তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ, জরুরীসেবা ৯৯৯ এর ফোনে উদ্ধার করলো পুলিশ

এনামুল মবিন(সবুজ)জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ দিনাজপুর চিরিরবন্দরে বিয়ে দেয়ার কথা বলে প্রেমিক-প্রেমিকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রেমিকাকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার তেলীপুকুর নামক স্থানে নির্মাণাধীন একটি ভবনের পিছনে ঘটেছে। ভিকটিমকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং প্রেমিক মাসুম(২৯) থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
ধর্ষণের স্বীকার কিশোরী চিরিরবন্দর উপজেলার বালুবাড়ি গুচ্ছগ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে এবং প্রেমিক মোঃ মোসাদ্দেকুল হোসেন ওরফে মাসুম পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার মাগুরা গ্রামের সরকারপাড়ার ওছমান আলীর ছেলে।
চিকিৎসাধীন ভিকটিম জানান, মাসুমের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে মাসুম পঞ্চগড় থেকে চিরিরবন্দরে তাদের বাড়িতে আসে এবং প্রেমিক প্রেমিকার মাতাকে তাদের বিয়ের ব্যাপারে জানায়। এ বিয়েতে প্রেমিকার পরিবার সম্মতি না দেয়ায় আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টায় প্রেমিকা তার প্রেমিক মাসুমের হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে চিরিরবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে আসে। পঞ্চগড়ে যাওয়ার কোন ট্রেন না পেয়ে তারা পায়ে হেঁটে উপজেলার ঘুঘুরাতলীর বটগাছের নিচে ইজিবাইকের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। রেলওয়ে স্টেশন থেকে আসার পথে দুইজন ছেলে তাদেরকে অনুসরণ করতে থাকে এবং পিছু নেয়। ঘুঘুরাতলীতে আনুমানিক রাত ১০টার দিকে পিছু নেয়া ওই দুইটি ছেলে তাদের গন্তব্যের কথা জানতে চায়। ওই দুইজনের মধ্যে একজন হলেন মবিন (২০)। ঘটনাস্থলে ওই দুইজনের সাথে মুখে মাস্কপড়া আরো ৩ জন যোগ দেন। তাদের কথা শুনে মবিন বলেন, তোমরা পালিয়ে যাচ্ছ কেন? তোমরা যদি বিয়ে করবে তাহলে আমরা তোমাদেরকে বিয়ে দিয়ে দেব। এখানে আমাদের সভাপতির ছেলে আছে। আমরা বিষয়টি উনাকে জানিয়েছি। তোমরা চলো আমাদের সাথে।
এসময় ভিকটিম তাদেরকে জানান, ভাইয়া আমরাতো বিয়ে ম্যানেজ করেই ফেলেছি। আমরা নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারি। আপনারা তো আইনের লোক না। আমাদেরকে কী হেল্প করবেন। একথা শুনে তাদেরকে মারপিট করে জোরপূর্বক একটি রিকশাভ্যানে তুলে নেন এবং প্রেমিকার মুঠোফোন কেড়ে নেন। পরে তাদেরকে এলএসডি গোডাউন সংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যান। সেখানে তাদেরকে মারপিট শুরু করে প্রেমিক মাসুমকে অন্যত্র নিয়ে যান এবং ভিকটিমকে ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান। এসময় তাদের ধস্তাধস্তিতে ভিকটিম নিচে ধানক্ষেতে পড়ে যান এবং তার পা ফ্র্যাকচার হয়ে যায়। এসময় তারা সবাই নেমে ধানক্ষেতে পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। প্রেমিক মাসুম এ ঘটনাটি জরুরী সেবা-৯৯৯ এ ফোন দিয়ে জানায়। পুলিশ আনুমানিক রাত আড়াইটায় ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিম ও তার প্রেমিককে উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের বোন সালমা আকতার বাদী হয়ে গত ১৫ নভেম্বর বুধবার ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধিত-২০২০ এর ৭/৯(৩)/৩০ ধারায় ৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৬, তারিখ: ১৫/১১/২০২৩ খ্রি.।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিরিরবন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ বজলুর রশিদ বলেন, ৯৯৯ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়ের বোন সালমা আক্তার বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার সাথে যুক্তদের শনাক্তপূর্বক গ্রেপ্তারের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।