কেউ যদি মনে করে মৃত্যুর পর শাস্তি হবে, এটা ঠিক নয়। দুনিয়াতেও শাস্তি হয়ঃঅলি আহমদ

নভেম্বর ২২ ২০১৮, ২২:১৯

Spread the love

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্ণেল (অব.) ড. অলি আহমদ বলেছেন, এবার সরকার যেভাবে সরকার পরিকল্পনা করছে, অতীতে কোনো সরকার এভাবে পরিকল্পনা করেনি।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন জনতার মঞ্চ করা হয়েছিল তখন কিছু কর্মকর্তাকে দিয়ে এ ধরনের কাজ করা হয়েছিল। এটা ভালো কাজ নয়, এটা করা উচিত নয়। অন্যায়ের জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বনানীতে এলডিপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ এসব কথা বলেন।

এ সময় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে কী করা হবে-এ বিষয়ে অলি আহমদ দলের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি ঘোষণা করেন। রোববার এই ১২ দফা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান।

এছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির ইশতেহারে এই ১২ দফা যাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে আহ্বানও জানিয়েছেন এলডিপি সভাপতি।

অলি আহমদ বলেন, কেউ যদি মনে করে মৃত্যুর পর শাস্তি হবে, এটা ঠিক নয়। দুনিয়াতেও শাস্তি হয়, এটা সবাই দেখছে।

লিখিত বক্তব্যে অলি আহমদ বলেন, জাতি হিসেবে আমরা পঙ্গুত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারি ও আধা সরকারি সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় আনুগত্য স্বীকারে বাধ্য করা হচ্ছে। মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেয়া হচ্ছে না। বেকার সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন নতুন ব্যাংক অনুমোদনের ফলে অর্থনীতিতে যেকোনো সময় ব্যাপক ধস নামতে পারে। এ অবস্থা থেকে জাতি, ধর্ম, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে সরকার গঠন করতে হবে। প্রয়োজন জনগণের সৎসাহস ও সচেতনতা, তাহলে সবক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে।

২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কথা হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন, অবশ্যই আসন ভাগাভাগি নিয়ে কথা হবে। তবে তা বানরের পিঠা ভাগের মতো নয়।

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা জনগণ যাকে চায়, তাকে মনোনয়ন দেয়া হবে। ২৫ বা ২৬ তারিখের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

বিএনপির আসন ভাগাভাগির বিষয়ে অলি আহমদ বলেন, বিএনপির মতো একটি বড় দল যেখানে ৫ হাজার লোকের সাক্ষাৎকার নিতে হয়েছে। এগুলো আবার সামারি করতে হবে। দল নিজস্ব আঙ্গিকে নিজস্ব প্রার্থী ঠিক করবে। এরপর ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বসবে বিএনপি।

তিনি বলেন, এখানে কোনো অন্যায় আবদার কাউকে করতে দেব না। জিততে হবে এবং সঠিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে হবে। দলের মনোনয়ন নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব হবে না বলেও তিনি জানান।

ক্ষমতায় গেলে যা করবেন?

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনার প্রসঙ্গে অলি আহমদ বলেন, নয়াপল্টনে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। সেখানে পুলিশ কী কারণে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ করল?

তিনি বলেন, আমরা কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেব না, যদি আমরা ক্ষমতায় যাই। সবার প্রতি সমান আচরণ করা হবে। কারণ আমরা জানি, সরকার অনেক সময় বাধ্য করে। তাদেরও (পুলিশ) অনেকের ছেলেমেয়েরা আছে, ঘর-সংসার আছে সেটি চিন্তা করে সরকারের কাছে নতি স্বীকার করতে হয়। আগামী দিনে যাতে নতি স্বীকার করতে না হয়, সে ব্যবস্থাগুলো আইনগতভাবে নেয়া হবে। সবাই স্বাধীনভাবে কাজ করবে।

তিনি আরও বলেন, সব স্তরের সরকারি, আধা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, কর্মচারীরা দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে নিজের বিবেকের তাড়নায় জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করবেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সেবাদাসের মতো কাজ করা মনুষ্যত্বের কাজ হবে না।

নির্বাচনে জয়ী হলে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ, পুলিশ প্রশাসনের সব গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোকে নিরপেক্ষ রাখা, ডিজিটাল আইন বাতিল করাসহ ১২ দফা তুলে ধরেন অলি আহমদ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- এলডিপির মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও