ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করে স্কুল-কলেজ- ভার্সিটি খুলে দেওয়া হোক
মোঃ মাকসুদুর রহমান,বরিশাল বিশ্ববিদ্যালঃ বাংলাদেশে ২০২০ এর মার্চ মাসের ৮ তারিখে দেশে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়।এই তথ্য আমরা জেনেছি সরকারের রোগতত্ত্ব,রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট থেকে। এর পর থেকে এক বছরের বেশী সময় ধরে আমাদের জীবন হয়েছে বিপর্যস্ত । শুরুর দিকে মানুষের মাঝে উৎকণ্ঠা, উদ্বেগ ছিলো। ভাইরাস সম্পর্কে তথ্য না থাকায় এবং ওষুধ বা টিকা না থাকায় মানুষের মাঝে গুজবও ছড়িয়েছে। বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ছাড়া আমাদের করণীয় কিছু ছিলো না। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছরের মার্চ মাসের ১৭ তারিখ থেকে সরকারি ভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
তারপর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যার ফলে দেশের শিক্ষা ক্ষেত্র বিশাল ক্ষতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শহরের কিছু কিছু অবিভাবক তাদের সন্তানের পড়াশোনার বেপারে কিছুটা সচেতন হলেও অধিকাংশ বাচ্চাদের পড়াশোনা হচ্ছে না বললেই চলে। কিছু কিছু অবিভাবক বাসায় টিউটর রাখলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাসায় টিউটর নেই। লকডাউনের কারনে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের আয়ের উৎসও বন্ধ হয়ে গেছে।সরকারের পক্ষ থেকে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও গ্রামের শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির সুবিধার আওতায় না থাকায় তাদের পড়াশোনা একদমই হচ্ছে না।
কারণ গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষজন সন্তানকে স্মার্ট ফোন কিনে দেবার সামর্থ্য রাখেন না। শহরের অবিভাবকগণ বাচ্চাদের স্মার্ট ফোন কিনে দিলেও বাচ্চারা স্কুল- কলেজ বন্ধ থাকায় তাদের সময় পার করছে ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেইম খেলে।এতে করে তারা অনলাইন গেইমে আসক্ত হয়ে যাচ্ছেন। তাদের মাথায় এখন আর পড়াশোনা রিলেটেড কিছু নেই বললে ভুল হবে না। তাদের মাথায় এখন শুধু ” এই ধর, মার মার, কিল হিম, এনেমি- এনেমি, হেল্প মি, কিল দ্যা এনেমি” এই শব্দ গুলোই আছে। অনেকে হয়তো ঘুমের ঘরেও এসব বলেন। এতে করে শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ও মানসিক উন্নতি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পড়াশোনা না করেই অটো প্রোমোশন পেয়ে পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত হচ্ছেন। অথচ পুর্বের ক্লাসের পাঠ অজানাই থেকে যাচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মেধার অপচয় হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থা আরও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
এমতাবস্থায় সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সাথে জড়িত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া। এজন্য যা যা করণীয় সবকিছুই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
আমি নিজেও ভুক্তভোগী। আমার জীবন সংকটাপন্ন। চাকরির বয়স শেষ হতে যাচ্ছে। সেশনজট হয়ে হয়তো আরও বেশী সময় ধরে ভোগতে হবে আমাকে৷