ঈদকে সামনে রেখে চিরিরবন্দরে চাহিদার বেশি কোরবানির পশু

এনামুল মবিন(সবুজ),জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুরঃ আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দিনাজপুর চিরিরবন্দরের খামারিরা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরুর পরিচর্যায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোরবানির ঈদে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৬ হাজার ১৬৭টি খামারে ৩৯ হাজার ৫৫টি পশু থাকলেও কোরবানির জন্য চাহিদা রযেছে ২৮ হাজার ৫৩৩টি গরু। চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত ১৮ হাজার ১১টি কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে উপজেলার চাহিদা মিটিয়েও খামারিরা বাড়তি পশু জেলার বাইরে বিক্রি করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ৬ হাজার ১৬৭টি ছোট-বড় খামার রয়েছে। খামারগুলোতে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হচ্ছে। আগামী ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলায় ইতিমধ্যে কোরবানিযোগ্য ৩৯ হাজার ৫৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। উপজেলায় এবার ২৮ হাজার ৫৩৩টি কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে। ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চাহিদা মিটিয়েও খামারিরা জেলার বাইরে গরু বিক্রি করবেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানায়, উপজেলায় কোরবানির পশু বিক্রির জন্য বিভিন্ন স্থানে ৪টি হাট বসবে। প্রতিটি হাটে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে ২টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। কোনো হাটে কোরবানির পশু অসুস্থ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রকার সেবা দেয়া হবে। যদি কোনো পশু ট্রাকে উঠানামা করতে বা রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ে সেখানেও ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম পৌঁছে দায়িত্ব পালন করবে। প্রতিটি হাটে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যাতে খামারি ও পশুর মালিকরা বিক্রিকৃত পশুর টাকা নিয়ে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন। কয়েকজন খামারি জানান, উপজেলার প্রায় সব খামারেই কোনো প্রকার ক্ষতিকারক ওষুধ প্রয়োগ ছাড়াই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়ে থাকে। অল্প সময়ে গরু মোটাতাজা করতে গরুকে সাধারণত হরমোন, ডেক্সামিথাজল, ডেকাসন, স্টোরয়েড ইত্যাদি জাতীয় বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ ওষুধ খাওয়ানো হয়। এবার খামারিরা নিজস্ব উদ্যোগে এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করেছেন।
উপজেলার নশরতপুর গ্রামের গরু ফার্মের মালিক আলম বলেন, তিনি শখ করে ফার্ম গড়ে তুলেছেন। ফার্ম আস্তে আস্তে বড় হওয়ায় এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে পশু লালন-পালন শুরু করেছেন। এ বছর ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য ১৪০টি গরু মোটাতাজা করে প্রস্তুত করা হয়েছে।
ঈশান এগ্রো ফার্মের মালিক বলেন, এ ফার্ম থেকে প্রতিবছর তাদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত দুই শতাধিকের বেশি গরুগুলো বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে দেয়া হয়। খামারিসহ অনেকেই বলেন, তারা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করে আসছেন। প্রতিবছর ঈদুল আজহায় দেশীয় গরুর চাহিদা বেশি থাকায় তারা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে বড় করা দেশি জাতের গরু বিক্রি করে থাকেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোঃ রায়হান আলী জানান, এবার উপজেলায় ৩৯ হাজার ৫৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। চাহিদার তুলনায় উপজেলায় এবার অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার গরু রয়েছে। উপজেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়েও পশু বাড়তি থাকবে। এ কারণে সিন্ডিকেট তৈরি করে দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ এবার থাকছে না।