আটা, রঙ,নিম্ন মানের চিনি, মিসরির গুড়া ও হাইড্রোজ মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে আখের গুড়

মে ০১ ২০২১, ১২:১০

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃ অর্থলোভী, পিশাচ শ্রেনীর মুনাফাখোর অসাধু ব্যবসায়ীরা সুস্বাদু গুড়ের ব্যাপক চাহিদাকে পুঁজি করে আটা, রঙ,নিম্নমানের চিনি, পরিত্যক্ত মিসরির গুড়া, সোডাসহ নানা ক্যামিকেল ও পারফিউম মিশিয়ে ভেজাল আখের বাটালি গুর তৈরি করে এরপর ওই গুড়ে হাইড্রোজ ও ফিটকারি মিশিয়ে গুড়ের রং উজ্জ্বল করা হচ্ছে।তা অবাধে কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বাজারজাত করছে। এর ফলে এসব ক্যামিকেল মেশানো ভেজাল গুড় এখন চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের সর্বত্র।

একাধিক অভিযোগে উঠে আসে, কেরানীগঞ্জ উপজেলার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের রনজিৎ কুন্ড ও তার ছেলে পলাশ কুন্ড নিজ বাড়িতে গুড় তৈরি করার জন্য মিনি কারখানা করেছে। প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত কর্মচারী দিয়ে নিম্নমানের চিনি,পরিত্যক্ত মিসরির গুড়া,পুরাতন চিটাগুড়, হাইড্রোজ ও গুড়ের মতো বিশেষ রং দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করছে এবং পরদিন সকালে ট্রাকভর্তি করে তা বাজারজাত করে।যা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এলাকাবাসী নিষেধ করা সত্ত্বেও চালিয়ে যাচ্ছে এ ব্যবসা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গুড়ের চেয়ে নিম্নমানের চিনি, পরিত্যক্ত মিসরির গুড়া দাম কম হওয়ায় তা মিশে তৈরি হচ্ছে গুড়। এরপর ওই গুড়ে হাইড্রোজ ও ফিটকারি মিশিয়ে গুড়ের রং উজ্জ্বল করা হচ্ছে।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫৫ টাকা। অপরদিকে প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা দরে। সে হিসেবে নিম্নমানের চিনির সাথে অখাদ্য মিসিয়ে এ অসাধু ব্যবসায়ি প্রতি কেজি গুড়ে প্রায় ৬০-৭০ টাকার বেশি লাভ কর‌ছেন।

রনজিৎ কুন্ডর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, উপজেলার থেকে অনুমোদন নিয়েই তিনি এ গুড়ের কারখানা চালাচ্ছেন। ভেজালের কথার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিনি মিশ্রিত গুড় শক্ত এবং কেমিক্যালের কারণে উজ্জ্বল হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান ব‌লেন, চিটাগুড়, আটা, রঙ, চিনিসহ নানা ক্যামিকেল ও পারফিউম মিশিয়ে জাল দিলে সেটি বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে। আর এই চিনি মিশ্রিত ভেজাল গুড় দিয়ে কোনো খাদ্যদ্রব্য তৈরি করে খেলে পেটের পীড়াজনিত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ওই গুড় দিয়ে শিশুদের কোনো খাদ্য তৈরি করে খাওয়ালে শিশুরা লিভার ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

এ‌ বিষ‌য়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত দেবনাথ ব‌লেন, গুড় তৈরি করার জন্য কোন কারখানা অনুমোদন দেয়া হয়নি। কারো বিরুদ্ধে ভেজাল গুড় তৈরির অভিযোগ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ‌্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও