শপিংমল খুলে দেয়া করোনা মোকাবিলায় উদাসীনতা নয় তো?

মে ০৬ ২০২০, ২২:৪৮

Spread the love

নাঈম ইসলাম:

প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে সামাজিক দুরত্বতা নিশ্চিতসহ সকলের নিজ নিজ সচেতনতায় করোনা মোকাবিলায় অনেকটাই সফলভাবে এগোচ্ছে বাংলাদেশ।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে করোনায় ঝুঁকিপূর্ন ঘোষণা করলেও অন্যান্য দেশের তুলনায় সীমিত আকারেই সংক্রামিত হচ্ছে আমাদের দেশে।তবে সরকারের সীমিত আকারে নতুন নির্দেশনায় করোনা মোকাবিলায় কতটা আর সফল থাকবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।শপিংমল খুলে দেয়াসহ কিছু পরিবর্তন রয়েছে সে নির্দেশনায়।যাতে করে করোনা সংক্রামিতর পরিমাণ বাড়বে অনেকটাই, যা করোনা মোকাবিলায় উদাসীনতার বহিঃপ্রকাশ বল্লে ভুল হবেনা।

এদিকে বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৩৬ লক্ষের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ২৬০৭৯৭ মানুষ মারা গেছে। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসটির মহামারী ব্যাধীতে বাংলাদেশও এপর্যন্ত মোট ১০২২৯ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং এদের মধ্যে ১৮৩ জন মারা গেছে।দেশকে করোনা থেকে মুক্ত রাখার জন্য দেশের সকল সরকারি -বেসরকারি অফিস আদালত ষষ্ঠ দফায় ছুটি বাড়িয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় । তবে নতুন নির্দেশনায় এবারের ছুটি বাড়িয়েছে সরকার। গার্মেন্টসসহ সকল অফিস-আদালত সীমিত আকারে খুলে দেয়া হয়েছে।এদিকে আগামী ১০ই মে থেকে কিছু শর্তে শপিংমলগুলোও খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে।আবার সবাইকে নিরাপদে নিজ গৃহে অবস্থান করার পরামর্শও দিয়েছেন সরকার।জনগণ যেখানে আইন মানছে না সেখানে শর্ত পালন করে শপিংমলগুলো পরিচালনা করা কতটা সম্ভব হবে তা বোধগম্য নয়।তাহলে কি লাভ হলো পুলিশ,সেনাবাহিনী,র‍্যাব দিয়ে লকডাউন শিখিয়ে?
কি হলো মসজিদের জামাত বন্ধসহ লকডাউন ভেঙে জানাজার জন্য ওসি প্রত্যাহার করে?
অথচ কিছুদিন আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আভাস দিলো, মে মাসে পঞ্চাশ হাজারে সংক্রামিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
আর এই মুহূর্তে শপিংমল গুলো খুলে দেয়া, করোনা মোকাবিলায় উদাসীনতা নয় তো ?ঈদের কেনাকাটা,করোনা মোকাবিলার থেকেও বড় জরুরী হয়ে গেল! যেখানে হেরে যেতে পারে মানুষের প্রান,বাড়তে পারে করোনা সংক্রামিতদের সংখ্যা।

বর্তমানে উন্নত দেশসহ সারা বিশ্ব করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে,যুদ্ধ ছাড়াই পুরো বিশ্ব স্থবির।সেখানে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশ এ নতুন নির্দেশনায় করোনা মোকাবিলায় হয়তো আরেক ধাপ পিছিয়ে গেল।কেননা যে দেশে পুলিশ,সেনাবাহিনী,র‍্যাব, দিয়ে আইন শেখাতে হয় সেখানে শর্ত মেনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে শপিংমল পরিচালনা করা বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাজানোর মতই।

হয়তো দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখার জন্যই সরকার এ নির্দেশনা দিয়েছেন।কিছু করার ও নেই, আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে এসকল সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য নয়।অফিস, গার্মেন্টসসহ উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া ছাড়া হয়তো সম্ভবও নয় অর্থনৈতিক হুমকি মোকাবিলা করা।তবে শপিংমলগুলো খুলে দেয়াটা আসলেই করোনা মোকাবিলায় হুমকির বিষয়।কেননা সব শ্রেনী-পেশার মানুষ সেখানে একত্রিত হবে আর হয়তো অনেকেই শর্ত না মেনে কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পরবে।যাতে করে করোনা সংক্রামিত মোকাবিলায় হুমকিতে পরতে হবে।
এছাড়াও লকডাউন শিথিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছয়টি শর্ত দিয়েছে। শর্ত পালনের মধ্য দিয়েই লকডাউন শিথিল করার জন্য বলা হয়েছে।যার কোন ব্যবস্থা ছাড়াই সীমিত আকারে খুলে দেয়া হচ্ছে সব।এখন প্রশ্ন হচ্ছে সীমিত আকারে বলতে কি বোঝানো হচ্ছে?কোন ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া সীমিত আকারে শপিংমল খুলে দেয়াটা করোনা মোকাবিলায় কতটা উদাসীনতা, হয়তো পরে উপলব্ধি করতে পারবো আমরা।
সরকারের উচিৎ সমগ্র অবস্থা বিবেচনা করে শপিংমলগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া।
তাহলেই হয়তো করোনা মোকাবিলায় বিগত সময়ের অবরুদ্ধ বা সামাজিক দুরত্বতা নিশ্চিতে যে কাজ করেছেন সরকার, তা হবে প্রশংসনীয় ও সফল।
একই সাথে করোনা মোকাবিলার মধ্য দিয়ে করোনা যুদ্ধে বিজয়ী হিসাবে সুস্থ একটি দেশ পাবে এ জাতি।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও