দুই যুগ ধরে খানাখন্দকে ভরা চনপাড়া-কাঞ্চন সড়কের বেহালদশায় ভোগান্তি চরমে

মে ২৯ ২০২১, ১২:৪৭

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জঃ “কত নেতা, এমপি মন্ত্রী আইলো গেলো, সরকারের পরিবর্তন হল তবুও আমাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হল না। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে রাস্তাটার ব্হোল দশা, আজও মেরামত হল না। শীতলক্ষ্যা নদীতীরের পশ্চিমপাড়ের অধিবাসী আমরা আজও অবহেলিতই রয়ে গেলাম।” চনপাড়া-কাঞ্চন সড়কের বেহালদশা নিয়ে এভাবে ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলেন উপজেলার রূপগঞ্জ সদর এলাকার কুমুর উদ্দিন মিয়া।

চনপাড়া-কাঞ্চন সড়কের মুশুরী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক ভয়ংকর অবস্থায় রূপ নিয়েছে। সড়কে রয়েছে শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ গর্ত। পাথরবাহী লড়ি ও ট্রাক চলাচল কারণে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবী করেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সড়কের এমন চিত্র থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব। বেহাল দশার কারণে স্থানীয় লোকজনের ভোগান্তিও চরমে উঠেছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ডেমরা হতে রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া, রূপগঞ্জ সদর ও দাউদপুর ইউনিয়ন হয়ে গাজীপুরের কালীগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সড়ক। উপজেলা সদর, থানা পুলিশ ও সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লোকজনকে এ সড়ক ব্যবহার করতে হয়। অথচ সড়কটি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে খানাখন্দে ও স্থানে স্থানে ধ্বসে পড়লেও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। রাতের আঁধারে মালবাহী ভারী যান চলাচল করায় সড়কটির মুশুরী থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটারে শতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি আর কাঁদামাটি। তাই যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা।

সরেজমিন ঘুরে আরো দেখা যায়, স্থানে স্থানে খানাখন্দের গর্তে পানি জমে থাকায় ছোট যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে গাড়ীর মালিকরা। সূত্র জানায়, এ সড়কের পাশে ১৫টি বৃহৎ শিল্পকারখানা ও আরো ২০টি ক্ষুদ্র কারখানাসহ ২টি বালু মহাল রয়েছে। এ সড়কটিতে মালবাহী ভারী যান চলাচল করে বেহাল দশায় পরিণত করেছে। ফলে দূর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল হক ঝিনু ভুইয়া বলেন, সড়কগুলো মেরামত না করায় আমরা গতিহীন হয়ে পড়েছি। অথচ এ সড়কটি এখন বন্ধ হয়ে গেলো প্রায়। দু’একটা ভারী যান ছাড়া সাধারন গাড়ী চলাচল কমে গেছে।

স্থানীয় সিএনজি চালক মধুখালী এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, ভাই রাস্তাডা আমাগো ক্ষতি কইরা দিছে। রাস্তা খারাপ থাহনে পেডে ভাত জুটাইবার পারিনা। আগে ৪০০/৫০০ টেকার টিপ মারবার পারতাম। অহন ৫০ টেকার টিপও মারবার পারিনা। মুশুরী এলাকার বাসিন্দা তানভীর আহমেদ ফয়সাল বলেন, এ সড়কে ইটা, বালি ও পাথর বহন করায় এ সড়কটির স্থায়ীত্ব রক্ষা করা যাচ্ছে না। সংস্কার করলেও ৬ মাস না যেতেই ভেঙ্গে যায় এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট। থানার সামনে রাস্তার পাশে ব্যবসা করেন শুক্কুর মিয়া। রাস্তার কথা জানতে চাইলে এক রকম ক্ষেপেই তিনি বলেন, “দুর মিয়া রাস্তার কতা আর কইয়েন না। এইডারে কি রাস্তা কয়? ছোট্ট বেলা থেকে দেখতাছি। কোনো মেরামত নাই। দিন দিন রাস্তা ভয়ঙ্কও হচ্ছে। ুবাংলাদেশে এত উন্নয়ন হয় আর খোদ থানার সামনের এ রাস্তাটা কেউ চোখেই দেখে না। হুদাই উন্নয়ন মুখে মুখে আর ভোটের রাজনীতি। কাজের নামে ঘন্টা।”

রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন ভুইয়া বলেন, এই এলাকার রাস্তা ঘাট হালকা যান চলাচলের জন্য নির্মাণ করলেও স্থানীয় ইটভাটা মালিকদের ইছার মাথা ও ইটাবহনকারী ট্রাক চলাচল করে রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে দেয়। ফলে স্থায়ীভাবে বড় অংকের বরাদ্দ প্রয়োজন। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের পূর্বাচল উপশহর ৪নং সেক্টর পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে ৩ ফুট করে প্রশস্তকরণ কাজ দ্রুত শুরু হবে। যার দাপ্তরিক কাজ চলমান।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও