১৮ বছরের যুদ্ধের অবসানে ফের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান

আগস্ট ০৩ ২০১৯, ২৩:০০

Spread the love

আফগানিস্তানে ১৮ বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে ফের শান্তি আলোচনায় বসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবান গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা।

শনিবার (০৩ আগস্ট) কাতারের রাজধানী দোহায় এ বৈঠক শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এবারের আলোচনাকে দু’পক্ষের সমঝোতার ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ অধ্যয় হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

আলোচনায় অংশ নেওয়া জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, আট ধাপের এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ১৩ আগস্টের আগেই একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার করা হবে বলেও আশাবাদ তাদের।

আলোচনায় অংশ নিতে শুক্রবার (০২ আগস্ট) রাতে দোহায় পৌঁছান আফগানিস্তানে নিয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমে খলিলজাদ। ২০১৮ সাল থেকে তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকের নেতৃত্বে তিনিই ছিলেন।

দোহায় পৌঁছেই টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে খলিলজাদ বলেন, তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা শুরুর উদ্দেশে এইমাত্র দোহায় পৌঁছালাম। আমরা (যুক্তরাষ্ট্র) সেনা প্রত্যাহার বিষয়ক কোনো চুক্তি নয়, বরং একটি শান্তি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি।’

‘এমন এক শান্তি চুক্তি, যা সেনা প্রত্যাহারে সহায়ক হবে। আফগানিস্তানে আমাদের উপস্থিতি শর্তসাপেক্ষ, আমাদের সরে যাওয়াও হবে শর্তসাপেক্ষ। আমরা একটি ভালো চুক্তির জন্য প্রস্তুত।’

এছাড়া তালেবান গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেও সমঝোতায় আসার ব্যাপারে ইতিবাচকতা লক্ষ্য করা গেছে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের এ দূত।

আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তার উদ্দেশে দেশটিতে বর্তমানে ২০ হাজার ন্যাটো সেনা রয়েছে। এর অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্রের। গত মাসেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানান, ২০২০ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করতে চান।

১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণেই ছিল আফগানিস্তান। পরবর্তীতে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের যৌথ অভিযানে তাদের ক্ষমতার অবসান হয়। এরপর থেকেই পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তারা। বর্তমানে তালেবানরা আফগানিস্তানের বেশির ভাগ এলাকার দখল নিয়েছে। তারা চায় সেখান থেকে বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়া হোক।

নতুন করে শুরু হওয়া এ আলোচনায় ১৯ সদস্যের তালেবান প্রতিনিধি দল অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন সুহালি শাহিন ও জবিহউল্লাহ মুজাহিদ নামে দুই তালেবান মুখপাত্র।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক তালেবান কমান্ডার বলেন, ‘বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টিই শান্তি আলোচনা ও চুক্তিকে বিলম্বিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর কোনো অবস্থাতেই আমরা স্থায়ীভাবে আফগানিস্তানে তাদের সৈন্য থাকতে দেবো না। একই সঙ্গে আমরা তাদের এ ব্যাপারেও আশ্বস্ত করবো যে, আর কোনো বিদেশি বাহিনী আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে পারবে না।’

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও