শতকরা একশ’ জন ভোট দিলেও জয় পাবেন না, কারণ মেশিন আপনাদেরকে জিততে দেবে নাঃবিএনপিকে মান্না

জানুয়ারি ২৪ ২০২০, ২২:৫৩

Spread the love

আগমনী ডেস্কঃবিএনপির উদ্দেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, শতকরা একশ’ জন ভোট দিলেও আপনারা জয় পাবেন না। কারণ, মেশিন আপনাদেরকে জিততে দেবে না।শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খান হলে যুব জাগপার উদ্যোগে শহীদ মাসুদ রায়হানের স্মরণে ‘গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিদ্রোহ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল কিভাবে স্বৈরাচারী দল হয়ে গেছে সেটা আমরা দেখেছি। নির্বাচনের ৩০০ সিটির মধ্যে অর্ধেকের বেশি সিট আগে থেকেই নির্বাচিত হয়ে যায়। আজ জনগণ পরাজিত হচ্ছে। ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের কৌশলে পরিবর্তন করতে যাচ্ছে। প্রথম যখন ইভিএম চালুর কথা বলেছে— তখন বলেছি, এখনও বলছি। এই মেশিন তো মানুষই বানায়। মানুষ বানায় তার উপকারের জন্য। না বুঝার কী আছে। আমরা রুমে একটা ফ্যান লাগাই বাতাস পাওয়ার জন্য, আরাম পাওয়ার জন্য, তেমনই ইভিএম যেমন করে বানিয়েছি সেইভাবে আমার কমান্ড শুনবে। আপনি যতই ধানের শীষে ভোট দেন না কেন, আমি যদি ভেতরে কমেন্ট দিয়ে রাখি যে, তিনটি টিপ দিলে দুটি নৌকায় যাবে এবং একটা ধানের শীষে যাবে, আপনার কিছু করার নাই। কোনও প্রমাণ নাই আপনি কোথায় ভোট দিলেন। কোনও মামলা করতে পারবেন না, প্রতিবাদ করতে পারবেন না। এত বড় জালিয়াতি এই সরকার করছে।’

তিনি বলেন, ‘চলমান ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনেকেই বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি একটা ছেড়ে দেবে। কে বলেছে একটা ছেড়ে দেবে? কীভাবে বোঝেন একটা ছেড়ে দেবে? ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জেতার জন্য,ক্ষমতায় থাকার জন্য ডাকাতি করেছে। এবার ডাকাতি করা যাচ্ছে না। কারণ, দেশের জনগণ জানে, মিডিয়া জানে, সারাবিশ্ব জানে যে, তারা ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। এবার ডাকাতি করতে পারছে না এই কারণে যে, আরও বড় বদনামের মুখোমুখি হতে হবে এবং তাদের ক্ষমতা ছাড়ার ঝুঁকিটা বাড়তে পারে। যে কারণে এবার মেশিন আমদানি করা হয়েছে। এই মেশিন জাদুর মেশিনের মতো।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘‘আপনারা নির্বাচনে যোগ দেওয়ার পরে, প্রার্থীদের নমিনেশন জমা দেওয়ার পরে বলছেন— ‘এই ইভিএম মানি না।’ এই কথা কি আগে বলা যেতো না? তিন মাস, ছয় মাস আগে কি ক্যাম্পেইন করা যেতো না যে, আমরা ইভিএম মানি না? আগে ইভিএম বাতিল করেন, তারপর আমরা ভোটের কথা ভাববো। তারপরও বলেন একটা দিয়ে দেবে কূভাবে দেবে আমাকে বুঝান তো।’’

বিএনপির উদ্দেশে মান্না আরও বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জয় ছিনিয়ে নিয়ে আসবো। কিন্তু ১০০ জনের ১০০ জনই যদি আপনাদেরকে ভোট দেয়, তারপরও আপনারা জয় পাবেন না। কারণ, মেশিন আপনাদেরকে জিততে দেবে না।’

মান্না বলেন, ‘আগে দেশ রক্ষায় সাধারণ জনগণ যেভাবে বক্তৃতা দিয়েছে, বুদ্ধিজীবীরা যেভাবে কথা বলেছে, পাকিস্তানের স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে যেভাবে কথা বলেছে এখন দেশের মধ্যে অপশাসন, দু:শাসন, কুশাসকের বিরুদ্ধে কথা বলার ক্ষমতা কারও নেই। সারাদেশে এখন ভয়ের চাষ হচ্ছে।’

মানুষের বাক স্বাধীনতর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানের সরকারের কাছে আগে টকশো তিতা লাগতো, এখন মানুষের কাছে তিতা লাগে। পাঁচ বছর আগে টকশো দেখার জন্য আগে থেকে মানুষ বসে থাকতো। এখন মানুষ শুনতে চায় না। বর্তমানের জেনারেশনের কথা বলি তারাতো টিভির কাছেই যেতে চাইনা, বরং তাদের কাছে মোবাইলের ফেসবুক অনেক ভালো।’

তিনি আরও বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের ভোটের আগে কত প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। সেগুলোর কয়টা বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটির বেশি শিক্ষিত বেকার রয়েছে। নির্বাচনের সময় সরকার বলেছে প্রতিবছর নতুন করে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু হচ্ছে না, শুধু পুলিশের নিয়োগ বেশি দেওয়া হচ্ছে। কারণ সরকার ক্ষমতা থাকতে হলে পুলিশের দরকার রয়েছে।

‘আমাদের আন্দোলনের কৌশল অবলম্বন করতে হবে। উঁচু নিচু দেখে সামনের দিকে এগুতেই হবে। যে কোনো সময় আন্দোলনের ডাক আসতে পারে।’ যোগ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— জাগপার সভাপতি তাসমিয়া প্রধান, যুব জাগপার সভাপতি তুহিন প্রমুখ।

পূর্বপশ্চিমবিডি/এসএস

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও