ভোট ছাড়া নির্বাচন হয়ে সংসদ গঠন সম্ভব হলে পেঁয়াজ ছাড়া রান্নাও সম্ভবঃগয়েশ্বর চন্দ্র রায়

নভেম্বর ১৬ ২০১৯, ১০:১৫

Spread the love
আগমনী ডেস্কঃ জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গতকাল বিকালের এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন,ভোট ছাড়া নির্বাচন হয়ে সংসদ গঠন সম্ভব হলে পেঁয়াজ ছাড়া রান্নাও সম্ভব। বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার স্মরণে এ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম।

পেঁয়াজের দামবৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, পেঁয়াজের দামবৃদ্ধির কারণ সিন্ডিকেটের কারসাজি। বর্তমানে পেঁয়াজের অভাবের চেয়ে পেঁয়াজের সংকটের প্রচার সিন্ডিকেটকে আরও বেশি সুযোগ করে দিয়েছে। কারণ কোনো জিনিসের অভাব হলে তার দাম এমনিতেই বেড়ে যায়।

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখানে যারা উপস্থিত হয়েছেন, বিদ্যালয়ে উপস্থিতির তালিকার মতো করে তাদের নাম বলতে হয়। পত্রিকায় তাদের নাম-ছবি না এলে ক্ষুব্ধ হন। পত্রিকায় নাম না এলে কি আন্দোলন হয় না? এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনলাইন পত্রিকা, এত টেলিভিশন এবং ফেসবুক ছিল না। তাহলে সেই সময় কি আন্দোলন হয়নি? সুতরাং পত্রিকায় নাম ও ছবি আসা, নিজেকে জাহির করার মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আন্দোলনে মনোনিবেশ করতে হবে সবাইকে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার সমালোচনা করে দলটির প্রভাবশালী এ নেতা বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপি সাত দফা দিয়েছিল। এক দফা দাবি দিয়ে যদি খালেদার মুক্তি চাইতাম, তা হলে খালেদার মুক্তি না হয়ে যেত না।

গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচনের ফল যে এমন হবে, এটি আমরা আগে থেকেই জানতাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আমাদের দাওয়াত দেননি। ড. কামাল হোসেন দাওয়াত চেয়েছেন। চেয়ে দাওয়াত নিলে সেখানে অতিথি আপ্যায়নও তেমনি হয়।

বিএনপি আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বিএনপির রাজনীতি হয়ে উঠেছে আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি। আত্মরক্ষামূলক রাজনীতি করে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তার চেয়ে আক্রমণাত্মক রাজনীতি করলে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয় মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, সরকারের ইচ্ছা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আন্দোলন-সংগ্রাম করেই খালেদা জিয়ার মুক্তি অর্জন করতে হবে।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আন্দোলন করে শেখ সাহেবকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) মুক্ত করতে না পারলে তার ফাঁসি হয়ে যেত। জনগণের আন্দোলনের ফলেই তিনি মুক্ত হয়ে আসেন এবং সেসব মামলাও কোথায় গেছে তার কোনো হদিস নেই।

বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা প্রসঙ্গে গয়েশ্বর রায় বলেন, সাদেক হোসেন খোকা একজন আপসহীন নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিএনপি নেতাকর্মী না হয়েও অনেকেই তার কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। সাদেক হোসেন খোকা ঢাকার অনেক রাস্তার নামকরণ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের নামে। শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধার নামে ঢাকার রাস্তার কোনো নামকরণ করা হয়নি। তিনি হলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। হয়তো তিনি ভেবেছিলেন জিয়াউর রহমান নামে তো বিমানবন্দর আছেই। তাই নতুন করে তার নামে আর কোনো রাস্তার নামকরণ করা হয়নি।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাঈদ আহমেদ আসলাম। পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম। বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. মোশারফ হোসেন, সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, তেজগাঁও থানা বিএনপির সহসভাপতি হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও