সীতাকুণ্ডের বার আউলিয়ায় অজ্ঞাত যুবকের লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে, গ্রেপ্তার ৫ 

আগস্ট ১৪ ২০২৩, ১৫:৫১

Spread the love

আনোয়ার হোসেন, বুরো প্রধান চট্টগ্রাম :সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে গত ৩০ জুলাই উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত যুবকের লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। ওই যুবকের নাম সোলাইমান (২২)। সে পেশায় একজন অটোরিক্সা চালক। সে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার সোভাগঞ্জ গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের পুত্র।

অটো রিক্সা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নগরীর কর্নেলহাট এলাকা থেকে ভাড়ায় উঠে তাকে অপহরন করে হত্যা করে লাশ মহাসড়কের পাশে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় আটক ৫ আসামী আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দিয়েছে।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার রহস্য উন্মোচন করেন। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে আটক আসামীরা জানায়, ২৯ জুলাই রাতে শাহাদাৎ, ফরিদ, তানভীর, শাহীন, সাকিব, জাহিদুলসহ ৭জনে মিলে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তারা রাত ১২ টার সময় কর্নেলহাট থেকে এসে খুন হওয়া সোলাইমানের অটোরিক্সাটি ভাটিয়ারী যাবে বলে ৩শত টাকায় ভাড়া নেয়। তানভীর, শাহিন, জাহিদুল অটোরিক্সা যোগে ভাটিয়ারীর উদ্দেশ্য রওনা দেয়। অন্যদিকে পরিকল্পনা মতে ফরিদ, সাকিব, শাহাদাতসহ আরো ১জনকে নিয়ে একটি কাভার্ডভ্যানে করে অটোরিক্সার আগে, আগে ভাটিয়ারীর উদ্দেশ্য রওনা হয়।

ভাটিয়ারীর বিএম গেট এলাকায় আসলে শাহীন, তানভীর অটোরিক্সা চালক সোলাইমানের কাছ থেকে অটোরিক্সাটি নিয়ে সোলাইমানকে কাভার্ডভ্যানের উঠিয়ে দেয়। এসময় কাভার্ডভ্যানে থাকা ফরিদ, শাহাদাৎ, সাকিব সোলাইমানের হাত, পা বেঁধে কাভার্ডভ্যানের কেবিনে রেখে দেয় আর কাভার্ডভ্যানটি অটোরিক্সা নিয়ে চলতে থাকে। আসামীরা বাঁশবাড়িয়া কোট্টা বাজার পর্যন্ত চলে আসে। এসময় কাভার্ডভ্যানে অটোরিক্সাটি তোলার সময় বাজারের নাইট গার্ড আবুল কাশেম ও নাছিরের সন্দেহ হলে আসামীরা অটোরিক্সা ফেলে কাভার্ডভ্যান নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

আসামীদের তথ্য মতে, বাড়বকুন্ড থেকে কাভার্ডভ্যানটি ইউটার্ন করে আবার চট্টগ্রামের দিকে যাওয়ার পথে কাভার্ডভ্যানের মধ্যে থাকা সকল আসামীদের মধ্যে থেকে সোলাইমান ফরিদকে চিনে ফেলে এবং ফরিককে বলে যে, “আমি আর আপনি একই গ্যারেজে রিক্সা রাখি, আমাকে চিনতে পারছেন। আমাকে ছেড়ে দেন” তখনি আসামীরা তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাভার্ডভ্যানের ভিতর বেল্ট দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ বার আউলিয়া এলাকায় মহাসড়কের পাশে ফেলে দেয়।

অপরদিকে গত ১আগষ্ট সন্ধ্যায় সোলাইমান নিখোঁজ মর্মে তার মা আকবরশাহ থানায় ডায়রি করেন। এ বিষয়টি অবগত হয়ে সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ সোলাইমানের পরিবারকে থানায় আসতে বলেন। এসময় লাশের ছবি, পোশাক পরিচ্ছেদ দেখে সোলাইমান বলে সনাক্ত করে তার পরিবার।

ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, গঠিত তদন্ত টিম নিয়ে ভিকটিম সোলাইমানের স্বজনদের সাথে কথা বলে সোলাইমান সর্ম্পকে তথ্য উপাত্ত মোবাইল নম্বর, ভিকটিমের বন্ধু বান্ধবদের সর্ম্পকে খোঁজ খবর নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির আলোকে হত্যার রহস্য উন্মোচনে তদন্ত কাযক্রম শুরু করি। তদন্ত চলাকালীন ভিকটিমের অবস্থান ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত সন্দিগ্ধ হত্যাকারীদের অবস্থান, ঘটনার পূর্ববর্তী, মধ্যেবর্তী এবং পরবর্তী সময় সর্ম্পকে নিরুপন করে আমরা নিশ্চিত হয়ে ৭ আগষ্ট বিকাল থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আকবরশাহ থানা এলাকায় থেকে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। আসামীরা চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২ হত্যা সম্পর্কে স্বীকারোক্তি জবান দেয়।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও