রূপগঞ্জে লড়াই হবে ত্রিমুখী

জানুয়ারি ০৫ ২০২৪, ০০:৩৩

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ আজই শেষ হচ্ছে প্রচার পপ্রচারণা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এসেছে। প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণাও প্রায় শেষের পথে। নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে তুমুল লড়াইটা হতে যাচ্ছে রূপগঞ্জের আসনে। গত কয়দিনে ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা তার প্রমাণ দিচ্ছে বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাধা, প্রার্থীর সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, কর্মীদের মারধর, নির্বাচনী ক্যাম্প এ হামলাসহ বেশ কিছু ঘটনা উঠে এসেছে গণমাধ্যমে।

এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি প্রেরণের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহীনির দুই কর্মকর্তার উপরও অভিযোগ আনা হয়েছে। এর উপর প্রার্থীদের একে অপরের উপর কাদা ছোড়াছুড়ি উত্তেজনার মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই সকল ঘটনা একটি সত্য নিশ্চিত করেছে-নারায়ণগঞ্জের আসল লড়াইটা এবার রূপগঞ্জেই, এমনটাই বলছেন রাজনীতিবিদরা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জ আসন অর্থাৎ রূপগঞ্জে প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন ৯ জন। এতে দলীয় মনোনয়নে ৫ জন এবং স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়েছেন ৪ জন প্রার্থী। এ আসনে প্রার্থী ৯ জন হলেও পুরো নারায়ণগঞ্জ জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে আছেন ৩ জন।

একজন হলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (নৌকা প্রতীক)। অপরজন হলেন তৃণমূল বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, দলটির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার (সোনালী আঁশ প্রতীক)। আরেকজন হলেন স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানো, রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভূঁইয়া। রূপগঞ্জ আসনে গত ১৫ বছর যাবৎ সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। ‘০৮, ‘১৪, ‘১৮ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকেই আসনের জন্য লড়াই করেছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে এমপি হিসেবে আছেন বলে রূপগঞ্জে উন্নয়নের কোমল হাওয়া বইছে বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেকদের একাংশ।

তবে গুঞ্জন আছে, রূপগঞ্জে ভূমি দস্যুতার সাথে জড়িতরাই রয়েছেন গাজীর পাশে। নিজের স্বার্থ হাতিয়ে নিতে গাজীর ছায়ায় অবস্থান করছে তারা। এছাড়াও রূপগঞ্জে প্রবীণ ভোটারদের মধ্যে অনেকের অভিযোগ, রূপগঞ্জের উন্নয়নের ধারা শামুকের গতিতে যাচ্ছে এই এমপি গাজীর কারণে। এদিকে দলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পেরে, রূপগঞ্জবাসীর কথা চিন্তা করে স্বতন্ত্র থেকে দাঁড়িয়েছেন রূপগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভূঁইয়া।

প্রার্থীতা পাবার শুরু থেকেই গণমাধ্যমকে এ কথাই জানিয়ে আসছেন তিনি। দলের বিরুদ্ধে নয়, মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করার ইচ্ছে বারংবার প্রকাশ করেছেন এই স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেই সাথে নির্বাচনী প্রচারণার মাঝে গাজীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করেছেন তিনি। অপরদিকে, রূপগঞ্জে এমপি হবার জন্যে দাঁড়িয়েছেন ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে খ্যাত তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। রূপগঞ্জে পৈত্রিক নিবাস থাকায় ও রূপগঞ্জবাসীর সাথে সখ্য গভীর বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এবার একই দলের দুই প্রার্থী থাকায় জয়লাভের পথ সহজ হবে তৈমুরের বলে ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। গণসংযোগকালে তৈমুর নিজেও বলেছেন ‘দলীয় কোন্দলের কারণে আমার পথ সহজ, তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে জয়লাভ সম্ভবপর হবে।’ নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন এই ৩ প্রার্থী। গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনসাধারনের নিকট নির্বাচনী বার্তা পৌঁছানোসহ বিভিন্ন উপায়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এইদিকে, প্রচারণার সময় শেষ হতে চলেছে। শেষমেষ আগামী সপ্তাহের রোববারেই সংঘটিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কে হবেন রূপগঞ্জের এমপি তার উত্তর জনগণ দেবে ভোটের দিন।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও