বাণিজ্য মেলায় কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ ৪৫ টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে

জানুয়ারি ১৯ ২০২৩, ১২:৪৫

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৭তম আসরে ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। এবারের মেলায় ৩৩১টি প্রতিষ্ঠান স্টল বরাদ্দ নিলেও নিয়ম মেনে কর দিচ্ছে ২৮৬টি। সে হিসাবে ফাঁকি দিচ্ছে ৪৫টি প্রতিষ্ঠান। এদের অধিকাংশই খাবার দোকান, শিশু পার্কের রাইডসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের নেওয়া স্টল।

ইপিবি সূত্র জানায়, এবারের মেলায় মোট স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে ৪০০টির অধিক হলেও ইপিবি বলছে ৩৩১টি। যার মধ্যে দেশি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ১০টি দেশের ১৭টি স্টল রয়েছে।

মেলার প্রথম চার দিন নাগরদোলায় ওঠার জন্য টিকিটে ৬০ টাকার বিনিময়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট রাইড চড়ানো হতো। কিন্তু একেবারে উল্টো চিত্র দেখা গেল শুক্রবার। ওইদিন নাগরদোলার একই টিকিট ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে ১০০ টাকায় এবং ১০ থেকে ১৫ চক্কর দিয়ে নামিয়ে দেওয়া হয়। মেলায় থাকা বাকি ৮টি রাইডের ক্ষেত্রেও দেখা যায় একই চিত্র। যে টিকিটের মূল্য ছিল ৬০ টাকা, তা বাড়িয়ে করা হয় ১০০ টাকা। আবার ৮০ টাকার টিকিট ছুটির দিনে এসে বিক্রি হয় ১৫০ টাকায়।

মেলায় নাগরদোলার টিকিট বিক্রেতা ফজলুল হক নামের এক ব্যক্তির কাছে দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেলার প্রথম দিকে লোকজন কম থাকায় ৬০ টাকায় টিকিট বিক্রি করেছি কিন্তু ছুটির দিনে লোকজন বেশি হওয়ায় এখন ১০০ টাকা করে বিক্রি করছি। এ দামে টিকিট বিক্রি না করলে ব্যবসা হবে না বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, পূর্বাচলে আগারগাঁওয়ের মতো লোকসমাগম হয় না, ফলে লোকসান গুনতে হচ্ছে।এভাবে প্রতিদিনই মেলায় আসা শিশু-কিশোরদের বায়না পূরণ করতে হচ্ছে মা-বাবাকে। এসব রাইডে চড়ার মূল্য বেশি হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানের আবদার মেটাতে তা মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে দায়িত্বে থাকা লোকজন শিশুদের কম সময় ঘুরানো এবং রাইডের অতিরিক্ত মূল্য রাখছেন বলেই অভিযোগ বেশিরভাগ অভিভাবকের।

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য প্রক্রিয়া করা এবং মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অভিযোগ জানতে পেরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গত শুক্রবার অভিযান পরিচালনা করে।

অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা এ অভিযানে অভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানার পাশাপাশি তাদের সতর্ক করেছেন।

এ ব্যাপারে অধিদপ্তর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের নিয়মিত কার্যক্রম হিসেবে বাণিজ্য মেলায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং কর্তৃপক্ষকে স্বয়ংক্রিয় বারকোড বা কিউআর কোড স্ক্যানার ব্যবহার বাড়ানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, আমরা ৩৩১টি স্টলের বরাদ্দ দিয়েছি। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মেলায় কিছুটা সমস্যা হলেও বর্তমানে সেই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা আশানুরূপ সাড়া পাব বলে আশা করছি।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারি একটি প্রতিষ্ঠানকে এক হাজার টাকা, ৯ জানুয়ারি পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা, ১০ জানুয়ারি দুটি প্রতিষ্ঠানকে সাত হাজার টাকা, ১১ জানুয়ারি দুটি প্রতিষ্ঠানকে চার হাজার টাকা, ১৩ জানুয়ারি চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।###

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও