রূপগঞ্জে জমজমাট ইফতারী বাজার তবে দাম বেশী

মার্চ ১৮ ২০২৪, ১৯:৫০

Spread the love

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ : “সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে মুখরোচক খাবার না হলে চলেই না। মুড়ি, পেয়াজু, আলুর চপ বেগুনি, হালিম, খেঁঁজুর, তরমুজ, পেপে, একটু ঠান্ডা সরবত ইফতারিতে না হলে চলে কি করে? কিন্তু বাজারে এগুলো কিনতে গিয়ে চক্ষু চরকগাছ। এত দাম দিয়ে ইফতার সামগ্রি কিনতে গেলে সারা মাস না খেয়ে থাকতে হবে। বাজারে সব কিছুতেই যেন আগুন লেগে আছে। আমাদের মত মধ্যবিত্তদের বাহিরের ইফতারি খাওয়ার আশা গুরেবালি।” এমনি করে কথাগুলো বলছিলেন বেসরকাররি চাকরিজীবি সোহেল খান।

রোজার প্রথম দিন থেকেই ইফতারির বাজার জমজমাট। সকালে আনাগোনা কম থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেলের হাতছানি দিতেই জনসমাগম। বিশেষ করে বাজার, ফলের দোকান ও ইফতারের দোকান গুলোতে বেশী ভির লক্ষ করা যায়। এছাড়া অলিগলি থেকে অভিজাত হোটেল-রেস্টুরেন্টে বসেছে জিলাপি, ছোলা, পেঁয়াজু কাবাবসহ নানা চমকপ্রদ ও স্বাদের খাবারের পসরা। ইফতার জন্য পছন্দের খাবার কিনতে দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন রোজাদারেরা।

উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে নানান মুখোরোচক খাবারের পদে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিকেল গড়াতেই বেচাকেনা শুরু হয়ে ইফতারের আগ পর্যন্ত চলেছে। রোজার প্রথম দিকে সাধারণত বাসাবাড়িতে ইফতার আয়োজন থাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁয় ভিড় থাকে কম। কিন্তু এবার সে দৃশ্যপট ভিন্ন। রোজার প্রথম দিন থেকেই রমরমা ইফতার বাজার। রেস্টুরেন্ট ছাড়াও শহরের আনাচে-কানাচে দোকান ও ফুটপাতে ইফতার বিকিকিনিও বেশ চাঙ্গা।

এসব ইফতারে মধ্যে রয়েছে খাশির রান, গ্রিল চিকেন, বুন্দিয়া, গরুর কালো ভুনা, কাচ্চি, মগজ ভুনা, চিংড়ি বল, পরোটা, লুচি, চিকেন তান্দুরি, চিকেন বটি কবাব, দই চিড়া রেশমি জিলাপি, বোম্বে জিলাপি, রেশমি কাবাব। এছাড়া রয়েছে আলুর চপ, বেগুনের চপ, ছোলা, পেঁয়াজু। তবে এবস খাবারের মধ্যে তেলের ভাজা বিভিন্ন আইটেমের চপের চাহিদা তুলনা মূলক বেশী। পানীয় মধ্যে রয়েছে আখের শরবত, পেস্তা বাদাম শরবত, বেলের শরবত, তরমুজের শরবত, লেবুর শরবত, বিভিন্ন ফলের আইটেম থেকে তৈরী শরবতসহ অসংখ্য পানীয়র আয়োজন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতার হই-হুল্লোড়ে মুখরিত পুরো ইফতার বাজার। চলছে বেচাকেনাও। এখানকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে সুতি কাবাব, জালি কাবাব, টিক্কাসহ প্রায় ১০-১৫ ধরনের কাবার। কাবাবের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে ডিম চপ, পিয়াজু, চুলা কাবাবসহ বিভিন্ন ইফতার সামগ্রী। মিষ্টির মধ্যে বিক্রি হচ্ছে শাহী জিলাপি, মিষ্টি, দইসহ নানা কিছু।

এছাড়া হোটেল-রেস্তোরাঁর পাশাপাশি অলিগলিতেও বসেছে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকানও। সেসব দোকানে ছোলা, বুট, মুড়ি, পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, ডিম চপ, দই বড়া, ডাবলির ঘুঘনি, মিষ্টি, শাহী হালিম, গরু-মুরগি-খাসির হালিম, কাবাব, সবজি পাকোড়া, মাংসের চপের পাশাপাশি অনেকে তাদের নিজস্ব বিশেষ আয়োজন নিয়ে বসেছেন।

বিগত বছরের তুলনায় এবছর মোটামুটি সব ধরণের খাবারের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নিন্মবিত্ত ও মধ্যেবিত্তদের অনেকটা নাগালের বাহিরে বলে মন্তব্য করেছেন একাধিক ক্রেতা।
রোজাদার আরমান মিয়া বলেন, বাহির থেকে ইফতার কিনতে আসছিলাম। কিন্তু এবার ইফতারের এতো দাম যে, মনের মতো কেনাকাটা করতে পারলাম না। অনেক কিছুই বাজেটের মধ্যে থেকে বাদ দিতে হয়েছে। মধ্যেবিত্ত মানুষ এবার ইফতার কিনে খাওয়ার পরিস্থিতিতে নাই।

ব্যবসায়ী বাদল মিয়া জানায়, প্রথম রোজায় বাসায় কোন আয়োজন ছিলো না। দোকান বন্ধ করে বাহির থেকে ইফতার কিনে প্রথম রোজায় পরিবারের সাথে ইফতার করেছিলাম। কিন্তু বাহিরে ইফতার আইটেমের এতো দাম যে কিনে খাওয়ার মতো না। তাছাড়া অধিকাংশ রেস্তোরায় অস্বাস্থ্যকর তেল দিয়ে খাবার তৈরী করছে এতে করে এসব খাবার খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে হবে। প্রশাসনের বিশেষ নজর দেয়ার জন্য অনুরোধ করবো।

একজন চাকরিজীবি জহির মিয়া জানান, রমজানের ইফতার করবো পরিবারের সঙ্গে। তাই একটু আগেভাগেই বাসায় ফিরছি। মুড়াপাড়া বাজার এলাকায় ইফতার কিনতে এসেছেন তিনি। তবে এবারের ইফতারির আইটেমগুলোর দাম একটু বেশি বলে মনে করছেন তিনি। এরপরেও হরেক রকম খাবার কিনেছেন তিনি।

রোজার প্রথম দিনে ফলের প্রতিও মানুষের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। দুপুর থেকেই বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হতে দেখা যায় কলা, বাঙ্গি, তরমুজ, আনারস, আপেল, আ্গুরসহ বিভিন্ন ধরনের খেজুর। ইফতারে খেজুর ও ফলের চাহিদা বেশি থাকায় ফলের দোকানগুলোতে বেশি ভিড় দেখা যায়।#####

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও