চিরিরবন্দরে চার রঙ্গের ফুলকপির বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে সাফল্যের হাসি
এনামুল মবিন(সবুজ)জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় রঙিন ফুলকপির বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের নশরতপুর গ্রামের কাজিপাড়ার মৃত জরিপউদ্দিনের ছেলে কৃষক মতিয়ার রহমান। তিনি বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সবজি চাষ করে থাকেন যেমন বেগুন, পেঁপে, ফুলকপি, স্কোয়াশ, ওলকপি, মরিচ, কলা চাষ করেছেন।
এ বছর তিনি নতুন জাতের রঙিন ফুলকপি চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে আশানুরুপ। তিনি দেড় বিঘা জমিতে নতুন জাতের রঙিন ফুলকপিসহ ব্রকলি চাষ করেছেন। পেয়েছেন সাফল্যও।
কৃষক মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, টিভিতে রঙিন কপির ছবি দেখে তা চাষের প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এ জন্য আমি সৈয়দপুর, দিনাজপুর, বীরগঞ্জ, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে রঙিন কপির বীজ কিংবা চারার জন্যে হন্যে হয়ে ঘুরেছি। কিন্তু রঙিন কপির বীজ বা চারার সন্ধান কোথাও পাইনি। একপর্যায়ে সিনজেন্টা কোম্পানির জনৈক প্রতিনিধি প্যাকেট ছাড়াই বেগুনি রঙের ভেলেনটিনা ও কমলা রঙের কেরটিনা জাতের রঙিন কপির বীজ সরবরাহ করি। আমি এসব বীজের চারাসহ ব্রকলি, ফুলকপির চারা করে দেড় বিঘা জমিতে রোপণ করি। এতে আমার অন্তত ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ক্ষেতে কোনো প্রকার কীটনাশক ও সার প্রয়োগ না করে কেবল জৈব সার ব্যবহার করেছি । চারা রোপণের ৭০-৭৫ দিনের মধ্যেই গাছে ফুল আসা শুরু করে। বর্তমানে এসব কপি বিক্রি হতে শুরু হয়েছে। বাজারে ক্রেতাদের রঙিন কপির প্রতি বেশ আগ্রহ থাকায় দামও ভালো পাচ্ছি। বাজারে সাধারণ ফুলকপি ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর রঙিন ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নেয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব রঙিন কপি। এ জমি থেকে ১ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। আমি অল্প জমিতে ৪ রঙ্গের ফুলকপি চাষ করে দ্বিগুণ লাভের আশা করছি। আমার এ সাফল্য দেখে অনেকেই রঙিন কপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
এলাকার রফিকুল ইসলাম, ছাবেরউদ্দিন জানান, আমাদের এলাকায় মতিয়ারের আগে কেউ রঙিন ফুলকপি চাষ করেননি। তাই রঙিন কপির ক্ষেত দেখতে এসে ছবি তুলে নিলাম বাড়িতে দেখানোর জন্য।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চিরিরবন্দর উপজেলায় প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে বিভিন্ন উচ্চ মূল্যের সবজি যেমন স্কোয়াশ, ক্যাপসিকাম, রঙিন ফুলকপি, রঙিন বাঁধাকপি, ব্রকলি আবাদ প্রদর্শনী কৃষকদের প্রদান করা হয়েছে। রঙিন ফুলকপিতে সাদা ফুলকপির তুলনায় অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে। রঙিন ফুলকপির বাজার মূল্য সাদা ফুলকপির তুলনায় অনেক বেশি। রঙিন ফুলকপির আবাদ সম্প্রসারিত হলে কৃষকরা নিঃসন্দেহে লাভবান হবেন।