গবাদী পশু মোটাতাজাকরণ করে স্বাবলম্বী তেরখাদার গৃহবধু রওশনারা

মে ০৭ ২০২৩, ২২:২৮

Spread the love

ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি , খুলনাঃ গবাদি পশু পালন এবং গবাদি পশু মোটাতাজাকরণ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার অবহেলিত ও উন্নয়ন বঞ্চিত জনপদ নামে খ্যাত ছাগলাদাহ ইউনিয়নের পাতলা ডাঙ্গা গ্রামের অসচ্ছল পরিবারের গৃহবধূ মোছাঃ রওশনারা(৩৫)।

মাত্র ৬/৭ টি বছর কষ্টের সাথে লড়াই সংগ্রাম করে তিনি নিজ পায়ে দাঁড়িয়েছেন।আত্মনির্ভরশীল এই গৃহবধুর মুখে এখন হাসির ছাপ ফুটে উঠেছে।

গত ১৩ বছর আগে তার একই গ্রামের মোঃ ইজাবুর রহমানের সাথে বিবাহ সম্পন্ন হয়।স্বামীর সংসারে গিয়ে তিনি নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হন। অভাবের সংসারে তিনি আলোর মুখ দেখাতে এক পর্যায়ে গবাদি পশু পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

রওশনারা এস ডি এফ নামে একটি সংস্থার কাজ শুরু করেন এবং ঐ সংস্থায় যোগদান করে তিনি ৩২ টি গ্রামের সভাপতি নির্বাচিত হন।

তিনি ঐ এলাকার অসচ্ছল পরিবারের মহিলা সদস্যদের নিয়ে আর্থিক সঞ্চয় শুরু করেন। কিছুদিন পর তিনি তার ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে গবাদি পশু পালন শুরু করেন।

পর্যায়ক্রমে তিনি এসডিএফ সংস্থা থেকে প্রথমে ৩০ হাজার, দ্বিতীয় দফায় ৫০ হাজার , তৃতীয় দফায় ১ লাখ এবং সর্বশেষ ৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে গবাদি পশু পালন করেন।

মাত্র ৬ বছরে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন।মোছাঃ রওশনারা দিবারাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে গবাদি পশু পালনের পাশাপাশি গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

তিনি একজন আদর্শ খামারি হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছেন।চলতি বছরে ( ২০২৩ সালে ) মোছাঃ রওশনারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর আয়োজিত প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী মেলায় শ্রেষ্ঠ খামারি নির্বাচিত হন এবং সরকারি ভাবে পুরস্কার প্রাপ্ত হন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান রওশনারা গবাদি পশু পালনের পাশাপাশি এখন গবাদী পশু মোটা তাজাকরণের ট্রেইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এলাকার বিভিন্ন খামারি এখন তাঁর নিকট থেকে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন।

এ বিষয়ে রওশনারার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মাত্র ৬-৭ বছরের মধ্যে গবাদি পশু পালন করে তিনি এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।তার স্বাবলম্বী হওয়ার পেছনে যথেষ্ট অবদান রেখেছে এস ডি এফ সংস্থা।তিনি বলেন , বর্তমানে তাঁর কাছে নগদ ১০ লাখ টাকা আছে।

তিনি আরো বলেন , ঐ টাকা দিয়ে তিনি গবাদি পশু পালন অথবা তাঁর স্বামীকে অন্য পেশায় মনোনিবেশ করাবেন।রওশনারাকে এখন আর অন্যের ঋণের উপর ভর করতে হয় না।

তিনি এলাকার বিভিন্ন লোকদের গবাদি পশু পালনে উদ্বুদ্ধ করছেন।
রওশনারা বলেন , তিনি দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে অতীতের সকল জরাজীর্ণতা এবং প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠে ।এখন তাঁর পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন।

তিনি তাঁর এলাকায় তাঁর মত আরো অসচ্ছল পরিবারকে সচ্ছলতার আলোয় আলোকিত করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন ।
এমন প্রত্যাশা নিয়ে তিনি কাজ করছেন বলে জানান।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও