আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তারা ক্ষমা করবে না-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ডিসেম্বর ০৩ ২০১৯, ১০:০১

Spread the love
আগমনী ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বলেন, “আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তারা ক্ষমা করবে না। প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি জীবিত মানুষকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখনই সময় কাজ করার”। সোমবার স্পেনের ফেরিয়া দা মাদ্রিদে (আইএফইএমএ) ‘অ্যাকশন ফর সারভাইভাল: ভালনারেবল নেশনস কপ-২৫ লিডার্স সামিট’ এ দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “সিভিএফ এবং ভি -২০ দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিমুখী সহযোগিতার অসাধারণ উদাহরণ এবং আমরা বর্তমান সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিতে চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের জন্য একটি কঠিন বাস্তবতা। এটি এখন মানুষের জীবন ও পরিবেশ, বাস্তুশাস্ত্র এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। ১৯৯২ সালে আর্থ সামিটের পর থেকে আমরা গ্রিনহাউস গ্যাস হ্রাসে খুব বেশি অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি, এর নির্গমণ এখনও বেড়ে চলেছে। এই প্রবণতা পৃথিবীকে অস্থিতিশীল করে তুলছে।

“ঝুঁকিতে থাকা আমাদের মতো দেশগুলো, এই পরিস্থিতি মোকাবেলা সীমিত ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হই। ক্ষয়ক্ষতির জন্য তুচ্ছ বা কোনো অবদান না রাখলেও ক্ষতির ধাক্কাটা আমাদেরকেই সামলাতে হচ্ছে। এটি একটি অবিচার এবং অবশ্যই বিশ্ব সম্প্রদায়কে বিষয়টি স্বীকার করতে হবে।”

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি যেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের দাবি রাখে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তারা তা পাচ্ছে না।সিভিএফ এবং ভি-২০ দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিভুজাকারী সহযোগিতার দুর্দান্ত উদাহরণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বর্তমান অর্জনগুলোকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্য পরিবেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ ধ্বংসের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।তিনি বলেন, ঝুঁকি, প্রভাব ও মোকাবিলার সক্ষমতা অভাবের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা মানদণ্ড ঠিক করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রধান দূষণ বা কার্বন নির্গমনকারীরা দূষণ কমাতে চরম অনিহা দেখাচ্ছে যা আন্তর্জাতিক জলবায়ু শাসনব্যবস্থা ধ্বংস ও বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আরও বিপদের ঝুঁকিতে ফেলবে। সুতরাং, নিষ্ক্রিয়তার জবাবদিহিতা চেয়ে আমাদের দ্বিধা করা উচিত নয়।

২০২০ সালে নেদারল্যান্ডস-এ ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশসন সামিটে অভিযোজন প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলো সম্মত হলে বাংলাদেশ জলবায়ু ভালনারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্সির দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোকাবিলার সক্ষমতার অভাব, বিশেষ করে ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ধ্বংসযজ্ঞে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর দায় খুবই নগণ্য বা কোনো অবদানই নেই। এটি গুরুতর অন্যায় একথা বিশ্ব সম্প্রদায়কে স্বীকার করতে হবে।

ইউএনএফসিসিসির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ইউএনএফসিসিসি (ইউনাইটেড নেশনস ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) খুবই ধীর ও অত্যন্ত অপ্রতুল। আমাদের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অভিযোজনের সহায়তায় কদাচিতই উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও