চট্টগ্রাম নেভি কনভেনশন হলে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশঃ ইউনিভার্সিটির ২য় সমাবর্তন

নভেম্বর ২৭ ২০২২, ১৮:৫৮

Spread the love

আনোয়ার হোসেন, বুরো প্রধান চট্টগ্রাম : দেশের সনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (পিসিআইইউ) দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৬ নভেম্বর (শনিবার) চট্টগ্রাম নগরের নেভি কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে ১০টি বিভাগের ১৩টি প্রোগ্রামের ৪ হাজার ৫০১ জন স্নাতক ও ১ হাজার ১৪৮ জন স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে পাশকৃত ৫ হাজার ৬৪৯ জনকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। যার মধ্যে এবারের সমাবর্তনে ১৪ জন শিক্ষার্থী চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও ১৩ জন শিক্ষার্থী ফাউন্ডার গোল্ড মেডেল অর্জন করে।

এতে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এডভোকেট আব্দুল হামিদের পক্ষে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা একেএম এনামুল হক শামীম।

সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মিসেস তাহমিনা খাতুন এবং সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর এমপি ।

এদিকে শনিবার সকাল থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে সমাবীতন প্রাঙ্গন।

দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী আগত অতিথিবৃন্দদের নিয়ে প্যারেডসহকারে মঞ্চে আসন গ্রহণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।

সমাবর্তনের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আনোয়ার।

সমবর্তনে ডিগ্রি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আপনারা যারা গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন, আপনারা শিক্ষা জীবনের সনদ প্রাপ্তির পর্যায়টা শেষ করেছেন। আসল শিক্ষা জীবন এখন থেকে শুরু হয়েছে। এর মধ্যে যারা কর্ম জীবনে প্রবেশ করেছেন আপনারা হয়ত জানেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাসিক জ্ঞানটা নিয়েছেন। কর্ম জীবনে নতুন এক চ্যালেঞ্জ শুরু হতে যাচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মুকাবিলা করতে হলে নানা বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি। তাই কোন নুন্যতম দক্ষতা না থাকলে কর্মদাতারা আপনাকে বেতন দেওয়ার আগে চিন্তা করবে। কর্ম দিলেও সে বেতন আর বৃদ্ধি হবে না। এই বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেশে হয়েছে তার সবচেয়ে বড় সুফল ভোগ করতে যাচ্ছেন আপনারা। বঙ্গবন্ধুকন্যার ডিজিটাল বাংলাদেশ আপনাদের নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে ।

বিশেষ অতিথি তার বক্তব্য বলেন, ‘উচ্চশিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জন’ প্রতিপাদ্যে শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র, সমাজ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধসম্পন্ন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর এই পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। মাত্র এক দশকেই বন্দর নগরীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সারা দেশের প্রতিটা ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সেরা মেধাবী শিক্ষক, ডিজিটাল ক্লাসরুম আর বিশ্বমানের কারিকুলামের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জনসম্পদে পরিণত হয়েছে। প্রিয় গ্র্যাজুয়েটবৃন্দ, তোমাদের অর্জিত জ্ঞান আর কর্মদক্ষতা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অসাম্প্রদায়িক উন্নত বাংলাদেশ গড়তে তোমরা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবে এটাই আমাদের চাওয়া।

অনলাইনে যুক্ত হয়ে সমাবর্তন বক্তা জনাব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে কাজ চলছে। আমাদের প্রতিটা তরুণ যাতে শোভন পেশার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পারে এজন্য চলছে বিপুল কর্মযজ্ঞ। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষার যাত্রার সূচনা। জ্ঞানের জন্য, স্বীকৃতির জন্য, প্রজ্ঞার জন্য ক্ষুধার্ত হওয়া আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। ক্ষুধার্ত হতে থাকুন, তৃপ্ত হবেন না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উপায় খোঁজা চালিয়ে যান এবং সেখানেই আপনি আরও কিছু অর্জন করতে পারবেন। ক্রমাগত নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন জীবনে চলতে কি নতুন দক্ষতা এবং দক্ষতার প্রয়োজন হবে। আপনার শিক্ষার সবচেয়ে বড় সুবিধা শুধুমাত্র আপনি যা শিখেছেন তা নয়, কীভাবে শিখতে হয় তা জানার মধ্যেও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ডক্টর দিল আফরোজা বেগম বলেন, সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর জন্য বেশ স্মরণীয়। চার বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত এই ডিগ্রি প্রদানের দিনটি সব শিক্ষার্থীর কাছে বেশ গুরুত্ব বহন করে। সুতরাং, এই বিশেষ দিনে আপনাদের অঙ্গীকার হোক, দেশকে ভালোবেসে দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করে, দেশের জনগণের ভাগ্য বদলাতে উদ্যোগী হবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরল আনোয়ার বলেন, শিক্ষাজীবন হলো কর্মজীবনের প্রস্তুতিক্ষেত্র। আজকের সমাবর্তন নেয়া শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই দীর্ঘ সংগ্রামের পর আপনারা যে ডিগ্রি লাভ করেছেন, তা আনাদের দেশের প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা আরো বাড়িয়ে দিল। দেশের জন্য, দেশের গণমানুষের জন্য এই দায়বদ্ধতা পূরণে আপনার কখনো পিছপা হবেন না। করোনা মহামারী পরবর্তী বিশ্বের বৈচিত্র্যময় চ্যালেঞ্জ আপনারা সাহসের সাথে মোকাবিলা করবেন।

এ সময় বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় সামনের সারিতে আছেন তরুণরা। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশকে বদলে দিয়েছেন। বাংলাদেশের পরিচয় এখন উন্নয়নের রোলমডেল। দেশে অর্থনীতি, সমাজকাঠামো সর্বক্ষেত্রে এখন পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। আপনারা তরুণ গ্রাজুয়েটরা পারবেন বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে।

এই বিভাগের আরো খবর


আরো সংবাদ ... আরও