তাকে আর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবেনা উল্লেখ করে সুমনের মাকেও গলাধাক্কা দিয়ে কক্ষ থেকে বের করে দেন প্রধান শিক্ষক।

পরে ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী স্কুলে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখে ও তার অপসারণ দাবি করে।
পরে ওই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আমজাদ হোসেন ও সদস্য আরজুল হক এসে প্রধান শিক্ষকের বিচার করা হবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়।
ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে প্রধান শিক্ষক আফতাবুজ্জামান সাংবাদিকদের কাছে ছাত্র পিটানো ও তার মাকে গলা ধাক্কা দেয়ার ঘটনা অস্বীকার করে কথাকাটি হয়েছে বলে জানান। এ জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
সয়রাগন্ধ্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী কাম দপ্তরী আলমগীর হোসেন লাল বলেন, প্রধান শিক্ষকের খারাপ আচরণের কারনে এর আগেও এলাকাবাসী তাঁর বিচার দাবি করেছিল। তাছাড়া তিনি স্কুলের সবার সাথেই খারাপ আচরণ করেন।
মারুফা আক্তার নামে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়েও ওই স্কুলের ছাত্রী। আমি আমার সন্তানের ছবি নিয়ে আসলে তিনি আমার উপরও অযথা রাগ করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরীফা আক্তার জানান, বিষয়টি আমরা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে এবং তদন্ত করে সত্যতা পেলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও