উপায় না থাকায় স্ত্রী আর স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে জমিতে মই টানছেন আবু বকর

জানুয়ারি ০৯ ২০২১, ২০:৩৮

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের ছোট কাশর গ্রামের বাসিন্দা গরীব কৃষক আবু বকর সিদ্দিকের গরু নেই। অনেক কষ্টে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের পর স্ত্রী আর স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে দিয়ে জমিতে মই টানাচ্ছেন। অনেকের কাছে টাকা ধার চেয়েও পাননি। আর টাকা ধার নিয়ে যে পরিশোধ করবেন সে সাধ্যও নেই। অভাবের তাড়নায় তাদের এমন দৃশ্য যে কারো মনকে ভারাক্রান্ত করবে।

এক মেয়ে ও তিন ছেলে সন্তানের জনক আবু বকরের বড় ছেলেও কৃষিকাজ করেন। কিন্তু নিজের পরিবারের ভরণপোষণের পর বাবাকে সাহায্য করার মতো আর্থিক অবস্থা নেই তার। মেজো ছেলে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। এক মেয়ে বিয়ে হয়ে শ্বশুরবাড়িতে। ছোট ছেলে মাহাদী হাসান সুমন দশম শ্রেণির ছাত্র। অভাবের তাড়নায় ছোট ছেলে সুমন আর স্ত্রী মমতাজ বেগমকে নিয়ে কোনো উপায় না পেয়ে ফাসলি জমিতে মই টানিয়ে তৈরি করছেন জমি।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘৩৫ শতাংশ জমিন ট্রাক্টর দিয়ে হালের কাজ করছি। কিন্তু জমিটি হমান (সমান) করে লাগানির (রোপনের) উপযোগী করতে হইবো। কিন্তু টাহার (টাকা) অভাবে কয়দিন ধরে ক্ষেতে মই দিতে পারতেছি না। অনেক খানেই টেহা (টাকা) পয়সা ধার চাইয়া ব্যর্থ হইছি। পরে কোনো উপায় না পায়া বউ পুলারে লয়া মই দিতাছি।’

আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, বড় ছেলে বিয়া কইরা আলগা (আলাদা) হইয়া গেছে। ছোড (ছোট) ছেলেরে লইয়া থাকি। ছেলেডা ইস্কুলে টেনে (দশম শ্রেণী) পড়ে। হাতে কোনো টেহা পয়সা (টাকা) নেই। কোনো উপায় না দেইখা স্বামীর কাজে সহযোগিতা করতাছি।’ এই কাজ করায় কোনো লজ্জা বা কষ্ট নেই।

করোনার কারণে স্কুল বন্ধ আর বাবার অনেক বয়স হয়েছে। তাই মায়ের সঙ্গে জমি চাষে নেমে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন ছোট ছেলে সুমন।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার বলেন, হালের বলদের অভাবে স্ত্রী-সন্তানকে দিয়ে মই দেয়াটা খুবই পীড়াদায়ক। আমি দ্রুতই খবর নিব এই পরিবারটির। ওই পরিবারকে সরকারি প্রনোদনাসহ বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হবে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও