চিরিরবন্দরে লিচু ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌচাষিরা

মার্চ ২৮ ২০২৩, ১১:৩৩

Spread the love

এনামুল মবিন(সবুজ)জেলা প্রতিনিধি,দিনাজপুরঃ দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার ১৪ টি লিচু বাগানে মৌ-বক্স বসিয়ে প্রায় ৭৫ লাখ টাকা মূল্যের প্রায় ২৮ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ করেছেন মৌচাষিরা। মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের পাশাপাশি মুকুলে মুকুলে পরাগায়নের ফলে এ বছর বাগানের প্রতিটি গাছেই ৩০ ভাগের বেশি লিচু ফলনের আশা করছেন লিচু চাষিরা। লিচু বাগান পরিচর্যা খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি আশানুরূপ লাভ পাওয়ায় এলাকার অনেকেই আবাদি জমিতে লিচু বাগান গড়ে তুলছেন।

চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৬৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতিটি লিচু বাগানেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে গাছের পাতা। মূলত টাঙ্গাইল সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌচাষিরা এসে বাগানে ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স বসিয়ে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মৌ চাষ করে মধু সংগ্রহ করছেন।

উপজেলার পুনট্টি ইউনিয়নে লিচু বাগানগুলোতে ব্যাপক মুকুল এসেছে। লিচু বাগান মালিক আরিফ হোসেনের বাগানগুলোতে প্রায় দু’শতাধিক লিচু গাছ থাকায় টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মৌ চাষিরা ১৪টি বাগানে প্রতিটিতে ১৫০ থেকে ২০০ টি করে ছোটবড় বিভিন্ন আকৃতির মৌমাছির বাক্স স্থাপন করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মধু সংগ্রহ করছেন।

টাঙ্গাইল থেকে আসা মৌচাষিরা বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক উপায়ে উদ্ভাবিত মৌচাষ পদ্ধতি ব্যবহার করছেন তারা। বাগানে ২ শতাধিকের বেশি ব্রড ও নিউক্লিয়াস নামের ছোটবড় কাঠের বাক্স স্থাপন করেছেন। প্রতিটি বাক্সে একটি রাণী মৌমাছি, একটি পুরুষ মৌমাছিসহ অসংখ্য এপিস মেলিফেরা জাতের কর্মী মৌমাছি রয়েছে। কর্মী মৌমাছিরা মৌ মৌ গন্ধে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যায় লিচুর মুকুলে। পরে মুকুল হতে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছির দল নিজ নিজ কলোনিতে মৌচাকে জমা করে। মৌয়ালরা প্রতি ৭ দিন পর পর টানা ৩ দিন বাগানের বাক্স হতে দিন প্রতি ৩ হতে ৫ মণ মধু সংগ্রহ করে থাকে। যে লিচু গাছে মৌমাছির আগমন বেশি হয়, সে গাছের মুকুলে পরাগায়ন ভালো হয়। ফলে ওই গাছের বাগানে লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা থাকে। তেমনি মৌচাষিরা বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারেন।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চলতি বছরে প্রতিটি লিচু বাগানে ভালো মুকুল এসেছে। আর এ কারণে প্রচুর মৌমাছির আগমন দেখা দিয়েছে। লিচুগাছ থেকে মৌমাছি মধু আহরণের ফলে বেশি পরাগায়ন ঘটে। এতে করে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ লিচুর ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া বর্তমানে মৌচাষিদের দ্বারা উৎপাদিত মধু দেশের অর্থনীতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি দেশের মধুর চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন।

এসময় উপজেলার বিভিন্ন লিচু বাগান পরিদর্শন করেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও