করোনা উপসর্গে ভর্তি নিল না কেউ, স্ত্রীর কোলে স্বামীর মৃত্যু

জুন ০৬ ২০২০, ১০:৫২

Spread the love
আগমনী ডেস্কঃজ্বরের সাথে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট,করোনাভাইরাসের উপসর্গের স্বামীকে নিয়ে রাজধানীর এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটছেন স্ত্রী রিনা ইসলাম।কোনো হাসপাতালই ভর্তি নিল না। অবশেষে ছটফট করতে করতে স্ত্রীর কোলে মৃত্যুবরণ করলেন স্বামী নুর আল আহাদ।

পলাশ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করেই আহাদের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাত ১০টার দিকে প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, এই রোগীর আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। কিন্তু বর্তমানে এখানকার আইসিইউ খালি নেই। তাকে আইসিইউ সাপোর্ট রয়েছে এমন কোনো হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করান। এরপর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আহাদকে।

এভাবে দীর্ঘ তিন-চার ঘণ্টা স্বামীকে নিয়ে স্ত্রী রিনা ছুটে বেড়ান। কিন্তু উপসর্গ জেনে ঢাকার কোনো হাসপাতালই ভর্তি নেয়নি আহাদকে। কোনো হাসপাতালে তাকে ভর্তি কোতে না পেরে পুনরায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসে। রাত দেড়টার দিকে ছটফট করতে করতে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নুর আল আহাদ। মৃত্যুর পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার নমুনা সংগ্রহ করে।

পলাশ বলেন, আমার ভাইকে যদি হাসপাতালে ভর্তি করা যেত তা হলে হয়তো তাকে বাঁচানো সম্ভব হতো। কিন্তু উপসর্গ জেনে কোনো হাসপাতাল তাকে ভর্তি নেয়নি। অসহায়ের মতো চোখের সামনে বিনা চিকিৎসায় যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে ভাইকে মরতে দেখলাম।

তিনি আরো জানান, গত বছর ঢাকায় থাকা অবস্থায় আহাদ ডেংগুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর থেকে তিনি মাঝে মাঝেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তাই এবার জ্বর আশায় তারা ভেবেছিলেন স্বাভাবিক সিজোনাল জ্বর। তাই অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

কুষ্টিয়ার খোকসার একতারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শহীদুল ইসলাম বিশ্বাস ও নুর নাহার দম্পতির একমাত্র সন্তান নুর আল আহাদ (৩২)। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকা থেকে আহাদের লাশ কুষ্টিয়ার খোকসার একতারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়। উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো কর্মকর্তা ছাড়াই দু’জন পুলিশ সদস্য এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতিতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জানাজা নামাজ শেষে বহরামপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় আহাদকে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও