ইউরোপের সাথে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত

ফেব্রুয়ারি ০৬ ২০২২, ২২:৫৯

Spread the love

আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ ইউরোপের ক্রেতাদের কেনা তৈরি পোশাক নিতে ইতালি থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে জাহাজ। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রফতানি পণ্য নিয়ে জাহাজটি ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে ইউরোপের সরাসরি সংযোগ তৈরি হতে যাচ্ছে, যা বিশ্ব বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত বলছেন সংশ্লিষ্টরা।শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১টায় এমভি সোঙ্গা চিতা নামে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি-৪ জেটিতে নোঙ্গর করেছে।

বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী ১৪৮ মিটার লম্বা জাহাজটিতে ৪৯৩ বক্সে ৯৪৫ টিইইইউস কনটেইনার আছে। এ জাহাজের ধারণক্ষমতা এক হাজার ১০০ টিইইউস। বাংলাদেশ থেকে কেনা পোশাক নিতে ১৭ জানুয়ারি জাহাজটি ইতালির রেভেনা বন্দর থেকে কনটেইনার জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ‍শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহিঃনোঙ্গরে পৌঁছে। শনিবার জোয়ারের সময় চট্টগ্রাম বন্দরের ক্যাপ্টেন আসিফ আহমেদ জাহাজটিকে জেটিতে নিয়ে আসেন।চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ২৩ ডিসেম্বর ইতালি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। তবে রফতানি পণ্য নেওয়ার জন্য এই প্রথম একটি জাহাজ এসেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম-ইতালি রুট চালু হয়ে গেল। ৭ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে। অর্ডার অনুযায়ী রফতানি পণ্য যাতে ঠিকভাবে জাহাজে তোলা হয় এবং নির্বিঘ্নে যাতে জাহাজটি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা দিতে পারে, সেজন্য আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।’

স্থানীয় শিপিং এজেন্ট রিলায়েন্স শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রাশেদ জানিয়েছেন, ইতালি থেকে আসা জাহাজটিতে ৯৪৫ টিইইউস খালি কনটেইনারের সঙ্গে সাত কনটেইনারভর্তি ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আছে। ৭ ফেব্রুয়ারি ৯৮৩ টিইইউস কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়বে, যার মধ্যে ৯৮ শতাংশই তৈরি পোশাক। ইউরোপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্ডার অনুযায়ী বাংলাদেশে তৈরি পোশাক নিয়ে জাহাজটি ইতালির রেভেনা বন্দরে যাবে।গত অর্থবছরে ৩১ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরি পোশার রফতানি করেছে বাংলাদেশ, যার ৬০ শতাংশই ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী। এ বছরও ইউরোপ থেকে একইভাবে অর্ডার আসছে। দেশের অর্ধশতাধিক পোশাক কারখানায় ইউরোপের অর্ডার অনুযায়ী কাজ চলছে। কিন্তু বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নানা জটিলতায় অর্ডার অনুযায়ী তৈরি পোশাক নির্ধারিত সময়ে ইউরোপে পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছিল।

এ অবস্থায় ইউরোপীয় ক্রেতাদের একটি জোট ঐক্যমতের ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে নিজেরাই রাজি হন বলে জানান বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী।চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান,
‘ইউরোপের সঙ্গে সমুদ্রপথে সরাসরি রুট চালু হওয়ায় সময় এবং ব্যয় দুটোই কমবে। আগে ইউরোপে পণ্য পাঠাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর অথবা মালয়েশিয়ার কেলাং পোর্ট হয়ে পাঠাতে হত। এতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপের বন্দরগুলোতে পণ্য পৌঁছাতে সময় লাগত অন্তঃত ৪২ দিন। সরাসরি পণ্য নেওয়ায় সময় লাগবে মাত্র ১৬ দিন। ব্যয়ও অনেক কমবে।’

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও