কয়েক কোটি ভ্যাকসিন আমদানি হলেও তা সাধারণ মানুষ পাবে কিনা সন্দেহঃমোশাররফ

জানুয়ারি ০৬ ২০২১, ২১:১০

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন,’ভ্যাকসিন কিনতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর মাধ্যমে ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজের দাম প্রায় দ্বিগুণ পড়বে। সরাসরি চুক্তি হলে শত শত কোটি টাকার সাশ্রয় হতো। যদি কয়েক কোটি ভ্যাকসিন আমদানিও হয় তা সাধারণ মানুষ আদৌ সে ভ্যাকসিন পাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’

বুধবার (৬ জানুয়ারি) গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই আহ্বান জানান।

মোশাররফ বলেন, ‘বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় থাকায় জনগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই। তাদের অদূরদর্শিদতা ও লুটপাটনীতির কারণেই ভ্যাকসিন নিয়ে আজ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে অবিলম্বে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, মূল্য, সংরক্ষণ এবং বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য জনগণের সামনে উপস্থাপনের জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।’

বিকল্প উৎস হিসেবে কোন দেশ থেকে ভ্যাকসিন আনার কথা বলছেন- প্রশ্ন করা হলে ডঃ খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন সম্পর্কে সবাই ওয়াকিবহাল যে এটা সংরক্ষণে একটায় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি এবং আরেকটায় মাইনাস ২০ ডিগ্রি তাপমাত্রা লাগে। এসব আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য না এবং আমাদের দেশে এসব আনাও সম্ভব হবে না। এছাড়া অন্যান্য দেশ যেমন রাশিয়া স্পুটনিক টাস্ক, চীন সিনো ফার্মার ভ্যাকসিনে অনুমোদন দিয়ে তারা ইতোমধ্যে টিকা দিচ্ছে। অতএব তিন বা চারটি টিকাই এভেইলেবল হবে তা নয়। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কয়েকটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে। তবে তাদের কাছে ৫০টি টিকার ব্যাপারে অ্যাপ্লাই করা আছে। বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষা শেষ হলে তারা অনুমোদন দিচ্ছে। তাই বিকল্প বলতে আমরা যেসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত এবং আমাদের দেশের তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য সেগুলোর কথা বলছি। এখনও পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করা হলে আরও কম দামে আমাদের দেশ টিকা পেতে পারতো। এখনও সুযোগ আছে বলে আমরা সরকারকে বিকল্প উৎস খোঁজার আহ্বান জানাচ্ছি।’

করোনা ভ্যাকসিন বিতরণের জন্যও সরকারের প্রস্তাবিত জেলা, উপজেলা কমিটির মাধ্যমে টিকা সরবরাহ করা হলে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের কাছে এই ভ্যাকসিন যথাযথভাবে পৌঁছাবে না বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা।

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন বিনামূল্যে পাওয়া জনগণের অধিকার। এই অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত না হয় সেজন্য বিএনপি প্রথম থেকে এই ভ্যাকসিন বিনামূল্যে সরবরাহের দাবি জানিয়ে আসছে। জনগণ যাতে এই ভ্যাকসিন সঠিকভাবে পায় সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-উর রশীদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন সম্পর্কে দলের পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের এই কমিটি গঠন করা হয়।

 

 

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও