করোনা সংক্রমণ রোধে ভোলায়ও কঠোর লকডাউন চলছে

জুলাই ০৩ ২০২১, ১৩:৩২

Spread the love

এম মিজানুর রহমান মিনহাজ ভোলা জেলা প্রতিনিধিঃ সারাদেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভোলায়ও কঠোর লকডাউন চলছে। সরকারি বিধি নিষেধ যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনের সাথে মাঠে নেমেছে নৌ-বাহিনী সদস্যরা। এদিকে বিধিনিষেধ অমান্য করায় লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে ৮৯ জননের ৬৮ হাজার ৯শ’ টাকা জরিমানা ও ৪ জনকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে আইনের আওতায় আনা হয়েছে ১৮৭ জনকে।

কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় দিনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা প্রশাসনের ১২টি ভ্রাম্যমান আদালতের সাথে কাজ করছে নৌবাহিনীর সদস্য। এছাড়াও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ২১টি চেকপোস্টের পাশাপাশি ১১টি মোবাইল টিম লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। ঘরের বাইরে বের হয়ে বাজারে ঘুরাফেরা ও আড্ডা না দিতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী। শুক্রবার স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তাবয়নে ১২টি মোবাইল কোর্ট ৮৫টি মামলা করেছেন। এসব মামলায় ৮৯ জনের ৬৮ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা ও ৪ জানকে ৩ দিন করে বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ২দিন ১৯৮ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়।

অপরদিকে জেলার অধিকংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিপণী বিতান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে অটোরিকশা, সিএনজি ব্যক্তিগত যানবাহনসহ সকল প্রকার গণপরিবহন। তবে মূল সড়কে কঠোর লকডাউন থাকলেও অলিগলিতে মানুষের চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক ছিল।

ভোলা জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহি চৌধুরী জানান, লকডাউন বাস্তবায়নে সকাল থেকেই ভোলার ৭টি উপজেলার জেলা প্রশাসন এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা লক ডাউন এর আগে জনগণকে সচেতন করেছি লকডাউন মানার জন্য। এখন বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বের হলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া নৌ-বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আনসার এর সম্মনয়ে লক ডাউন বাস্তবায়নে ভিবিন্ন এলাকা ভাগ করে নিরলস ভাবে কাজে করে যাচ্ছি। কেউ লকডাউন না মানলে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

এছাড়া নিম্ন ভিত্ত পরিবারের খাদ্য সহায়তার জন্য কন্ট্রেল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে কারও খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন হলে খাদ্যর ব্যবস্থা করে তাদের বাড়ীতে পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া লক ডাউন এর জন্য মন্ত্রনালয় থেকে ৪৪ লাখ টাকা পেয়েছি। সেটা বিভিন্ন উপজেলায় ভাগ করে দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ভোলায় লকডাউন এবং স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে বিনা কারনে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে ২ জনের ৫ দিনের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রামাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউসুফ হাসান এ দন্ড দেন। দন্ডাপ্রাপ্তরা হলেন, সিরাজ ও মোরশেদ। তারা সদরের উকিল পাড়া এলাকার বাসিন্দা। একইদিন লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় আরো ১০৪ জনের এক লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় ১৭টি অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত এ জরিমানা করে।

এরমধ্যে ভোলা সদরে ৩৯ জনকে ৩৯ হাজার টাকা, বোরহানউদ্দনে ১৫ জনের ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, চরফ্যাশনে ২৯ জনকে ৩৩ হাজার ৯০০ টাকা, তজুমদ্দিনে ৩ জনকে ১৫০০ টাকা এবং মনপুরা উপজেলায় এক জনকে ১ হাজার টাকা। ভোলা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: ইউসুফ হাসান এ তথ্য নিশ্চিতি করে জানান, করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় জেলার সাত উপজেলা থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি অমান্য এবং বিনা কারণে রাস্তায় ঘোরাফেরার কারনে ২ জনের জেল এবং ১০৪ জনকে জরিমান করা হয়। সংক্রমক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রন ও নির্মূল) আইন দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৮, ২৬৯ ধারায় এ জেলা-জরিমানা করা হয়।
এদিকে ভোলা শহরে সকাল থেকেই পুলিশের ২ টি চেকপোস্ট ও ৫টি মোবাইল টিম মাঠে কাজ করছে। প্রতিটি উপজেলায় ২টি করে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

শহরের গুরুপ্তপূর্ণ পয়েন্টে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন সুঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যদের টহল চলছে। ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোঃ কায়সার জানান, গুরুপ্তপূর্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট ও পুলিশের টহল রয়েছে।
এদিকে সকাল থেকেই শহরের দোকান-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, সড়কে চলছে না গণপরিবহন। কঠোর লকডাউনের প্রথমদিন পাল্টে গেছে ভোলার চিত্র। নেই জানজট, ভীড় কিংবা জনসমাগম। সড়কগুলো ফাঁকা দেখা গেছে। তবে দু’একটি রিক্সা চলাচল করতে দেখা যায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জরুরি সেবা ছাড়া সব দোকান এবং মার্কেট বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজনের তাগিদে যারা বের হচ্ছেন তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা গেছে।

এদিকে ভোলা-চরফ্যাশন সড়কে চলছে না পরিবহন। অল্প সংখ্যক ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক-রিকশা চলাচল করতে দেখা গেলেও সেখানে যাত্রী নেই। শহর ভিত্তিক কঠোর লকডাউন চললেও গ্রামে ছিলো ঢিলেঢালা অবস্থা।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও