ঋণ শোধ করতে না পারায় মেয়েসহ মমতাজকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন

ফেব্রুয়ারি ১২ ২০২১, ১৩:৪৪

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃঋণ পরিশোধ করতে না পারায় এক পাওনাদার ও তার লোকজন বিধবা মমতাজ বেগম ও তার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে ।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। ঘটনার পর জড়িতরা পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে মমতাজ বেগম বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে মমতাজ বেগম বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় ৭ জনের নামে মামলা করেছেন।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন জানান, ভিক্টিমরা হলেন কালিয়াকৈর উপজেলার সিরাজপুর এলাকার মৃত আব্দুর রশিদের স্ত্রী মমতাজ বেগম (৩০) ও তার মেয়ে মাহবুবা আক্তার ঝুমা (১৬)।খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাদের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা একটি অভিযোগ দিয়েছে, সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

সংসারের অভাব-অনটন থেকে মুক্তি পেতে বিধবা মমতাজ সম্প্রতি এক ‘জিনের বাদশা’র খপ্পরে পড়েন। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে দেবে এমন প্রতিশ্রুতিতে জিনের বাদশা তার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।

জিনের বাদশার ওই টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু নির্ধারিত ওই টাকা পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। টাকা ফেরত দেয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম এক মাসের সময় দিয়েছেন।

ঝুমা মনিপুর আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। মমতাজ একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গত ৫ বছর আগে মমতাজ বেগমের স্বামী আব্দুর রশিদ মারা যান। এরপর মমতাজ বেগম তার একমাত্র মেয়ে ঝুমাকে নিয়ে বনের জমিতে বসবাস করে আসছেন। তিনি পোশাক কারখানায় কাজ করে অনেক কষ্টে তার মেয়ে ঝুমাকে লেখাপড়া করিয়ে আসছেন। নানা অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোরকমে তাদের সংসার চলছে।

মমতাজ বলেন, আমি ওই টাকা ফেরত দেবো। কিন্তু ওই সময় শেষ হওয়ার আগেই তারা বৃহস্পতিবার আমার বাড়ি ঘেরাও করে আমাকে ও আমার মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল গফুর জানান, তাদের টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাউকে বাঁধা বা মারধোর করা হয়নি। তাদের অভিযোগ মিথ্যা।

ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম সিকদার জানান, ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক।

 

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও