বরিশাল মহানগরীর রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতলে চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি

সেপ্টেম্বর ২০ ২০২০, ১৫:০৪

Spread the love

রিয়াদুল রিয়াদ,বরিশালঃ বরিশাল মহানগরীর ৪ নং ওয়ার্ড, আমানতগঞ্জে ” স্বল্প খরচে উন্নত সেবার নিশ্চয়তা ” স্লোগান নিয়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবার উদ্দেশ্যে পরিচালিত ” হলিং বেরী সৈয়দ মোয়াজ্জেম রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতাল” এ চিকিৎসা সেবার নামে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সি ও মোশারফ হোসেনের নিয়ন্ত্রনাধীন এই হাসপাতাল এক সময় জনগনের প্রত্যাশা পুরন করতে পারলেও বর্তমানে বিভিন্ন অনিয়মের কারনে সাধারন চিকিৎসা প্রার্থীরা হতাশ হয়ে পরেছেন।
স্বায়ত্তশাসিত এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা- কর্মচারীদের ব্যাপক অনিয়ম করার অভিযোগ উঠেছে। ৪ তলা সুরম্য ভবন,মনোরম পরিবেশ দেখে সাধারন চিকিৎসা প্রার্থীরা আকৃস্ট হলেও প্রকৃত চিকিৎসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে হচ্ছেন ভোগান্তির শিকার। সংশ্লিষ্ট ডাক্তার-কর্মচারী – কর্মকর্তাদের দুর্ব্যবহার, নিয়মের অতিরিক্ত টাকা আদায় সহ একাধিক অভিযোগ উঠলেও মোশারফ হোসেন তা অস্বীকার করছেন।বর্তমানে হাসপাতালের দ্বায়িত্বে থাকা নন-টেকনিক্যাল পারসন মোশারফ হোসেনের অদক্ষতা, মেডিকেল পরীক্ষার যন্ত্রপাতি সমন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান না থাকা এবং ১ বছর পূর্বে অবসর নেয়ার কারনে প্রশাসনিক দুর্বলতা দেখা দেয়ায় হাসপাতালটির চিকিৎসার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানা যায়, এই হাসপাতালটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।আয় থেকে উন্নয়নে ব্যায় করার কথা থাকলেও বর্তমানে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না।প্যাথলজি বিভাগের এন্যালাইজার মেসিন,বায়ো-কেমিস্ট্রি মেসিন,হরমোন পরিক্ষার মেসিনসহ বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পুরাতন হওয়ায় রোগীর রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না।গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যাবশকীয় আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি অনেক পূরাতন মডেলের হওয়ায় পরিস্কার ছবি আসে না।এছাড়াও সিজারিয়ান অপারেশন চলাকালীন প্রেসার মাপার পালস অক্সিমিটার যন্ত্রটিও অনুপুস্থিত।তবে সমস্ত সমস্যাগুলো সম্পর্কে মোশারফ হোসেন অবগত থাকলেও অদৃশ্য কারনে এগুলো ক্রয় করা হচ্ছে না।কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ ফার্মেসিটি নিজেদের চালানোর কথা থাকলেও পুর্বের ব্যাক্তিই এটি পরিচালনা করছেন।
বিসিসির মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সভাপতি এবং আরও গণ্যমান্য বেশ কয়েক ব্যাক্তিকে নিয়ে গঠিত একটি কমিটি এর সার্বিক দেখাশোনা করেন।বর্তমান সিইও’র চাকরির মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক পূর্বেই।কিন্তু পরিচালনা কমিটি তাকে মৌখিক ভাবে দ্বায়িত্ব পালনের অনুমতি দিয়েছেন, এমন দাবি করে মোশারফ হোসেন দীর্ঘদিনের একনায়কতন্ত্র বজায় রেখে খেয়াল খুশী মত প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করায় ভেংগে পরেছে স্বাস্থ্যসেবা। অভিযোগ রয়েছে,হাসপাতালের কতিপয় কর্মচারী হাসপাতালের ভবনের রুম দখল করে সপরিবারে বসবাস করছেন।শুধু তাই নয়,ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে থাকা খালি জায়গায় রীতিমতো ঘর উঠিয়ে বসবাস করছেন বেশ কয়েক ব্যাক্তি।
এই হাসপাতালে নিয়মিত যাতায়াত করা নিজাম উদ্দিন জানান, একসময় এই হাসপাতালটি সাধারন মানুষের ভরসার স্থল ছিল।কিন্তু সঠিক তদারকির অভাবে বর্তমানে চিকিৎসা প্রার্থীরা এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।অভিযোগের বিষয়ে আলাপকালে সাবেক চিকিৎসক ডাঃ অশোক বলেন,আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কারনে আমি ওখান থেকে চলে এসেছি।তবে এখন মেয়র মহাদয় যখন পরিচালনা কমিটির সভাপতির দ্বায়িত্বে আছেন তখন আশাকরি স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ,সমাজসেবক ও হাসপাতাল পরিচালনা কমিটির সদস্য সৈয়দ মোঃ আনিচ বলেন,আমি অসুস্থ বিধায় আড়াই বছর হাসপাতালে যাই না।তবে এই হাসপাতাল তৈরী করার সময় আমিসহ অনেক গুনজন এর পিছনে শ্রম দিয়েছেন।
তাই আমি চাইব,এটি যেন সুন্দর ভাবে পরিচালিত হয়। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে মোশারফ হোসেন বলেন,আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকি।ভবিষ্যতে এর ব্যত্যয় ঘটবে না।তবে সাধারণ চিকিৎসা প্রার্থীরা আশা করছেন,যেহেতু বিসিসি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ এই হাসপাতালটির পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন,সেহেতু সকল অনিয়ম দূর করে আগত চিকিৎসা প্রার্থীদের মুখে হাসি ফুটাবেন তিনি।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও