ঢাবির জিয়াউর রহমান হলের গেস্টরুমে এজিএসের নেতৃত্বে ২৪ শিক্ষার্থীকে মারধর
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) আব্দুল্লাহ আল মুমিন আবিরের তত্ত্বাবধানে হলে কয়েক মাস যাবত গেস্টরুম চলছিল। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের অনুগত রাখতে একটি কক্ষে দাঁড় করিয়ে তাদের কৈফিয়ত নেওয়ার প্রথাকে ‘গেস্টরুম’ বলা হয়।
ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’কে জানায়, গত বুধবার মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে প্রথম বর্ষের কিছু ছাত্র নানা কারণে উপস্থিত থাকতে পারেনি। এ কারণে সেদিন রাতে প্রথম বর্ষের সব ছাত্রকে গেস্টরুমে ডেকে দ্বিতীয় বষের্র পলিটিক্যাল ‘ভাইয়েরা’ প্রোগ্রামে উপস্থিত না থাকা ছাত্রদের রাতে রুমে ঘুমাতে নিষেধ করে দেয়। তাদের রুমমেটদেরও বলে দেয়া হয় যাতে তারা রুমে ঢুকতে না পারে। কিন্তু নিষেধ অমান্য করে রুমে ঘুমাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার রাতে হলের ২১২ নম্বর রুমে গেস্টরুমে ২৪ জন শিক্ষার্থীকে লোহার রড, বাঁশ, স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করা হয়।
মারধরকারীদের মধ্যে ছিলেন দ্বিতীয় বর্ষের সাইকোলজি বিভাগের সোলেমান রনি, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের মাহমুদুল হাসান, স্বাস্থ্য অর্থনীতির রুবেল হোসেনসহ আরও অনেকে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন এবং হলের এজিএম আবিরের অনুসারী বলে জানা গেছে।
তবে, ওই দুই শিক্ষার্থীর ঘনিষ্ট দুই বন্ধু জানায়, ‘মনিরের ফেসবুক আইডি থেকে শিবিরের পেইজে লাইক দিয়ে তাকে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়েছিল মারধরকারীরা। তাই প্রভোস্ট স্যারের সামনে মারধরের কথা অস্বীকার করে মনির।’
মারধরের বিষয়ে এজিএস আবিরকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি ভুল তথ্য। তারা দুই বন্ধ মারামারি করেছিল, আমরা মিটিয়েও দিয়েছিলাম।’ আটক রেখে জোর করে শিবিরের পেইজে লাইক দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের আটক রাখার তথ্য ভুল। লাইক দেওয়ার বিষয়টা আমি জানি না।’
ডাকসুর এজিএস এবং ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। আমরা হল কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলে ব্যবস্থা নেবো। কয়েক মাস যাবত গেস্টরুম নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবো। এদিকে, ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করে দোষীদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিয়া রহমান।উৎসঃবাংলাদেশ প্রতিদিন