জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে মহান মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে

মে ০২ ২০২১, ০৯:৪০

Spread the love

রাজু আহমেদঃ  বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ নেত্রকোনা জেলার নেতৃবৃন্দ বলেছেন,জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে মহান মে দিবসের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

করোনা মহামারীর সময়ে ঐতিহাসিক মহান মে দিবস বিশ্ব শ্রমিক শ্রেণীর জন্য আরো গভীর তাৎপর্য বহন করছে। মহামারীতে একদিকে যেমন শ্রমিকদের জীবন প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে যাচ্ছে, তেমনি জীবিকা নির্বাহের অনিশ্চয়তায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে প্রচলিত পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী বিশ্ব ব্যবস্থা কোনভাবেই বিশ্ব শ্রমিক শ্রেণী ও জনগণকে নিরাপদ রাখতে পারবে না। তার জন্য অবশ্যই প্রয়োজন মজুরি দাসত্বের ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে শ্রমিক বিপ্লবের মাধ্যমে শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।

আজকের সময়ে ঐতিহাসিক মহান মে দিবসের এই আহবান আরো বেশি প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। ১৩৬-তম মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মে দিবসের এই গুরুত্ব ও তাৎপর্য বর্ণনা করেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ নেত্রকোনা জেলার নেতৃবৃন্দ। সকাল ১১ টায় শহীদ মিনার মোড়ে অবস্থিত সংগঠনের জেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বেসিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সভাপতি ফিরোজ আলী সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের নেত্রকোনা জেলা আহ্বায়ক মতিউর রহমান ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকার রহমান, জাতীয় ছাত্রদলের জেলা আহ্বায়ক রাজু আহমেদ নেত্রকোনা জেলা মটরযান ওয়ার্কসপ মেকানিক্স ইউনিয়নের সাংগঠনিক তাপস হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন ময়মনসিংহ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হেকিম, নেত্রকোন দর্জি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাপস সরকার প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এ বছর করোনা মহামারীজনিত দুর্যোগকালীন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে “সংগনিরোধ” বজায় রাখতে শ্রমিকশ্রেণি বিগত বছরের মতো এ দিবসটি উদ্যাপন করতে পারছে না। অথচ লকডাউন চলাকালীন সময়ে শ্রমিকদেরকে জীবনের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়ে কল-কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করছে, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। মে দিবসের ইতিহাস রচিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তখনকার শ্রমিকশ্রেণির দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণার যে চিত্র প্রতীয়মান হয়েছিল, আজকের প্রেক্ষাপটেও শ্রমিকশ্রেণি সেই নির্মম শোষণ-পীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত খাটুনি, কম মজুরি ও বিভিন্নভাবে হয়রানি-নির্যাতন চালিয়ে মালিকশ্রেণি শ্রমিক জীবনকে অস্থির করে তুলছে।
মহান মে দিবসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ৮ ঘণ্টা কর্ম দিবসের অধিকার অর্জিত হওয়ার পরেও তা আমাদের দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। শ্রমিকদেরকে নানা অজুহাতে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করানো হয়। শ্রমিকদের জীবনীশক্তি ও উৎপাদন সক্ষমতা রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে যেখানে ৮ ঘণ্টা কর্ম দিবস বাস্তবায়ন করা জরুরি, সেখানে সরকার সম্প্রতি বাংলাদেশ শ্রম আইনের ৩২৪ ধারার ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে ১৭ এপ্রিল ২০২১ থেকে পরবর্তী ছয় মাসের জন্য কর্মঘণ্টা ও ওভারটাইম ভাতা সংক্রান্ত ধারার (১০০, ১০২, ১০৫) প্রয়োগ স্থগিত ঘোষণা করেছে। এর ফলে শ্রমিকরা আগের থেকে আরো বেশি করে শোষণ-বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার হবে। বর্তমান করোনাকালে এই ঘোষণা শ্রমিকদের জীবন আরো বেশি ঝুঁপিূর্ণ ও নিরাপত্তাহীন করে তুলবে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও