হিন্দু উগ্রবাদীরা মসজিদ পোড়ালেও মন্দির বাঁচাল দিল্লির মুসলিমরা
মানবশৃঙ্খলে অংশ নেয়া তাবাসসুম নামে ৩০ বছর বয়সী এক নারী বলেন, শুধু মন্দিরই নয়, আমাদের এলাকায় হিন্দু ভাইদের দোকানগুলোরও যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছি আমরা। মন্দিরে হামলা প্রতিরোধ করতে মানবঢাল হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি।
দ্য ওয়ারের বরাত দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার সংঘর্ষ চলকালে নয়াদিল্লির একটি প্রাচীন মসজিদে আগুন লাগানো হয়। ‘জয় শ্রী রাম’ এবং ‘হিন্দুওকা হিন্দুস্তান’ স্লোগান দিয়ে একদল সশস্ত্র হিন্দুত্ববাদী এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটায়।এদিকে দিল্লির সীলামপুরের বাসিন্দারাও ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির নজির গড়েছেন। সহিংসতা প্রতিরোধে সে এলাকায় মোতায়েন পুলিশ সদস্যদের খাবার ও পানি দিয়ে সহযোগিতা করছেন তারা।
এ বিষয়ে গৌরব নামে এক যুবক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলেন, পুলিশ এখন আমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন। তাদের সবার খেয়াল রাখা আমাদের কর্তব্য। যতক্ষণ তারা এলাকায় থাকবেন, আমরা তাদের পাশে আছি। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিশ সদস্যরাসহ অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। তাদের প্রয়োজনীয় খাবার দিচ্ছি আমরা।
প্রসঙ্গত টানা চার দিন ধরে চলা দিল্লির এই দাঙ্গায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দিল্লিতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, সিআরপিএফ, বিএসএফ ও আরপিএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে জাফরাবাদ, মৌজাপুর, সীলামপুরসহ বেশ কিছু এলাকায়। এদিকে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে দিল্লিতে সেনা মোতায়েন চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
বুধবার সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তিনি শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তার সফরের পরপরই ভজনপুর, মৌজপুর এবং কারাওয়াল নগরে নতুন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সহিংসতার ঘটনার তিনদিন পর হুঁশ ফেরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বুধবার এক টুইটে সহিংসতাপূর্ণ এলাকায় শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।