গুম-বিচারবর্হিভূত হত্যার তদন্তে জুডিসিয়াল ইনকোয়ারি কমিশন গঠন করা উচিত

আগস্ট ৩১ ২০২০, ১৭:০০

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃআন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে রবিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা ঘটনাবলীর তদন্তে একটি জুডিসিয়াল ইনকোয়ারি কমিশন গঠন করা উচিত। আমরা এসব ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা, আজকে এক লক্ষের উপরে মামলা এবং মারা গেছেন ২৬‘শ উপরে, আর ৬০৩ এর উপরে গুম হয়ে গেছে।এই সব তথ্য ডকুমেন্টেড যারা রিপোর্ট করেছেন তাদের, আনডকুমেন্টেড আরো অনেক আছে। এটা সম্পূর্ণ তথ্য নয়, অনেক তথ্য আছে যেটা আমাদের কাছে নেই।’

আমরা জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কা্ছে দৃষ্টি আকর্ষন করে বলতে চাই, আমরা এসব ঘটনা নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। এজন্য তাদের বাংলাদেশে ‘গুম’ ও বিচারবর্হিভৃত হত্যা ঘটনাবলীর তদন্তে একটি জুডিশিয়াল ইনকুয়ারী কমিশন গঠন করা উচিত।’

২০০৯ সাল থেকে ‘গুম’ হওয়ার ঘটনাসমূহ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্দেশ্যে সংবাদ ব্রিফিং এবং এর খসড়া জাতীয় সংঘের কাছে প্রেরণের কথাও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব।

‘এই ঘটনাগুলো সম্পর্কে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সংবাদ সম্মেলন করে ব্রিফিং করেছি। আমাদের দলীয় প্রধান এর খসড়া জাতিসংঘকে পাঠিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কোনো অ্যাকশন এখন পর্যন্ত নেয়া হয়নি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আজকে এক কঠিন সময় পার করছি। এই সময় আমাদেরকে রক্ষা করবার সময়, এই সময় আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করবার সময়. এই সময় আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবার সময়, আমাদের রক্তের বিনিময় স্বাধীনতাকে রক্ষা করবার সময়।’

‘বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণভাবে একটি গণতন্ত্রহীন, ফ্যাসিবাদী একনায়কতন্ত্র একটা দেশে পরিণত হয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে। নিজেদের মধ্যে ছোট-খাটো বিভেদ ভুলে দিয়ে আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’

তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে প্রফেসর শাহিদুজ্জামান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় তুলে ধরেছেন্। এটা ভালোভাবে তদন্ত হওয়া উচিত। এই ঘটনা গুলোর সাথে বাইরের কোনো দেশ জড়িত কিনা এবং বাইরের কোনো দেশ আমাদের দেশের কোনো নাগরিককে সে যে দলেরই হোক তাদেরকে … যে খবরগুলো এসছে সেই খবরগুলো যদি সত্য হয় যে, তাদেরকে তুলে নিয়ে যায়। এটা অত্যন্ত ভয়াবহ চিত্র।’

‘তাই যদি হয়ে থাকে এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সবই বিপন্ন। আমরা জানি যে, এদেশের মানুষ তারা লড়াই করে স্বাধীনতা এনেছে, তারা লড়াই করে গণতন্ত্র এনেছে এবং লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তারা রক্ষা করবে।’

দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংগ্রাম ও ত্যাগের কথাও তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।

ভার্চ্যুয়াল ওয়েবিনারে বিএনপির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম ও বিচারবর্হিভুত হত্যা ও নিপীড়ন-নির্যাতন সম্বলিত মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান, ১৯৭৪ সালে গুম হওয়া ন্যাপ নেতা আবু বকর জাফর উদ-দৌলা দিপুর বোন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের স্ত্রী অধ্যাপক নার্গিস বেগম, ২০১৭ সালে গুম বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস, ২০১৩ সালে গুম হওয়া ঢাকার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম ও গুম হওয়া লাকসাম পৌরসভার সভাপতি পারভেজ কবির হীরুর স্ত্রী শাহনাজ আখতার।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও