এনামুল মবিন(সবুজ,জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর সদর উপজেলায় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ৭ দিনের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী মঙ্গলবার(১৫ জুন) ভোর ৬টা থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।

দিনাজপুর জেলা প্রশাসক ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক খালেদ মোহাম্মদ জাকি’র সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন– জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম (এমপি), ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম।বৈঠকে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিপিএম,পিপিএম (বার) এবং আরো বক্তব্য রাখেন,সিভিল সার্জন ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ আব্দুল কুদ্দুছ, জেলা বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডাঃ বিকে বোসসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।

গতকাল রবিবার(১৩ জুন) রাতের দিকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দিনাজপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি বৈঠকে এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা করোনা প্রতিরোধ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মঙ্গলবার(১৫জুন) ভোর ৬টা থেকে দিনাজুপর সদর উপজেলায় সকল ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে এবং সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। এছাড়া মুদিখানা ও কাঁচাবাজার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শহরে শুধু এ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন চলাচল করবে।

এর আগে বিকেলের দিকে সিভিল সার্জন অফিসের এক প্রতিবেদনে গত ৪৮ ঘণ্টায় দিনাজপুরে করোনায় নতুন আরো ৫ জনের মৃত্যুর খবর জানায়। এ নিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আ্রকান্ত হয়ে ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন মৃত ৫ জনের মধ্যে সদর উপজেলাতে ৩ জন ও বিরামপুর উপজেলায় ২ জন রয়েছে। জেলায় চলতি জুন মাসে ১৩ দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর সদর উপজেলায় করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিনাজপুর জেলা সিভিল সার্জন জানায়, আক্রান্তেহার ও মৃত্যুহারে সবচেয়ে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দিনাজপুর সদর উপজেলা। এখন পর্যন্ত দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় যে পরিমাণ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তার অর্ধেকেরও বেশি সদর উপজেলায়। জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৭১ জন, এর মধ্যে শুধু সদর উপজেলাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৭৬ জন। যা শতকরা ৫৭.০৩ শতাংশ। জেলার ১৩টি উপজেলায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এর মধ্যে সদর উপজেলাতেই ৭০ জন। যা শতকরা হিসেবে ৪৮.৯৫ শতাংশ।