হাতীবান্ধায় মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দাবীকারী নজিমা দত্তক মেয়ে, দাবী বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের

এপ্রিল ১০ ২০২১, ১২:২৩

Spread the love

লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা উত্তলনের জন্য নজিমা বেগম নামে এক দত্তক মেয়ে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার নিজ মেয়ে দাবি করে ইউএনও’র নিকট মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। নজিমা বেগমের বাবা না থাকায় ছোট বেলা থেকে ওই মুক্তিযোদ্ধা নিজের মেয়ে মনে করেই লালন পালন করে বড় করেছেন তবে সে নিজের মেয়ে নয়, পালিত মেয়ে বলে দাবী করেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও সন্তানরা।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) এ ঘটনায় ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ফরিজোন নেসা ওই নারীর বিরুদ্ধে উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সামিউল আমিনের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন।

মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী ও ৪ ছেলেকে নিয়ে সেখানে তিনি বসবাস করতেন। এছাড়া তিনি ভুমি অফিসে কর্মরত ছিলেন।

জানাগেছে, উপজেলার সিংগীমারী গ্রামে বসবাস করতেন স্ত্রী ও চার ছেলেকে নিয়ে। তবে তাদের কোন মেয়ে সন্তান না থাকায় ছোট বেলায় বাবা হারা নজিমাকে নিয়ে নিজের মেয়ের মতই লালন পালন করে বড় করে তুলেন। এমবস্থায় গত ১২ মার্চ না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক। তিনি মারা যাওয়ার পর নজিমা বেগম তার গর্ভ ধারনী মাকে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও নিজেকে আপন মেয়ে দাবী করে ভাতা উত্তোলনের চেষ্টা করেন। তবে এতে বাধা দেন ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সন্তানরা।

এ নিয়ে নজিমা বেগম তার মাকে ও নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার নিজ স্ত্রী-সন্তান বলে অস্বীকৃতি ও ভাতা উত্তোলনে বাধা প্রদানের অভিযোগ তুলেন ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী ও সন্তানদের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হকের স্ত্রী ফরিজোন নেসা বলেন, খুব কষ্ট হয়, যখন ভাবি যাকে আমরা নিজের মেয়ের মতই লালন পালন করে বড় করেছি। সেই মেয়ে নাকি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। আর আমার স্বামী যদি আমার অজান্তেও কখনো বিয়ে করতো। সেটা কি আদৌও জানতাম না। এতদিন সংসার করেছি কোন না কোন ভাবে জানতাম। আর সে যদি আমার স্বামীর বিয়ে করা স্ত্রীর মেয়ে হতো তাতে আমার আপত্তি থাকবে কেন। এ নিয়ে তাদের কাছে প্রমান চাইলে তারা কোন প্রকার প্রমাণ দিতে পারেনি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। যদি কোন ভাবে প্রমাণ হয় যে তার মা আমার স্বামীর বিবাহিত স্ত্রী ও সে নিজ সন্তান। তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই।

এ বিষয়ে জানতে নজিমা বেগম বলেন, আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। আমি ওনার দত্তক মেয়ে নই। আমার মা ছিলো ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী। যখন মায়ের সাথে বিয়ে হয়েছিলো তখনকার সব ধরনের প্রমাণ আমার কাছে আছে। এরপরেও তারা আমাকে বোন হিসেবে অস্বীকৃতি জানায়। বাবা বেচে থাকতে এ বিষয় গুলো নিয়ে কথা বলে সমাধান করেন নাই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে নজিমা বলেন, বাবা বলোছিলো কোন সমস্যা হবে না। নজিমা বেগম তার মায়ের বাড়ি বাউড়া এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেই ফোনটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের সেলফোনে কল করা হলে কলটি রিসিভ হয়নি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল আমিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কোন লিখিত ভাবে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ দিলে খোঁজ খবর নিয়ে সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও