রূপগঞ্জে চোখ উঠার প্রকোপে ফার্মেসীতে ড্রপের সঙ্কট প্রকট

সেপ্টেম্বর ২৪ ২০২২, ২৩:৩২

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ : পরিবারের অনেকেরই চোখ উঠেছে, তাই অন্য একটি কক্ষে আলাদা রেখেছেন এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজন দাসকে। ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে আলাদা সবকিছু। তারপরেও চোখ উঠে গেছে।

একই ভাবে চোখ উঠেছে কান্দাপাড়া রুবেল সিকদারের। তাঁর চোখ উঠার পরে পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে রোগটি।

শুধু রুবেল কিংবা রাজন দাসের পরিবারই নয়, গত কয়েক দিয়ে রূপগঞ্জে চোখ উঠার প্রকোপ বেড়েছে ভয়াবহ ভাবে।
কায়েতপাড়া বাজারের ওষুদ ব্যবসায়ী ডিপু জানান, দোকানের অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ শেষ হয়ে গেছে। কোম্পানীর কাছে অর্ডার করেও পাচ্ছি না। তাই সকাল থেকে অন্তত ১০ জন অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ প্রত্যাশিকে ড্রপ দিতে পারি নি। এখন ঘরে ঘরে এই সমস্যা চলছে।

ঊান্টিঁ এলাকার হোসাইন নামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁর ঘরেও ২ সদস্যের চোখ উঠা রোগ হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে আমারও হবে।
‘চোখ উঠা’ নামে রোগটি পরিচিতি হলেও এই রোগের নাম কনজাংটিভাইটিস। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।

কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা, খচখচ করা বা অস্বস্তি। প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে। আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়।

ওƒপসী এলাকার আরিফ হোসেন বলেন, কি যে করি বুঝতে পারতেছিনা। একে একে পরিবারের সবার চোখ ওঠেছে। শিক্ষার্থী লেকাপড়া বন্ধ করে বাসায় বসে আছে। ফার্মেসীগুলোতে চোখের ড্রপের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বেশি দামেও ড্রপ পাওয়া যাচ্ছে না।
নগরপাড়া বাজারের বিজয় ফার্মেসীর বিজয় সরকার বলেন, হঠাৎ করেই ড্রপের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাপ্লাই কমে গেছে। আগে এক মাসেও এক হালি ড্রপ বিক্রি হত না। চোখ ওঠা রোগ শুরু হওয়ার পর এর চাহিদা প্রচুর বেড়ে যায়। তাই সাপ্লাইয়ে সমস্যা হচ্ছে। এটা ঠিক হয়ে যাবে।

রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সেও ডা. আইবী ফেরদৌস জানান, এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতন হতে হবে। কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য বস্তু যেমন রুমাল, তোয়ালে, বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে অন্যরাও এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়।

আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হয়। এই রোগ হলে কোনো কারণে চোখ ভেজা থাকলে চোখ টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে নিতে হবে। ব্যবহারের পর টিস্যু পেপারটি অবশ্যই ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিতে হবে। নইলে ব্যবহার করা টিস্যু পেপার থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। চোখ উঠলে চশমার ব্যবহার করুন। এতে চোখে স্পর্শ করা কমবে এবং ধুলাবালু, ধোঁয়া থেকে চোখ রক্ষা পাবে। আলোয় অস্বস্তিও কমবে। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।

তিনি আরো বলেন, হঠাৎ করেই রোগটা বেড়ে গেছে তো তাই ড্রপের যোগান পেতে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া কিছু ফার্মেসীওয়ালারাও কৃত্রিম সঙ্কটের জন্য দায়ী হতে পারে। তবে এ সমস্যা স্থায়ী হবে না। দু এক দিনের মধ্যেই ড্রপের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।####

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও