মোরেলগঞ্জে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভনে ৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

অক্টোবর ০২ ২০২২, ১৭:১২

Spread the love

মোঃ ইকরামুল হক রাজিব,ব্যুরো প্রধান খুলনাঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৯৫ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ নাসির উদ্দিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী শিশির কুমার সাহা এ ব্যাপারে বাগেরহাট -৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলনের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেছেন। সংসদ সদস্য অভিযোগ পত্রটি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দীনের কাছে অগ্রায়ন করলে এ ব্যাপারে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে উক্ত কমিটিকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন উক্ত কর্মকর্তা।

অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা গেছে, মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৯৫ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঠাকুরাইনতলা গ্রামের মোঃ সেকেন্দার আলী হাওলাদারের পুত্র মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার বিভিন্ন দপ্তরের বড় বড় পদে তার আত্মীয়-স্বজন আছে বলে প্রচার করেন।এভাবে নিশ্চিত চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন বাগেরহাটের নাগেরবাজার এলাকার মৃত সুধীর কুমার সাহার ছেলে শিশির কুমার সাহা।

ওই অভিযোগ পত্রে ভুক্তভোগী শিশির কুমার সাহা আরও জানান, পূর্ব পরিচিত হওয়ায় শিক্ষক নাসির তার পিতা মোঃ সেকেন্দার আলীকে সঙ্গেনিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বাগেরহাট শহরের জনৈক ব্যক্তির চায়ের দোকানে আসেন। সেখানে আলাপকালে শিশির কুমার সাহার একজন নিকটাত্মীয়ের চাকরি নিশ্চিত বলে বিভিন্ন লোভ-লালসা দেখায় তাকে।

একপর্যায়ে বিশ্বাস করে ওইদিন কয়েকজন স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে ৩ লাখ টাকা প্রদান করেন শিক্ষক নাসিরকে এবং নাসিরের কাছ থেকে তার পিতার সোনালী ব্যাংকের হিসাবের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের সমপরিমাণ টাকার চেক গ্রহণ করেন।

এভাবে বিভিন্ন উপায়ে কয়েক কিস্তিতে শিশির সাহার কাছ থেকে শিক্ষক নাসির ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে শিশির কুমার সাহাকে ঢাকায় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব পরিচয়ে জনৈক আলমগীর নামের এক ব্যক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।

পরে চলতি বছরের জুলাই মাসে নাসিরের কথামত শিশির সাহা আলমগীর নামের ওই ব্যক্তির এলিফ্যান্ট রোডের একটি ব্যাংক হিসাবে নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান।

এভাবে মোট ৯ লাখ টাকা প্রদান করেন বলে জানান তিনি।শিশির কুমার সাহা আরও জানান, পরবর্তীতে মাসের পর মাস সময় ক্ষেপন হলে চাকরির কোন সুখবর না পেয়ে তিনি গত আগস্ট মাসে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারইখালীস্থ শিক্ষক নাসিরের ভাড়া বাড়িতে উপস্থিত হন। সেখানে শিক্ষক নাসির শীঘ্রই তার টাকা দিয়ে দেবার
প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

পরবর্তীতে বিভিন্ন তাল বাহানায় ১৫ টিরও বেশি দিন ধার্য করে ঘুরিয়ে বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানান শিশির কুমার। উপায়ান্তর না পেয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. আমিরুল আলম মিলন বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। সংসদ সদস্য অভিযোগপত্র খানা মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ জালাল উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।এ ব্যাপারে ওই শিক্ষকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অভিযোগ কারীদের কাছে আমি ৯ লক্ষ টাকা পাবো তারা আমার কাছে কোন টাকা পাবে না।

প্রসঙ্গত, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলভনে এর আগেও বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকটি অভিযোগ দাখিল হয়েছিল সেগুলো তদন্তাধীন রয়েছে।এছাড়াও বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগে একাধিক বিভাগীয় মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও