চিরিরবন্দরে ভুট্টার বাম্পার ফলনে মুখে হাসির ঝিলিক ভুট্টা চাষিদের

মে ১০ ২০২৪, ১৮:২৯

Spread the love

এনামুল মবিন(সবুজ),জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ দিনাজপুর চিরিরবন্দরে চলতি মৌসুমে ভুট্টা চাষে বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন কৃষকরা। ধান চাষের পাশাপাশি ভুট্টা চাষে স্বল্প খরচ এবং অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় এ উপজেলার অধিকাংশ কৃষক ঝুঁকছেন ভুট্টা চাষে। ভুট্টার বাম্পার ফলনে মুখে হাসির ঝিলিক ভুট্টা চাষিদের।

মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগী ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা গাছের পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, ফলে একদিকে যেমন কৃষক তার গবাদি পশু পালন ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে অপরদিকে বাজারে ভুট্রার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক এ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে চিরিরবন্দর উপজেলায় ৩,২৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১১.৬৫ মেট্রিক টন।

সরেজমিনে সোমবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃত ফসলের মাঠে জমি থেকে ভুট্টা ভাঙতে ব্যস্ত চাষি ও শ্রমিক। নানা বয়সী নারী-পুরুষ গাছ থেকে ভুট্টা ভাঙছেন। কেউবা ভুট্টার খোসা ছড়িয়ে বস্তায় ভরছেন। বস্তায় ভর্তি এসব ভুট্টা জমি থেকে চলে যাচ্ছে চাতালে অথবা কৃষকের বাড়ির আঙিনায়।

কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ দাম পাওয়ার পাশাপাশি ভুট্টা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না কৃষককে। খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা এবং বিভিন্ন কোম্পানি সরাসরি কৃষকের কাছে থেকে ভুট্টা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে কাঁচা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে। অপরদিকে শুকনা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত।

উপজেলার ৩নং ফতেজংপুর ইউনিয়নের ভুট্টা চাষী ফজলুল হক বলেন, প্রায় ১ একর জমিতে আমি ভুট্টার আবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও রাসায়নিক সার দিয়েছে। প্রতি শতাংশে ১ মণ ভুট্টা উৎপাদিত হবে। আশা করছি ভুট্টা বিক্রি করে অনেক লাভবান হবেন।

১২নং আলোকডিহি ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি এ বছর প্রথমবারের মতো ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। গত বছরে ধান চাষ করেছিলাম, তেমন লাভবান হতে পারি নাই। তাই অধিক লাভের আশায় এ বছর ভুট্টা চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবং কোনো প্রকার রোগবালাই নেই, আশা করছি ভালো দামে ভুট্টা বিক্রি করতে পারব।

১নং নশরতপুর ইউপির মিলন চন্দ্র রায় বলেন, প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে ভুট্টা আবাদ করেছি। এ জন্য খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার টাকা। গম ও বোরো ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে পানি কম লাগে। এতে খরচও কম হয়। এবার ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। অধিক লাভের আশায় উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভুট্টার চাষ। স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদনকারী ফসল ভুট্টা। দেশে ভুট্টার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি পোলট্রি, ডেইরি ও ফিশ ফিড হিসেবেও এর চাহিদা প্রচুর। এবার অনুকূল আবহাওয়া এবং ভুট্টা চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ রাসায়নিক সার উন্নত জাতের বীজ ও কৃষি বিভাগের সঠিক সময় প্রণোদনা সরবরাহসহ সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করায় উপজেলায় ভুট্টার বাম্পার ফলন অর্জিত হয়েছে।

 

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও