ফেরিওয়ালা থেকে তৌহিদ এখন রংপুর অঞ্চলের সেরা করদাতা

নভেম্বর ১২ ২০১৮, ২৩:২৯

Spread the love

ভবিষ্যৎ গড়তে হিমশিম খাওয়া অথবা প্রতিবন্ধকতার হাজারো চড়াই উৎরাইয়ে হোচট খাওয়া দেশের লাখো তরুন যুবক অনুপ্রেরনা পেতে স্টিভ জবস,ল্যারি পেজ, ওয়ারেন বাফেট অথবা জ্যাক ডরসির মত অনেকের সাফল্যের সূত্র জেনেছেন অনেক! কিন্তু আজ জানাচ্ছি বাংলাদেশের উত্তর জনপদের এক অদম্যপ্রান তরুনের অন্যরকম এক সাফল্যের গল্প !

ব্যক্তিজীবনে সেই তরুন কখনোও শিব খেরার ‘তুমিও জিতবে’ অথবা রিচার্ড ব্র্যানসনের কোটিপতি হবার সুত্র জানেননি।।
সিনেমার গল্পের মতই জিরো থেকে ইচ্ছের শক্তি আর বড় হবার স্বপ্নচোখে আজকের দিনে ‘হিরো’ হয়েছেন তিনি!
হ্যা, ঠিকই জেনেছেন! সেই তরুনের ভাষায় ফেরিওয়ালা থেকে আজ অর্জন করেছেন জীবনের সব স্বাচ্ছন্দ্য।

সময়ের কণ্ঠস্বর’এর রংপুর প্রতিনিধি মেজবাহুল হিমেল জানাচ্ছেন অনন্য অনুপ্রেরনার সেই গল্প।

“সদ্য লোকসানে পড়া বাবার পক্ষে একটি সাইকেল ক্রয় করা সম্ভব ছিলনা বলে ৪ কিঃমিঃ পথ পায়ে হেঁটে টিউশন পড়ানো তৌহিদ হোসেন আজ অনেকের প্রেরণার উৎস। কে জানত? খুচরা যন্ত্রাংশ কাঁধে বয়ে বেড়ানো তৌহিদ হোসেনের অনিশ্চিত যাত্রাই হবে সাফল্যের স্বপ্নযাত্রা।

সেই তৌহিদ হোসেন এবার হয়েছেন রংপুর অঞ্চলের সেরা করদাতা। রোববার রংপুর জেলা পরিষদ কমিউনিটে সেন্টারে তাঁকে রাষ্ট্রীয় এই সেরা করদাতার সম্মাননা স্মারক তুলে দেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এই উদ্যোক্তার সংগ্রাম মুখর বেড়ে উঠার গল্প উঠে এসেছে তৌহিদের সাথে আলাপচারিতায়।

তৌহিদ হোসেন ১৯৮৭ সালের ১০ ই মে জন্ম গ্রহন করেন রংপুরের স্টেশন রোডের সাফায়েত হোসেন ও ইশরাত জাহান দম্পত্বির কোলে। জন্ম নিয়ে পারিবারিক আর্থিক আভিজাত্যে বড় হতে থাকেন তিনি। ভর্তি হন রংপুরের ঐতিহ্যবাহি ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেন্ট সায়মন কিন্ডার গার্টেনস্কুলে। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সাল ১০ বছর সাফায়েত হোসেন ছিলেন রংপুর অঞ্চলের সব চেয়ে বড় ইলেকট্রনিক্স ও মোটরসাইকেল ব্যবসায়ি।

স্টেশন রোডের হোসেন ব্রাদার্স ইলেক্ট্রনিক্সের নাম তখন রংপুর জুড়ে। রংপুরের বাইরেও বেশ কয়েকটি শাখা। এরই মধ্যে সৈয়দপুর এবং জলঢাকা ব্রাঞ্চের ম্যানেজাররা পুরো ব্যবসায় নামিয়ে দেন ধ্বস। সেই ধ্বসে একেবারেই পুঁজি হারিয়ে ফেলেন সাফায়েত হোসেন। শুরু হয় তৌহিদদের পরিবারে আর্থিক দৈন্যদশা। ব্যবসায়িক লোকসানের টেনশনেই সাফায়েত হোসেন ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো ব্রেন স্টোক করে ভর্তি হন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে ফিরে আসেন বাসায় । কিন্তু তাকে তাড়া করে বেড়ায় লোকসানের বিষয়টি। আবারও ১৭ দিনের মাথায় তিনি ব্রেন স্টোক করেন। এরপর শয্যাশয়ি হন। আর উঠে দাড়াতে পারেন নি। এখনও তিনি শয্যাশয়ী। এমতাবস্থায় ৫ সন্তানসহ সাফায়াতের সংসার চলতে থাকে দোকান থেকে পাওয়া ভাড়ার টাকায়। খুব দৈন্যদশার মধ্যে চলতে থাকে সংসার।

তৌহিদ হোসেন জানান, ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত সেন্ট সায়মুন কিন্ডার গার্টেনে(বর্তমানে ল কলেজ) বাবার প্রাইভেট কারে স্কুলে যেতাম। কিন্তু ব্যবসায়িক লোকসানের কারনে সব ফিঁকে হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে ভর্তি হই গুপ্তপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেনিতে। সেখান থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ভর্তি হই রংপুর হাই স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে। সংসারের দৈন্যদশার কারনেই শুরু করি টিউশনি। প্রথম মাসের টিউশনের সম্মানি ২০০ টাকা পাওয়ার পর তা দিয়ে মাকে শাড়ি কিনে দেই। সেই শাড়ি পেয়ে আমার মায়ের সেই খুশি মুখ আমাকে এখনও তাড়া করে বেড়ায়। পড়ালেখা ও টিউশনির পাশাপাশি আমি সংসারের আর্থিক অনটন কিভাবে কাটানো যায় সেই চিন্তা করতে থাকি।

তৌহিদ হোসেন জানান, আমার ফুফা নাইয়ার আজম ছিলেন মোটর সাইকেল পার্টস ব্যবসায়ী । সপ্তম শ্রেনীতে উঠা মাত্রই একদিন আমার মা আমার ফুফাকে অনুরোধ করলেন, ভাই সংসার চালাতে কস্ট হচ্ছে। আমার ছেলেটাকে ব্যবসা শেখাও। কিন্তু বয়স অল্পের কারনে প্রথমে ফুফা তাতে রাজি হলেন না। আমার মাকে ধমক দিয়ে বললেন, ও ছোট, ওকে দিয়ে কি ব্যবসা হবে। পরে একদিন আবারও মা আমাকে ফুফার কাছে নিয়ে গিয়ে একই আবদার করলেন। এবার ফুফা কথা ফেলতে পারলেন না। আমাকে ব্যবসা শেখাতে রাজি হলেন। আমার ডিউটি পরলো ফুফার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার প্রতিটি উপজেলায় ফুফার সাথে যাওয়া।

তৌহিদ হোসেন জানান, সেই থেকে শুরু হলো ব্যবসা শেখার পালা। ফুফার সাথে তার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে সকালে যেতাম। ফিরতাম রাতে। বাসায় আসার সময় ফুফা আমাকে ১০০ টাকা দিতেন দিন হাজিরা। এভাবে একবছর তার পেছনে ঘুড়ে মোটর সাইকেল পার্টসের নাম, অর্ডার নেয়া ও ডেলিভারি সিস্টেম শিখে ফেললাম।

এর মধ্যে লেখাপড়াও চালাতে থাকলাম। অস্টম শ্রেনিতে উঠে আমি ফুফাকে বললাম- আমাকে আপনি যন্ত্রাংশ দাম কেটে দেন। আমি নিজে ব্যবসা করি। ফুফা আমার সাহস দেখে আমাকে উৎসাহিত করলেন। তিনি প্রথম দিন আমাকে ১৩ হাজার টাকার যন্ত্রাংশ দর কেটে দিয়ে বিক্রির জন্য দিলেন। সেই যন্ত্রাংশ আমি মিঠাপুকুর, শঠিবাড়ি ও বড় দরগায় গিয়ে বিক্রি করে প্রথম দিনে ১ হাজার ১৮০ টাকা মুনাফা করি। সেই টাকা মায়ের হাতে এনে দেই। এভাবে এক বছর ফুফার কাছ থেকে যন্ত্রাংশ ক্রয় করে বিক্রি করি। বছর ঘুড়তেই পুঁজি দাড়ায় দেড় লাখ টাকায়। এরপর আমি ফুফার সহযোগিতায় যশোর ও ঢাকা থেকে মহাজনদের কাছ থেকে মাল ক্রয় করে এনে জেলায় জেলায় উপজেলায় উপজেলায় ফেরি করে বিক্রি শুরু করি।

তৌহিদ হোসেন জানান, অস্টম শ্রেনীতে পড়ার সময় আমার স্কুলে বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে ভিআইপি শাহাদত হোসেনকে সম্মাননা দেয়া হয়। আমরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মিলে তাকে সংবর্ধনা দিলাম। সবাই তাঁকে ভিআইপি হিসেবে খুব সম্মান দেখালেন। আমার কিশোর মনে প্রশ্ন জাগলো।

তাঁকে কেন এতো সম্মান দেখানো হচ্ছে। আমি একজন স্যারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলাম। তখন স্যার আমাকে বললেন ওনি অনেক বড় ব্যবসায়ি। সরকারকে অনেক টাকা কর দিয়েছে। সেই জন্য সরকার তাঁকে সেরা করদাতা হিসেবে ভিআইপি মর্যাদা দিয়েছে। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে ফিরতে আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম, আমিও ব্যবসা করে একদিন অনেক বড় ভিআইপি হবো। সেই দিনই আমি শিশু বেলার স্বপ্ন পাল্টে ফেলি। শিশু বেলায় আমার ইচ্ছা ছিল আর্মি অফিসার হবো।

ফেরি করে পার্টস বিক্রি করতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তৌহিদ হোসেন জানান, একদিন দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে মালামাল বিক্রি করে সৈয়দপুরের বাস ধরার জন্য স্ট্যান্ডে আসি। দেখি শেষ গাড়িটিও ছেড়ে দিচ্ছে। তখন এক মন ওজনের মালামালের ব্যাগ কাঁধে নিয়ে দৌড়ে গিয়ে বাসের পেছনের ছাদের উপরে ওঠার সিড়িতে লাফিয়ে উঠি।

ওই বাসটিতে ছাদেও জায়গা ছিল না। খাচা ভর্তি মাছ ছিল। বাস রাস্তায় গিয়ে ব্রেক কষলে সেই মাছের পানি মাথাসহ সারা শরীরে পরে ভিজে যায়। এভাবে বার বার ভিজে ভিজে সৈয়দপুর আসি। সেখান থেকে রংপুর আসার জন্য আরেকটি বাসে উঠি। কিন্তু আমার শরীরের মাছের আঁশটে গন্ধ পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা আপত্তি করলে তারাগঞ্জে এসে সুপারভাইজার আমাকে নামিয়ে দেয়। বাস থেকে নামিয়ে দেয়ার পর সেদিন মাঝ পথে খুব কেঁদেছিলাম।

তৌহিদ হোসেন জানান, অনেক দিন গেছে পার্বতীপুর থেকে মালামাল বিক্রি করে ক্লান্ত শরীরে রাত ১১ টায় ট্রেনে উঠেই ঘুমিয়ে গেছি। ঘুম ভাঙ্গার পর দেখি আমি কাউনিয়া স্টেশনে। কি আর করা, অগত্যা ব্যাগে থাকা বই নিয়ে প্লাটফর্মের লাইটের আলোতে পড়া শুরু করি। পাশাপাশি ব্যাগে থাকা যন্ত্রাংশ আগলে রাখি। ভোরবেলা অন্য ট্রেনে রংপুর ফিরি। আবার মায়ের সাথে দেখা করে ১০ টার দিকে ব্যাগে যন্ত্রাংশ ও বই নিয়ে যাত্রা শুরু করি। এভাবে নির্ঘুম রাত, বিশ্রামহীন দিন গেছে পার্টস ফেরি করে বিক্রি করতে আমার।

সুমি অটোর নামকরণের স্মৃতি আওড়িয়ে তৌহিদ  হোসেন বলেন, ২০০০ সালের দিকে  নীলফামারীর ডোমারে পার্টস ডেলিভারি দিতে যাই। কিন্তু দোকানদার বায়না ধরলেন ম্যামো ছাড়া মাল নিবেন না। এতে হতচকিত হয়ে যাই। পাশে চোখ পড়তেই দেখি একটি প্রিন্টিংয়ের দোকান। তাৎক্ষণিভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার আদরের ছোটবোন সুমীর নামে সুমি অটো নাম দিয়ে ম্যমো তৈরি করে তাকে ডেলিভারি দেই। ডোমার থেকেই আজকের সুমি অটোর উৎপত্তি।

তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার পিঠের ব্যাগে পার্টস ছাড়াও ক্লাসের নির্দিষ্ট বই ছিল সময়। সময় পেলেই রাস্তায়, ট্রেনে, দোকানে, পড়ালেখা করেছি। দশম শ্রেনীতে ১৮৪ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ১ম স্থান অধিকার করি। এরপর সেখান থেকে এস.এস.সি এবং রংপুর সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করি। পাশাপাশি চলতে থাকে ফেরি করে পার্টস বিক্রি করা।

২০০৪ এ আমার পুজি হয় ১০ লাখ টাকার ওপরে। এরমধ্যে বড় বোনের বিয়েতে ৬ লাখ টাকা খরচা করি। এতে পুজি ঘাটতি হয়ে যায়। আবারও শুরু করি কঠোর পরিশ্রম। ২০০৬ সালে রংপুর শহরের জিএল রায় রোডে সুমি অটো নামে মোটর সাইকেল পার্টসের দোকান দিয়ে স্থায়ী ব্যবসা শুরু করি।

এসময় পুঁজি সংকটের কারনে অন্যান্য বাবসায়িদেও সাথে কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। সেকারণে ব্যাংক লোনের জন্য চেষ্টা করি। প্রথমে আমি ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৩ লক্ষ টাকা ঋণের জন্য আবেদন করি। লোনের চূড়ান্ত নথি অল্প বয়সের কারনে বাতিল করেন ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। খুব আহত হই। বাসায় এসে কাঁদি। কিন্তু মা আমাকে সাসস দেন। মায়ের সাহসে এগুতে থাকি।

২০০৭ সালে দোকানের পুরো দায়িত্ব দেই আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই, রংপুরের অতি পরিচিত মুখ তারুণ্যের আইকন তানবীর হোসেন আশরাফীর কাছে। আর আমি শুরু করি আবারও ফেরি করে পার্টস বিক্রি। বাড়তে থাকে আমার ব্যবসার পরিধি। পরের বছর ২০০৮ সালে ব্রাক ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তারা নিজে এসে আমার সাথে যোগাযোগ করে লোন দেয়। ২০১৮ সালে আমি ব্রাক ব্যাংকের রংপুর বিভাগের সর্বোচ্চ গ্রাহক। এভাবে ১০ বছরে মোটর সাইকেল পার্টসের পাইকারী ব্যবসা উত্তরের ষোল জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে।

তৌহিদ জানান, ২০১২ সালে আমি সেনা কল্যান ট্রাস্ট পরিচালিত জয়দেবপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মেজর মনিরের মাধ্যমে ডিলারশীপ নিয়ে ৪ টি অটো এনে রংপুরে ইজি বাইকের ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করি। পার্টসের ব্যবসার পাশাপাশি ইজিবাইক ও যন্ত্রাংশের ব্যবসা চলতে থাকে। ২০১৬ সালে চায়না থেকে সরাসরি মোটর সাইকেলের পার্টস ও ইজি বাইক যন্ত্রাংশ আমদানি শুরু করি। আল্লাহর রহমতে আর পেছনে ফিরতে হয় নি আমাকে।

তৌহিদ হোসেন জানান, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যবসায় সময় দিতে গিয়ে আমার খাওয়ার কোন সিউিউল ছিল না। যা খেতাম তা বমি হয়ে যেতো। তারপর চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হলে তারা বলেন আমার আলসার হয়েছে, যা মরণব্যাধি ক্যান্সারে পরিনত হওয়ার শংকা ছিল।

চিকিৎসকরা পাকস্থলী থেকে দুটি পলিপ অপসারণ করে ক্যান্সার পরীক্ষার জন্য পাঠায়। ৭ দিন পর রিপোর্ট আসার কথা। ওই ৭ দিন প্রতিটি মুহুর্ত ছিল একেক বছরের সমান। শুধুই কাঁদতাম আর ভাবতাম ক্যান্সার হয়, তাহলে আমার এত পরিশ্রমের লালিত স্বপ্নের কি হবে। তখন মৃত্যুটাকে খুব সহজ মনে হলো আমার কাছে। এরপর রিপোর্ট ভালো আসা মাত্র নামাজ শুরু করি, আজীবন যেন পড়তে পারি সেই প্রতিজ্ঞা করি।

তৌহিদ হোসেন জানান, আমি মনে করি ইচ্ছের সাথে কঠোর পরিশ্রম এবং সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে চেষ্টা করলে সফলকাম হওয়া যায়। যা আমি আল্লাহর রহমতে করতে সক্ষম হয়েছি। আমার ইচ্ছা দেশের তরুণ সমাজ শুধু চাকরীরির চেষ্টা না করুক। তারা ব্যবসার চিন্তাও করুক। আমার ইচ্ছা কর্মসংস্থান সৃষ্টির। এজন্য ঢাকায় একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী করার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। যখন শুনলাম রংপুওে গ্যাস আসবে। তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই এই ফ্যাক্টারী আমি রংপুওে করবো। আমার এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো।

তার এই সাফল্যের পেছনের গল্প আছে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের উৎসাহ, প্রেরণা ও দোয়া। এ বিষয়ে তৌহিদ হোসেন জানান, আমি একজন মুলত পার্টসের ফেরিওয়ালা। ফেরি কওে পার্ট বিক্রি করতে গিয়ে অনেক সময় আমাকে অনেকেই বাঁকা চোখে দেখেছেন, অসম্মান করেছেন। কিন্তু আমি পিছপা হই নি। আমাকে সামনে এগুতে সাহস জুগিয়েছে আমার মা ইশরাত জাহান, সহধর্মিনী সাবাহ পারভীন নেহা ছাড়াও পরিবারের সবাই। সব থেকে আমার প্রেরনা উৎস হলেন আমার পিতৃতুল্য বড় ভাই তানবীর হোসেন আশরাফী। যিনি আমাকে তিলতিল করে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও