রূপগঞ্জ পূর্ব সাবরেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবীতে দলিল লেখকদের কলম বিরতি
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ প্রতিনিধি : বেপরোয়া দূর্নীতি,স্থানীয় দলিল লিখক, দাতা ও গ্রহীতাদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার,নকল পেতে দীর্ঘ সূত্রিতাসহ নানা অনিয়মের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ পূর্ব সাবরেজিস্ট্রার মাইকেল মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহর অপসারণের দাবিতে কলম বিরতি পালন করেছেন দলিল লেখক ও ভেন্ডার সমিতির সদস্যরা। তিন দিন ব্যাপী কলম বিরতির কারণে এবং জমি রেজিস্ট্রি না হওয়ায় ভোগান্তির শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগী জমির দাতা-গ্রহিতারা।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রুপগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিস এলাকায় কর্মসূচির তৃতীয় দিনেও কলমবিরতি পালন করেন তারা।
রূপগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার দলিল লিখক ও ভেন্ডার সমিতির আহবায়ক মুশফিকুর রহমান রিপনের নেতৃত্বে তিন দিনব্যাপী কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করছেন।
এর আগে, ২৪ সেপ্টেম্বর রবিবার দিনব্যাপি এ কর্মসূচি পালন শুরু করেন স্থানীয় দলিল লিখক সমিতির সদস্য ও জমি মালিকরা ।
মিয়াবাড়ি এলাকার আলামিন নামের এক জমির দাতা বলেন, জমি রেজিস্ট্রি করতে এসে দেখি দলিল লেখকরা কলমবিরতি পালন করছেন। তারা দলিল করবেন না। আমার বিশেষ প্রয়োজনে টাকা দরকার দলিল রেজিস্ট্রি না হলে টাকা পাবো কোথায় থেকে।
মর্তুজাবাদ এলাকার রিনা ইসলাম নামের এক গৃহিণী বলেন, জমি ক্রয়ের জন্য দাতাকে টাকা দিয়ে ফেলেছি। এখন দলিল লেখকদের কর্ম বিরতির কারণে রেজিস্ট্রি করতে পারছি না। দাতা যে কোন সময় ঝামেলা করতে পারে বড় চিন্তায় আছি।
পুবেরগাঁও এলাকার আব্দুর সবুর মিয়া বলেন, দুই শতাংশ জমি ক্রয়ের জন্য দাতাকে বায়না দিয়েছি। দাতা বিদেশে চলে যাবে। কর্ম বিরতির কারণে দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারছি না। দাতা বিদেশে চলে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাব।
মুড়াপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী নুরু মিয়া বলেন,
সাবরেজিস্ট্রার এর সঙ্গে দলিল লেখকদের যে ঝামেলা দ্রুত মিটিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম ব্যবস্থা করেন। তা না হলে আমরা জমির মালিকরাও আলাদাভাবে কর্মসূচি করব।
জমির দাতা গ্রহীতাদের এ ধরনের অভিযোগের শেষ নেই।
সাবরেজিস্ট্রার দলিল লিখক ও ভেন্ডার সমিতির আহবায়ক মুশফিকুর রহমান রিপন বলেন, রূপগঞ্জ পূর্ব সাবরেজিস্ট্রার নানা অনিয়মের মাধ্যমে আমাদের জিম্মি করে তুলেছেন।অবিলম্বে তার প্রত্যাহার জরুরী। এই সাবরেজিস্ট্রারকে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আমরা কলম বিরতিসহ আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সাবরেজিস্টার মাইকেল মহিউদ্দিন আব্দুল্লাহ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নতুন ভূমি আইন বাস্তবায়নে দলিল লিখকদের বা জমি মালিকদের আপত্তি থেকে ভুলবুঝাবুঝি হচ্ছে। দলিল লেখকদের সঙ্গে কথা হচ্ছে, দ্রুত ভুল বোঝাবুঝি সমাধান হবে। এছাড়া জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য তো আমি বসে আছি।
জমির দাতা গ্রহীতারা ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, দাতা গ্রহীতারা যদি দলিল লেখকদের দিয়ে দলিল লেখিয়ে নিয়ে না আসে আমার কি করার আছে। দলিল রেজিস্ট্রি করতে আমি তো বসে আছি।