আমরা বিশ্বাস করি, একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ মতপ্রকাশে সমর্থ হলে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভালোভাবে কাজ করবে। দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপকালে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর মুখ্য উপ-সহকারী মন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস এসব কথা বলেন। এ দলে থাকা দুই বাংলাদেশি সাংবাদিককে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্র ও অংশীদাররাও একটি স্বচ্ছ, অবাধ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে আসছে।
২০১৪ সালের নির্বাচন বিরোধী দল বর্জন করেছিল উল্লেখ করে ওয়েলস বলেন, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু হয়নি। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনই দেশের জন্য ভালো কিছু হতে পারে। যেখানে নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে জনগণের বেশি সুযোগ থাকে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
তবে নির্বিচারে আটক, গুম, ব্যক্তির কর্মকাণ্ডকে টার্গেট করার বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলোচনায় আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। জনগণকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে বাংলাদেশের যে লক্ষ্য রয়েছে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে সেই লক্ষ্য পূরণে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের সফলতা চাই।
এ কারণেই আমরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ ও বন্ধুদের গণতান্ত্রিক উন্নয়নের কথা বলি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশে সহিংসতা সমর্থন করি না। তবে জনগণের রাজনৈতিক মত ও ইচ্ছাকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। এজন্য আমরা নির্বাচনকালে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ রয়েছে। আইনটির কিছু ধারা মতপ্রকাশ এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এ ছাড়া আইনের কিছু বিষয় এখনো অস্পষ্ট রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অতুলনীয়। তবে ভবিষ্যৎ সফলতার জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করা জরুরি।
গেল সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন উপ-সহকারী মন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস। সফরকালে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে কক্সবাজারেও যান তিনি। সংকটকালে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, এই সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের পাশে আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে চায়। তাদের মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সংকট সমাধানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পদক্ষেপ জরুরি। সংবাদ উৎস – শীর্ষ নিউজ