ইউএনও ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরেছে,চিকিৎসকের সাথে কথা বলেছেন

সেপ্টেম্বর ০৪ ২০২০, ১৩:০১

Spread the love

আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক জাহেদ হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে এই তথ্য জানান।

হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক জাহেদ হোসেন বলেন, অস্ত্রোপচারের সময় ওয়াহিদা খানমের মাথায় কমপক্ষে ৯টি আঘাতের ক্ষত দেখা গেছে। মাথার খুলির যে হাড়টি ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল, সেটি অস্ত্রোপচারের সময় বের করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ওয়াহিদা খানমের আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার হয়। এই অস্ত্রোপচারে অংশ নেন ছয়জন চিকিৎসক। সঙ্গে ছিলেন একজন অবেদনবিদ।

নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক বদরুল আলম গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে  জানান, এখন তিনি পর্যবেক্ষণে আছেন।

গতকাল বেলা তিনটার কিছু পরে ওয়াহিদাকে নিউরোসায়েন্সেস হসপিটালে আনা হয়। তাঁর চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছে। হাসপাতালের পরিচালক দীন মোহাম্মদ জানান, ওয়াহিদার মাথার আঘাত অনেক জটিল ও গুরুতর।

হামলার ঘটনায় যুবলীগ নেতাসহ দুজনকে আটক করার কথা জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ শুক্রবার ভোরে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে।

আটক করা দুজন হলেন ঘোড়াঘাট উপজেলার জাহাঙ্গীর হোসেন (৪২) ও আসাদুল ইসলাম (৩৫)। জাহাঙ্গীর যুবলীগের নেতা।

হামলার ঘটনায় ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় রাতে অজ্ঞাতনামা ৪ থেকে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

বুধবার গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা ইউএনওর সরকারি বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীকে (৭০) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। আহত বাবা-মেয়েকে গতকাল সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। ওয়াহিদার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

ওয়াহিদা ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তাঁর স্বামী মেসবাউল হোসেনও একই ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। মেসবাউল রংপুরের পীরগঞ্জের ইউএনও। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ওয়াহিদার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীরা গভীর রাতে ইউএনওর বাসভবনের পশ্চিম প্রান্তের দেয়ালে মই লাগিয়ে দোতলার বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে ভেতরে ঢোকে। ওই ভেন্টিলেটরে থাই অ্যালুমিনিয়াম বলে পরিচিত স্লাইডিং কাচ ব্যবহার করা হয়েছে। এক পাশের কাচ সরিয়ে ভেতরে ঢোকে দুর্বৃত্তরা।

হামলার ধরন দেখে পুলিশের কর্মকর্তারা মনে করছেন, প্রথমে হামলা হয়েছে ইউএনওর ওপর। সেই শব্দ শুনে পাশের ঘর থেকে তাঁর বাবা এগিয়ে গেলে তাঁর ওপরও হামলা হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওয়াহিদার বাবা ওমর আলী প্রথম আলোকে বলেন, আনুমানিক ভোর সাড়ে চারটার দিকে নামাজ পড়তে উঠলে পাশের ঘর থেকে মেয়ের চিৎকার শুনতে পান। সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলে মুখোশ পরা এক দুর্বৃত্ত তাঁকে আটকিয়ে আলমারির চাবি চায়, না হলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপরই তাঁর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করলে তিনি জ্ঞান হারান।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও