শেষকৃত্যেও লাশ কাঁধে তুলে নিচ্ছে পুলিশ

এপ্রিল ১৯ ২০২০, ১৬:৩৬

Spread the love
নাঈম ইসলাম:
এইতো সেদিন মগবাজার মোড়ে চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলাম।হটাৎ একটি টহল পুলিশের গাড়ি এসে থামালো আমাদের চায়ের দোকানের একটু দূরেই। এসময় পাশে থাকা এক ভদ্রলোক একটু আড়ভাবেই টহলরত পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্য করে একটু কথা বল্লেন।এরকম অনেকের চোখেই সমালোচনার পাত্র ছিল পুলিশ ভাইয়েরা।হয়তো সবাই ই একটু আড়চোখে দেখতেন দেশের ক্রান্তিলগ্নের এই বীরদের।
এইতো কিছুদিন আগেই আপনার আশেপাশে কত বন্ধু কত শুভাকাঙ্খী  কত আপনজন ছিলো।আর আপনি যখন এ ক্রান্তিলগ্নে না খেয়ে আছেন নিজের অর্থায়নে আপনার ঘরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তারাই,আপনাকে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাচ্ছেন তারাই,আপনাকে করোনা থেকে মুক্ত রাখার জন্য ঘরের মধ্যে রেখে বাহিরে কাজ করে যাচ্ছেন তারাই।এমনকি আপনি মারা গেলে আপনার দাফনের কাজটাও তারাই করছেন।বন্ধু হিসেবে বন্ধুর লাশ কাঁধে তুলে নিচ্ছেন তারা।অথচ আপনার এই শেষ কৃত্যেও কাছে নেই আপনার বন্ধু, শুভাকাঙ্খী ও আপনজন।
বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ২৩ লক্ষের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১৬০৯৫২ মানুষ মারা গেছে ।চীনের উহান শহর থেকে বিস্তার লাভ করা এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির মহামারী ব্যাধী থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও।বাংলাদেশে এপর্যন্ত মোট ২৪৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৯১ জন মারা গেছে।
এরি মধ্যে করোনায় পুরো দেশ  ঝুঁকিপুর্ন বলে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।দেশকে করোনা থেকে মুক্ত রাখার জন্য দেশের সকল সরকারি -বেসরকারি অফিস আদালত বন্ধ ঘোষণাসহ অঘোষিত লক ডাউন করে সবাইকে নিরাপদে নিজ গৃহে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছেন সরকার।কেননা ঘরে অবস্থান করলেই করোনা থেকে মুক্তি মিলবে।আর ঘরে অবস্থাননের জন্য পুলিশবাহিনী দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন করোনা যুদ্ধের ময়দানে ,জনগনদের শিখাচ্ছেন সামাজিক দুরত্ব কি। কিভাবে করোনা থেকে বাঁচতে হবে।
কিছুদিন আগেও যাঁদের দেখা গিয়েছিল মানুষের সমালোচনার,গালির পাত্র, তাঁরাই এখন দেশের ত্রাতার ভূমিকায়। রোগীদের বাঁচাতে রক্ত দিচ্ছেন, খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন গরিবের কাছে,ভবঘুরে, ফুটপাথবাসীদের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন, গরিব ও পরিয়ায়ী শ্রমিকদের বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসছেন চাল, ডাল। দেশের অনেক এলাকায় লোকে লকডাউনের তোয়াক্কা না করে বেরিয়ে পড়ছেন, তাঁদের সচেতন করার জন্য গানও গাইছেন তারা।
পুলিশের এসকল কাজ ইতিমধ্যে প্রশংসিত হয়েছে।দেশবাসীর কাছে ভালোবাসা ও নিরাপত্তার কান্ডারী হিসেবেও নতুন করে পরিচিতি লাভ করেছেন লড়াকু এ সৈনিকেরা।
এদিকে এ যোদ্ধাদের প্রতি,আগামীর সুস্থ পৃথিবীতে এ দেশের কল্যাণে এমনিভাবে কাজ করে যাবেন এবং বন্ধু হিসাবে মানুষের পাশে থেকে জনতার পুলিশ বাস্তবায়ন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশবাসী।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও