৭ মার্চ পালন না করার অর্থ স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

মার্চ ০৮ ২০২০, ২০:০৭

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃআওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন না করার অর্থ দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল। তিনি বলেন, সমগ্র জাতি ৭মার্চ পালন করলেও বিএনপিসহ কয়েকটি দল এটি পালন করে না, তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ভাষণকে স্বীকৃতি দিতে পারেনি।

শনিবার (৭ মার্চ) রাজধানীর তথ্য ভবন মিলনায়তনে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর (ডিএফপি) আয়োজিত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রদত্ত ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ বিষয়ক আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ কোনো দলের নয়, সমগ্র জাতির। ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামান্য ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে ঘোষণা এবং স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর দ্বারপ্রান্তে বিএনপি ভুলের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে এবং ভবিষ্যতে ৭ মার্চ পালন করবে। তা’হলে দেশের মানুষ তাদেরকে বাহবা দেবে।

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: পূর্বপশ্চিম

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স. ম. গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে সভায় তথ্যসচিব কামরুন নাহার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে ১৯৭১ সালের ৭মার্চে জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণ ধারনকারী দলের সদস্যদের মধ্যে স্মৃতিচারন করেন, আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসান।

পরে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ধারনকারী ৮ সদস্যদের মধ্যে পদক প্রদান করেন তথ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসান সরাসরি এবং অন্যান্যদের পরিবারের সদস্যরা হাছান মাহমুদের হাত থেকে পদক গ্রহণ করেন।

এসময় মন্ত্রী বলেন, আমজাদ আলী খন্দকার ও সৈয়দ মইনুল আহসানসহ সেদিন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গন্ধুর ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ সংরক্ষন করেছিলেন। সে কারণে তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালির রক্তে আগুন ধরিয়েছিল। এই ভাষণ নিরস্ত্র জাতিকে স্বশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিল। এই ভাষণের পরেই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। এই কথার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক নয়, কার্যত স্বাধীনতার ঘোষনা করেছিলেন।

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: পূর্বপশ্চিম

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু এমনভাবে স্বাধীনতার ঘোষনা করেছিলেন যাতে করে পাকিস্তানীরা বঙ্গবন্ধুকে বিদ্রোহী হিসেবে বলতে না পারে । আবার স্বাধীনতার ডাকও তিনি দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পরেই বাঙালি স্বশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর যে মুন্সিয়ানা তা তার বক্তৃতা ও কথার মাধ্যমে ফুটে উঠেছিল। সেই কারণে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষন। গননা করা হলে ৭ মার্চের ভাষণই হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি শোনা ভাষণ। এই ভাষণ এমন একটি ভাষণ যেটি মানুষকে থমকে দেয় এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত না শুনলে অপুর্ণতা থেকে যায়।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজকে বাংলাদেশ হতো না। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাঙালি বিশ্বে মানচিত্রে আত্ম পরিচয় পেত না। বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র এই বাংলাদেশ রচনা করে গেছেন তা নয়, বঙ্গবন্ধু একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি যখন রাষ্ট্রকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যান তখনই তাকে হত্যা করা হয়। ১৯৭৪-৭৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৪ শতাংশ। যেটি আমরা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের ৪ দশক পর পর্যন্ত সেই রেকর্ড অতিক্রম করতে পারিনি।

ড. হাছান বলেন, সেটি আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে করতে সক্ষম হয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে যে বছর হত্যা করা হয় সেই বছর বাংলাদেশ চাল উৎপাদনে সয়ংসম্পুর্ণ হয়ে গিয়েছিল। সে বছর ১০ হাজার মে.ট. চাল উদ্বৃত্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু যখন রাস্ট্রকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে হত্যা করা হয়।

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: পূর্বপশ্চিম

সম্মাননা স্মারক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তিনি বলেন, আজকে আমরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়ার গল্প শুনি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ থেকে দু,তিন দশক আগেই পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশের সমৃদ্ধির গল্প শুনতো। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এমনকি সিঙ্গাপুর আমাদের চেয়ে উন্নত ছিল না। মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া সমৃদ্ধির পথে হাটছিল আর সিঙ্গাপুর মাথা উচু করে দাড়াঁবার চেষ্টা করেছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপুরনের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা যদি আরও সুযোগ দিই তাহলে কয়েক বছর পরেই পৃথিবীর মানুষ মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে যাবার গল্প শুনবে। বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রুপান্তরিত হবে। খবর. বাসস, ছবি: পূর্বপশ্চিম

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও